|
|
|
|
তিস্তা জট কাটাতে মমতার সঙ্গে কথা বলবেন খুরশিদ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
বিদেশমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই তিস্তা জট কাটাতে নতুন করে উদ্যোগী হলেন সলমন খুরশিদ। এস এম কৃষ্ণের আমলে যে কাজ করা যায়নি, এ বার তা করতে একটা শেষ চেষ্টা করবেন নতুন বিদেশমন্ত্রী। আজ তিনি জানিয়েছেন, ‘পুরনো রাজনৈতিক সতীর্থ’ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তিনি শীঘ্রই ‘স্বচ্ছ এবং খোলামেলা’ আলোচনা করবেন। ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বকেয়া সমস্যাগুলির শীঘ্রই মীমাংসা হবে বলে খুরশিদ আশা প্রকাশ করেছেন। তিস্তার পাশাপাশি স্থল-সীমান্ত চুক্তি ও ছিটমহল সমস্যা মেটানোর বিষয়টি নিয়েও একই ভাবে আশাবাদী নতুন বিদেশমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, আগামী ‘চার সপ্তাহের’ মধ্যেই এ ব্যাপারে অগ্রগতি চোখে পড়বে।
তিস্তা এবং স্থল-সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের প্রশ্নে দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে বছর দেড়েক ধরেই ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে একটা কূটনৈতিক শীতলতার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। গত বছর প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরের সময়েই তিস্তা জলবণ্টন চুক্তিটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একেবারে শেষ পর্যায়ে মমতার আপত্তিতে তা আটকে যায়। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে কেন্দ্র যে ভাবে চুক্তির খসড়া তৈরি করেছে, তাতে ক্ষতি হবে উত্তরবঙ্গের। এ জন্যই তাঁর পক্ষে বিষয়টিতে সায় দেওয়া সম্ভব নয়। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে একাধিক বার কেন্দ্র-রাজ্য কথা হলেও বরফ গলেনি। তিস্তার জল কোন সময়ে কী রকম থাকে তা খতিয়ে দেখে একটি রিপোর্ট তৈরি করতে নদী বিশেষজ্ঞ কল্যান রুদ্রকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কাজ এখনও চলছে।
খুরশিদ আজ জানিয়েছেন, “আমার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এখনও কথা হয়নি। ওঁর সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। অতীতে দু’জনে এক সঙ্গে কাজও করেছি। সমস্যাটি নিয়ে শীঘ্রই তাঁর সঙ্গে খোলামেলা এবং স্বচ্ছ ভাবে কথা বলব।” কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “ভারত এবং বাংলাদেশ, উভয়ের জন্যই যে এই চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ, উনি অবশ্যই তা বুঝবেন। আমরাও ওঁর স্থানীয় বাধ্যবাধকতার বিষয়টি বুঝি।”
দু’দেশের স্থল-সীমান্ত চুক্তির বিষয়টি নিয়ে বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য, “এ ব্যাপারে ভারত সরকার একটি সুনির্দিষ্ট রূপরেখা অনুযায়ী এগোচ্ছে। এই চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হলে দেশে রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি করা প্রয়োজন। সেই অনুযায়ী বিরোধী দলনেতা ও শরিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।”
বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতার পাশাপাশি ভারত যে বিরোধী দলনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গেও কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে চাইছে, সে কথাও আজ আবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। সম্প্রতি খালেদার সঙ্গে দিল্লিতে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে খুরশিদের। আজ বিদেশমন্ত্রী বলেন, “খালেদা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে ক্ষমতায় এলে নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগকে তাঁরা গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন।”
বিদেশ মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, খালেদা দিল্লিতে এসে দাবি করেছেন, তাঁর দল সম্পর্কে ভুল ধারণা রয়েছে ভারতে। ভারত-বিরোধিতাকে তাঁর দল আর সে ভাবে প্রশ্রয় দেবেন না। বর্তমানে বাংলাদেশের কক্সবাজার-রামু এলাকায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপরে যে সব হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে, তারও সমালোচনা করেছেন খালেদা। |
|
|
|
|
|