নবমী থেকে কলকাতা বিমানবন্দরের ঠান্ডা ঘরে পড়ে রয়েছে ৩০০ কেজি ইলিশ! মায়ানমার থেকে বিমানে চেপে ব্যাঙ্কক ঘুরে বাক্স-বন্দি সেই মাছ পৌঁছেছিল শহরে। ঠিক ছিল, বিজয়ার মধ্যেই বাজারে চলে আসবে। কিন্তু, স্রেফ কাগজপত্রের অভাবে সেই থেকে বিমানবন্দরের পণ্য বিভাগের ঠান্ডা ঘরে বন্দি মায়ানমারের টাটকা ইলিশ।
মায়ানমার থেকে বিমানে নিয়মিত ইলিশ আনার উদ্যোগ নিয়েছিল রাজ্য সরকার। এ নিয়ে দিল্লিতে চিঠিও লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের সবুজ সঙ্কেত মিলতেই রীতিমতো বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, মায়ানমার থেকে নিয়মিত ইলিশ নিয়ে আসবেন কলকাতার মাছ-ব্যবসায়ীরা। কিন্তু, প্রথম বারেই হোঁচট!
নিয়মিত বাংলাদেশ থেকে ইলিশ নিয়ে আসার সময়ে যে ধরনের কাগজপত্র লাগে, এ ক্ষেত্রেও সে সবের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু, কাগজপত্র আনতে গিয়েই যাবতীয় ভুলভ্রান্তি, স্বীকার করে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতর ও শুল্ক বিভাগের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া সেই ইলিশের জন্য বিমানবন্দরের দরজা খুলে দিতে নারাজ
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এ দিকে, মায়ানমার থেকে যে ব্যবসায়ী ইলিশ পাঠাবেন বলে আগে থেকে কাগজপত্র তৈরি করা হয়েছিল, নবমীতে দেখা যায় তিনি নন, মাছ পাঠিয়েছেন অন্য এক ব্যবসায়ী। বিভ্রান্তির সেই শুরু। |
কলকাতার যে মাছ-ব্যবসায়ীরা নিয়মিত মাছ আমদানি করেন, সেই ‘ফিশ ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক মহম্মদ আনোয়ার জানিয়েছেন, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাগজপত্র তৈরির কাজ চলছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী তিন-চার দিনের মধ্যেই বিমানবন্দরে আটকে থাকা ইলিশ পৌঁছে যাবে কলকাতার বাজারে। তবে, আনোয়ারের আক্ষেপ, “যে টাটকা মাছ নবমীর দিন কলকাতায় পৌঁছেছিল, এখন আর তার দাম পাওয়া যাবে না।” কিন্তু, এত দিন ধরে বিমানবন্দরে পড়ে থাকার পরে সেই মাছ কি আর খাওয়ার অবস্থায় থাকবে?
ব্যবসায়ী সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতায় পৌঁছনোর পর কাগজপত্র নিয়ে টালবাহানা শুরু হতেই পণ্য বিভাগের ‘কুলিং চেম্বার’-এ ঢুকিয়ে রাখা হয় ইলিশ। ব্যবসায়ীদের দাবি, ফ্রিজে মাছ রেখে খেলে যেমন তা নষ্ট হয় না, সে রকমই এই মাছও খাওয়া যাবে। আনোয়ার বলেছেন, “প্রথম বার বলেই আমাদের এত ভুল হল। পরীক্ষামূলক ভাবে আমরা তাই তুলনায় কম মাছই এনেছিলাম। নিয়মকানুনটা ঠিক মতো সড়গড় হয়ে গেলেই নিয়মিত মায়ানমার থেকে ইলিশ নিয়ে আসা হবে।” বাজারে সেই ইলিশ কিলোগ্রাম প্রতি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় পাওয়া যাবে বলেও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। |