বৈধ অনুমতি ছাড়াই লটারি খেলা পরিচালনা করার অভিযোগে পুলিশ হানা দিয়ে দুটি বাইক সহ চারটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার জলপাইগুড়ির রেসকোর্সপাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানায়, রেসকোর্সপাড়ার পারসমণি কালচারাল ক্লাব এবং গ্রন্থালয়ের সহযোগিতা নিয়ে ‘জনি এন্টারপ্রাইজ’ নামে মালদার একটি সংস্থা ওই লটারির উদ্যোক্তা। সংস্থা সূত্রের খবর,. প্রায় সাড়ে ২৫ কোটি টাকা মূল্যের ওই লটারি ১৬ সপ্তাহ ধরে হওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। লটারিতে সাপ্তাহিক প্রতিটি টিকিটের মূল্য ১৯ পয়সা লেখা রয়েছে। কিন্তু, ক্রেতাকে ১০০ টাকা দিয়ে লটারির টিকিট নিতে হচ্ছে। ১৯ পয়সা বাদে বাকি টাকা অনুদান হিসেবে দেখানো হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে. লটারিতে প্রতি সপ্তাহে একটি করে চার চাকার গাড়ি সহ ৯টি করে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করা হয়। পুরস্কারের মধ্যে ছয় চাকার ট্রাক সহ বিলাসবহুল বেশ কিছু গাড়িও দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়। সম্প্রতি এক সপ্তাহের খেলাও অনুষ্ঠিত হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এক সপ্তাহে গাড়ি পাওয়া বিজয়ীকে তাঁর পুরস্কার দেওয়া হয়নি বলে পুলিশকে অভিযোগ জানানো হয়। এর পরেই লটারি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করে পুলিশ জানতে পারে, প্রায় ২৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা মূল্যের লটারির কোনও বৈধ অনুমতি নেই। সোমবার সকালে শহরের রেসকোর্স পাড়ায় পুলিশ অভিযান চালায়। এদিন যে ছয়জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে তাদের মধ্যে বেশির ভাগই স্থানীয় ক্লাবের সদস্য, বাকিদের মধ্যে একজন মালদহ এবং একজন শিলিগুড়ির বাসিন্দা। ধৃত মালদার বাসিন্দা জনি এন্টারপ্রাইজ নামে মূল উদ্যোক্তা সংস্থার সরাসরি ভাবে যুক্ত বলে জানা গিয়েছে। তাঁর মোবাইল সিম কার্ড পরীক্ষা করে দেখছে পুলিশ। জনি এন্টারপ্রাইজ সংস্থাটি মালদহের বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। সংস্থার কর্তাদের টেলিফোন নম্বর পেয়েছে পুলিশ। মালদহ পুলিশকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “বেশ কয়েকটি অভিযোগ আসার পরে খোঁজখবর শুরু করা হয়। দেখা গিয়েছে কোনও সরকারি অনুমতি ছাড়াই একটি সংস্থা কোটি কোটি টাকার লটারির ব্যবসায় নেমেছে। এদিন অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন একাধিক ব্যক্তি ও পুরস্কার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।” সোমবার অভিযান চালিয়ে একটি বোলেরো গাড়ি, একটি অল্টো, দুটি ছোট ট্রাক এবং একটি বাইক বাজেয়াপ্ত করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। সকালে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আই সি অচিন্ত্য গুপ্তের নেতৃত্বে অভিযান শুরুর পরেই শহরে হইচই পড়ে যায়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে লটারি শুরু হয়। লটারির টিকিট যারা কিনেছেন তাঁরা থানায় গিয়ে ভিড় জমাতে শুরু করেন। অনেকে রেসকোর্স পাড়ার ক্লাবে গিয়ে টাকা ফেরতের দাবি করেন। এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মূলত মালদার সংস্থা জনি এন্টারপ্রাইজই খেলা পরিচালনা করে, জলপাইগুড়িতে টিকিট বিক্রির টাকা তুলতে পারশমনি কালচারাল ক্লাবের সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে। পারশমনি ক্লাবের সভাপতি, সহ সম্পাদককেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও এদিন ক্লাবের এক কর্তা বলেন, “আমাদের ক্লাবের কোনও দায়িত্বই নেই। আমরা শুধু সহযোগিতা করেছি মাত্র। প্রকৃত তদন্ত হলেই সব জানা যাবে।” |