পরকীয়ার মধ্যেও ত্রিকোণ প্রেমের আঁচ পেয়ে উত্তেজিত হয়ে উঠেছিলেন পলা ব্রডওয়েল। তার জেরেই সরাসরি হুমকি ই-মেল পাঠান জিম কেলি নামে প্রাক্তন সিআইএ প্রধান ডেভিড পেত্রাইউসের এক পারিবারিক বন্ধুকে। পলার ধারণা ছিল, জিমই পেত্রাইউসের ‘নতুন প্রেমিকা।’ বিষয়টি নিয়ে জিম এফবিআইয়ের দ্বারস্থ হলে শুরু হয় তদন্ত। আর তাতেই উঠে আসে পলা-পেত্রাইউসের প্রণয়ের সম্পর্ক। অস্বস্তিতে পড়ে গত শুক্রবারই ইস্তফা দিয়েছেন পেত্রাইউস। যাতে সমস্যায় পড়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও।
আসলে দ্বিতীয় দফার জন্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরে জাতীয়-নিরাপত্তা দলকে ঢেলে সাজার পরিকল্পনা করেছিলেন ওবামা। আমেরিকার প্রশাসন সূত্রে খবর, সিআইএ-র পদত্যাগী প্রধান পেত্রাইউস ওবামার পছন্দের তালিকার শীর্ষে থাকায় এই নতুন নিরাপত্তা দলে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু এই বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা সামনে আসায় পদত্যাগ করতে হল সিআইএ প্রধানকে। পেত্রাইউসের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, নিজের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কারণে নিজেরই পরিবারকে যে অপরিসীম কষ্ট দিয়েছেন পেত্রাইউস, তার জন্য তিনি গভীর ভাবে অনুতপ্ত। |
পেত্রাইউস ও পলা। ছবি: এএফপি |
এবং ওবামা-প্রশাসনের একাংশের ধারণা, এ সবের মূলেই রয়েছে জিমকে পাঠানো পলার ই-মেলগুলো। সম্প্রতি সেই ই-মেলের কিছু অংশ প্রকাশিত হয়েছে একটি মার্কিন দৈনিকে। সেখানে থেকেই স্পষ্ট জিম-পেত্রাইউস সম্পর্কে পলার ধারণা। গত গ্রীষ্মে ফ্লোরিডার তাম্পার বাসিন্দা জিম ই-মেল সমেত হাজির হন এফবিআইয়ের দফতরে। সেই ই-মেল নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতেই এফবিআই অফিসাররা জানতে পারেন, মেলগুলির প্রেরক আসলে পলা ব্রডওয়েল। পলার ই-মেল অ্যাকাউন্ট খুঁজতে গিয়েই সামনে আসে প্রাক্তন সিআইএ প্রধানের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের খতিয়ান।
যদিও বিষয়টি নিয়ে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হওয়ার আগে গোপনীয়তার নীতিই নিয়েছিলেন এফবিআই কর্তারা। তার মূল কারণ দুটো। প্রথমত, ই-মেলে জিমকে হেনস্থা করার পিছনে আদৌ পেত্রাইউসের ভূমিকা ছিল কি না, সেটা জানা। দ্বিতীয়ত, পুরো বিষয়টিতে জাতীয় নিরাপত্তা কোনও ভাবে বিঘ্নিত হয়েছে কি না, তা খুঁজে বের করা। তদন্ত শেষ হওয়ার পরেই নিশ্চিত হন তাঁরা, দুটোর কোনও ক্ষেত্রেই দায়ী নন পেত্রাইউস। তার পরেই পেত্রাইউস এবং পলার সঙ্গে আলোচনায় বসেন এফবিআই কর্তারা। নিজের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা স্বীকার করে নেন পেত্রাইউস।
আপাতত এফবিআইয়ের তদন্তের পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে তদন্তের দাবি করেছেন আমেরিকার আইনপ্রণেতাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, এফবিআই কেন আগেই পুরো বিষয়টি তাঁদের জানায়নি? বিশেষত যখন ঘটনাটির সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত, সে ক্ষেত্রে তাঁদের বিষয়টি জানার অধিকার রয়েছে বলেই মনে করেন সেনেটের গোয়েন্দা কমিটির চেয়ারম্যান ডিয়ানে ফেউনস্টেইন।
ইস্তফা সত্ত্বেও তাই এখনই সরকারি প্রশ্নচক্ষু এড়াতে পারছেন না পেত্রাইউস। |