|
|
|
|
খালি হাতে ফিরলে বিপদ লোকসভা ভোটে |
মনমোহনের পাকিস্তান সফরে দলের মানা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
আগ্রহী খোদ প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কংগ্রেস বলল, না!
মনমোহন সিংহ ঐকান্তিক ভাবে চাইছিলেন পাকিস্তান সফরে গিয়ে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক তৈরি করতে। কিন্তু আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে আপাতত পাক সফরে না যাওয়ারই পরামর্শ দিয়েছেন। দলের বক্তব্য, সন্ত্রাস দমন বা মুম্বই সন্ত্রাসে অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়ার প্রশ্নে কার্যত কিছুই করেনি ইসলামাবাদ। অদূর ভবিষ্যতে যে করবে, এমনও মনে করা যাচ্ছে না। ফলে প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তান সফরে গিয়ে খালি হাতে ফিরে এলে, অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিপুল সমালোচনার মুখে পড়তে হবে মনমোহন সরকারকে।
এটা ঠিকই যে গত কয়েক মাসে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কিছুটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হয়েছে। দু’দেশের মধ্যে ভিসা চুক্তি অনেকটাই শিথিল করা হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে রাওয়ালপিন্ডির আদালতে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়ে দিয়েছেন যে, মুম্বই সন্ত্রাসে অভিযুক্তরা সে দেশেই বিভিন্ন লস্কর সংগঠনের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। নিঃসন্দেহে এতে ভারতের এত দিনের দাবিই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে এই মাসের শেষে পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রেহমান মালিকের দিল্লি আসার কথা ।
ভারতীয় কূটনীতিকরাও তা-ই স্বীকার করছেন, সব মিলিয়ে ইসলামাবাদ থেকে কিছুটা ইতিবাচক বার্তা পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সেটাই প্রধানমন্ত্রীর পাকিস্তান যাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, “এমন নয় যে, প্রধানমন্ত্রী পাক সফরের ব্যাপারে উৎসাহী নন। সে দেশেও প্রস্তাবিত এই সফরকে ঘিরে যথেষ্ট উৎসাহ রয়েছে। কিন্তু এমন কিছু ব্যাপার ঘটে গিয়েছে যা ভারতীয় ভাবাবেগকে প্রবল ভাবে আহত করেছে। মুম্বই সন্ত্রাসের বিষয়টি আমরা ভুলতে পারিনি। স্বাভাবিক ভাবেই সেই ক্ষত নিরাময়ের জন্য প্রয়োজনীয় মলম আমাদের দরকার।”
কী সেই মলম?
বিদেশ মন্ত্রকের এক শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, “হাতেকলমে কিছু করে দেখাতে হবে পাকিস্তানকে। মুম্বই সন্ত্রাসে অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়া, লস্কর নেতা হাফিজ সইদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার মতো কাজ না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সে দেশে যাওয়া সম্ভব নয়।”
তবে ভারতের তরফ থেকে শীর্ষ পর্যায়ের সফর না হলেও পাকিস্তানের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলেই জানাচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক। যাতে ভারতের তরফে দৌত্যের প্রশ্নে শূন্যতা না আসে। সেই কৌশলেরই অঙ্গ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নিজে না গেলেও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশকুমারের সপ্তাহব্যাপী পাক সফরের পিছনে সহায়তা করেছেন বিদেশ মন্ত্রক। যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে পাক নীতি নিয়ে আলোচনা করেন নীতীশ। অতীতেও নরসিংহ রাও প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় নিজে না গিয়ে বাজপেয়ীকে পাকিস্তানে পাঠান।
নির্বাচন আসন্ন ও দেশেও। ফলে চলতি পরিস্থিতি যথেষ্ট স্পর্শকাতর বলেই মনে করছে সাউথ ব্লক। এক কর্তা বলেন, “পাকিস্তান সন্ত্রাস দমনের ও ২৬/১১-র অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে কী করছে, সে দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। প্রত্যেক দিনের ঘটনার মূল্যায়ন করে পরবর্তী পদক্ষেপের কথা ভাবা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|