ক্যাম্পাস-সারমেয়দের নীরোগ রাখতে উদ্যোগী বিশ্ববিদ্যালয়
লেজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কুকুর থাকেই। হস্টেল, ক্যান্টিন প্রভৃতির আশপাশে যে সমস্ত কুকুরের দল ঘুরে বেড়ায় তাদের তাড়ানো যেমন সম্ভব নয়, তেমনই কখনও কোনও কুকুর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের থেকে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। এই অবস্থায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থাকা কুকুরদের নীরোগ রাখতে উদ্যোগী হল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ বিভাগের উদ্যোগে এক কর্মসূচির মাধ্যমে ক্যাম্পাসের কুকুরদের ওষুধ খাওয়ানো হয়েছে। এক মাস পরে এদের ভ্যাকসিনও দেওয়ার কথাও জানান তাঁরা।
কিন্তু হঠাৎ এই উদ্যোগের কারণ কী?
ক্যাম্পাসের কুকুরদের ওষুধ মাখানো বিস্কুট খাওয়ানো হচ্ছে। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, সপ্তাহ দুয়েক আগে এক কর্মসূচিতে যোগ দিতে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তথা রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের ভাইস চেয়ারম্যান অভিজিৎ চক্রবর্তী। এখানে এসে অভিজিৎবাবু দেখেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এমন অনেক কুকুর রয়েছে, যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। কারও গায়ে ঘা, কারও বা লোম উঠে গায়ে লালচে দাগ পড়েছে। পরিস্থিতি দেখে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এরপরই বিষয়টি তৎপর হন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কথা বলেন অভিজিৎবাবুর সঙ্গে। অধিকাংশ কুকুরের এমন অবস্থার কারণও জিজ্ঞাসা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীর কথায়, “অভিজিৎবাবু আমায় বলেছিলেন, কুকুরগুলি কৃমিতে আক্রান্ত। এদের ওষুধ খাওয়ানো দরকার।” এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ বিভাগ কুকুরদের ওষুধ খাওয়ানোর এক কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেয়। সহযোগিতা চেয়ে অভিজিৎবাবুর কাছে আবেদন করা হয়। সাড়া দিয়ে শুক্রবার মেদিনীপুরে আসেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য। সঙ্গে ছিলেন সঞ্জয় মণ্ডল নামে এক যুবক, যিনি পশুদের নিয়ে কাজ করেন। সঞ্জয়বাবু বলেন, “আমরা বিস্কুট-মিষ্টির মধ্যে আগে থেকে ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলাম। পরে কুকুরের সামনে সেগুলি ছড়িয়ে দিই। কুকুরগুলি তা খেয়ে নিয়েছে। এর ফলে ওদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।”
মাস দুয়েক আগে বেসুতেও এ ভাবে ক্যাম্পাসে থাকা কুকুরদের নীরোগ রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ বিভাগের ডিন জয়ন্ত কিশোর নন্দী বলেন, “ক্যাম্পাসে যে সব পশু রয়েছে, তাদের রক্ষা করতে হবে। আমাদের সমাজের জন্যই এদের রক্ষা প্রয়োজন। এমন কর্মসূচি আসলে সামান্য একটা প্রচেষ্টা।” বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “সমাজে থাকার অধিকার মানুষের মতো পশুদেরও রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যে কুকুরগুলি রয়েছে, তাদের নীরোগ রাখতে এই কর্মসূচির আয়োজন।” বিভিন্ন কলেজও যাতে এমন কর্মসূচির আয়োজন করে, সেই জন্য পদক্ষেপ করা হবে জানিয়েছেন উপাচার্য। তাঁর কথায়, “২২ নভেম্বর অধ্যক্ষদের নিয়ে এক বৈঠক রয়েছে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।”
পশুপ্রেমী অভিজিৎবাবু বলেন, “আমাদের সমাজ জীবনে পরিবেশের প্রভাব থাকেই। একদিকে যেমন গাছ সংরক্ষণ, গাছের পরিচর্যা করা, নতুন গাছ লাগানো দরকার। অন্যদিকে তেমনই পশুদের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।” তাঁর কথায়, “এ দিন কুকুরগুলিকে ওষুধ খাওয়ানো হল। পরে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।” পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, “তরুণ প্রজন্ম প্রকৃতিকে ভালবাসতে শিখছে। পশুদের ভালবাসতে শিখছে। এটা ভাল দিক।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.