অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী কর্মসৃজন প্রকল্পে
ব্যাঙ্কের গড়িমসিতে মঞ্জুর হচ্ছে না ঋণের আবেদন
রকারি প্রকল্প থাকলেও তার সুফল পাচ্ছেন না অনেকেই। প্রধানমন্ত্রী কর্ম সংস্থান সৃষ্টি প্রকল্প বা কর্মসৃজন প্রকল্প ঘিরে অন্তত এমনই অভিযোগ উঠেছে মেদিনীপুরে। এই প্রকল্পে জেলা শিল্প কেন্দ্র, খাদি বোর্ড এবং খাদি কমিশন- এই তিনটি কেন্দ্রের মাধ্যমে বেকার যুবক যুবতীদের ঋণ দেওয়া হয়। কিন্তু বহু আবেদন জমা পড়লেও তার নামমাত্রই মঞ্জুর হয়েছে বলে অভিযোগ। গড়িমসির অভিযোগ উঠছে মূলত ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেই। প্রশাসন সূত্রে খবর, চলতি আর্থিক বছরে জেলা শিল্প কেন্দ্র থেকে ৬৫৫টি আবেদনের সুপারিশ করা হয়েছিল। যার মধ্যে এখনও মঞ্জুর হয়েছে মাত্র ৫৩টি। বাকিগুলি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিবেচনাধীন। তবে অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত। তিনি বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।”
এক আবেদনকারীর সরাসরি অভিযোগ, “ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষই প্রকল্পের অনুমোদন দিতে গড়িমসি করে। প্রশাসনিক নজরদারিরও অভাব রয়েছে। ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন বেকার যুবক যুবতীরা।” তবে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “উভয়পক্ষেরই কিছু গাফিলতি রয়েছে। এটা ঠিক যে কিছু ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অযথা গড়িমসি করেন। কিন্তু ঋণ গ্রহীতাদের একটা বড় অংশও ঋণ শোধে আগ্রহ দেখান না। ফলে সমস্যায় পড়ে ব্যাঙ্ক।” তিনি আরও বলেন, “দেখা গিয়েছে, কর্মসৃজন প্রকল্পে মাত্র ৩৭ শতাংশ ঋণ শোধ হয়েছে। শোধের হার বাড়াতে ব্লক স্তরে তাই ক্যাম্প করা হচ্ছে।” সমস্যার সুরাহায় এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আধিকারিক বলেন, “ঋণ শোধের হার বাড়লে আরও বেশি সংখ্যক বেকার যুবক যুবতীদের ঋণ দেওয়া যেতে পারে।”
মূলত, উৎপাদনমূলক বা পরিষেবামূলক প্রকল্পের ক্ষেত্রে ঋণ মেলে কর্মসৃজন প্রকল্পে। বেকার যুবক যুবতীরা ধান ভাঙা, গম পেষাই, মশলা তৈরি, মাদুর বা মাদুরজাত দ্রব্য তৈরি, কাঠের আসবাবপত্র তৈরি কিংবা সাইকেল রিপেয়ারিং, পাম্পসেট রিপেয়ারিং, অটোমোবাইল রিপেয়ারিং প্রকল্পে আবেদন করতে পারেন। তিনটি কেন্দ্র থেকে কতটা ঋণের সুপারিশ করা যেতে পারে, তাও নির্দিষ্ট রয়েছে। যেমন, জেলা শিল্প কেন্দ্রের জন্য বরাদ্দ ২ কোটি ১৮ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা। খাদি বোর্ডের জন্য ২ কোটি ৩ লক্ষ এবং খাদি কমিশনের জন্য ৯২ লক্ষ। প্রশাসন সূত্রে খবর, চলতি আর্থিক বছরে শিল্প কেন্দ্র থেকে ২ হাজার ৯৫৪টি আবেদনপত্র বিলি হয়েছিল। এর মধ্যে ৮২১টি আবেদন এসেছে মেদিনীপুর (সদর) মহকুমা এলাকা থেকে। ঘাটাল থেকে এসেছে ৩৪৫টি, খড়্গপুর থেকে ১ হাজার ৫২০টি এবং ঝাড়গ্রাম থেকে ২৬৮টি। জমা পড়ে মোট ২ হাজার ২৯টি আবেদনপত্র। সেগুলি খতিয়ে দেখে ব্যাঙ্কগুলির কাছে ঋণ দেওয়ার জন্য জেলা শিল্প কেন্দ্র থেকে ৬৫৫টি আবেদনের সুপারিশ করা হয়। এর এক তৃতীয়াংশ অর্থাৎ প্রায় ২১৮টি আবেদন মঞ্জুর হওয়ার কথা। অথচ, এখনও পর্যন্ত মাত্র ৫৩টি আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। খাদি বোর্ড এবং খাদি কমিশনের ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি। খাদি বোর্ডের কাছে ২৮৮টি আবেদনপত্র জমা পড়ে। ২৭১টি আবেদনের ক্ষেত্রে ঋণের সুপারিশ করা হয়। খাদি কমিশনের কাছে ৩৫৪টি আবেদনপত্র জমা পড়ে। ২৩৪টি আবেদনের জন্য ঋণের সুপারিশ করা হয়। তবে সব ক্ষেত্রেই ব্যাঙ্ক নামমাত্রই আবেদন মঞ্জুর করেছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রকল্পটি নিয়ে ডিস্ট্রিক্ট কনসালটেটিভ কমিটির বৈঠকে আলোচনা হবে।
চলতি মাসের মধ্যে এই প্রকল্পগুলি মঞ্জুর হওয়ার কথা থাকলেও পরিস্থিতি দেখে একাংশ আবেদনকারীর ধারনা সময়ের মধ্যে ঋণর মঞ্জুর হবে না। কিন্তু এমন পরিস্থিতি কেন? জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার প্রহ্লাদ হাজরার আশ্বাস, “সময়ের মধ্যে কাজ শেষের সব রকম চেষ্টা চলছে।” তবে অন্য এক আধিকারিক বলেন, “ঋণ শোধের হার বাড়লে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রেও উৎসাহ থাকত। ২০১০-১১ আর্থিক বছরে জেলায় ৭৭৭ জন ঋণ পেয়েছেন । তবে তাঁদের সামান্য অংশই ঋণ শোধের ক্ষেত্রে এগিয়েছেন।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.