শিল্পের জন্য জমির সমস্যার কথা এড়িয়ে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গে দক্ষ কর্মীর উপস্থিতিকেই সামনে আনতে চাইছে রাজ্য সরকার। দিল্লির আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় এ বার পশ্চিমবঙ্গের প্যাভিলিয়ন থেকে লগ্নিকারীদের উদ্দেশে সেই বার্তা পাঠানোরই চেষ্টা চলছে। বলা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে প্রশিক্ষিত কর্মীর অভাব নেই। তা সে কারিগরি ক্ষেত্রেই হোক বা তথ্যপ্রযুক্তি।
গত বছর প্যাভিলিয়ন উদ্বোধন করেছিলেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ বার কিন্তু দেশের সবথেকে বড় এই বাণিজ্যমেলায় আসছেন না তিনি। শুধু পার্থবাবু নন, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নিজে গত বছর এই মেলায় দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আনন্দ শর্মা ও জয়রাম রমেশকে পাশে নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। এ বার প্যাভিলয়নের প্রবেশদ্বারে মুখ্যমন্ত্রীর বড় কাটআউট থাকছে ঠিকই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মেলা চলাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লিতে আসার কোনও কর্মসূচি নেই। বুধবার মেলার শুরু। ২৪ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গ দিবসে রাজ্যের দুই মন্ত্রী, অমিত মিত্র ও ফিরহাদ হাকিম হাজির থাকবেন বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু সেখানেও অনিশ্চয়তা। কারণ একই দিনে কলকাতার একটি অনুষ্ঠানেও এঁদের হাজির থাকার কথা। |
দিল্লির বাণিজ্যমেলায় পশ্চিমবঙ্গের প্যাভিলিয়ন। —নিজস্ব চিত্র। |
মহাকরণ সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী নিজে এ বার দিল্লির বাণিজ্যমেলা নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামানোর সময় পাননি। তবে তাঁর নির্দেশ ছিল, রাজ্যে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির বিষয়ে যেন গুরুত্ব দেওয়া হয়। সেই কারণেই পার্থবাবু না এলেও প্যাভিলিয়নের অন্দরে তাঁর বার্তা ঝুলছে, “নতুন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতি থেকে শুরু করে সব দিকে যে ভাবে নজর দেওয়া হয়েছে, তাতে বিনিয়োগকারীরা পশ্চিমবঙ্গে দক্ষ-প্রশিক্ষিত কর্মীর জোগান নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।” কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় মেলায় আসছেন। পশ্চিমবঙ্গে কারিগরি প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিকি ও রাজ্য সরকার আয়োজিত আলোচনাসভায় অংশ নেবেন তিনি। থাকবেন সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিবরাও। দিল্লিতে রাজ্যের রেসিডেন্ট কমিশনার ভাস্কর খুলবে বলেন, “এ বারের থিম স্কিলিং ইন্ডিয়া। প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল তৈরি করে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করার কথা বলেছেন। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের সাফল্য তুলে ধরা হবে।” এ কথা বোঝাতেই প্যাভিলিয়নের প্রবেশদ্বারের মাথায় দুর্গা-মূর্তির দশ হাতেও অস্ত্রশস্ত্রের বদলে নানা যন্ত্রপাতি।
তা ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের হস্তশিল্পীদের দক্ষতা তুলে ধরতে বালুচরী, ধনেখালি ও শান্তিপুরি শাড়ির বিপণনে জোর দেওয়া হচ্ছে। কুমোরটুলি আর রসগোল্লার পাশাপাশি প্যাভিলয়ন সেজেছে দু’দিন আগে অমিতাভ বচ্চন-শাহরুখ খানের উপস্থিতিতে চলচ্চিত্র উদ্বোধনের বিরাট ছবিতে। কিন্তু রাজ্যে শিল্পই না এলে দক্ষ কর্মীদের কী হবে, সেই প্রশ্নটা থেকে যাচ্ছে। |