বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত আরবিআই, ঘাটতি কমাতে মরিয়া কেন্দ্র
শুধু সংস্কার ঘোষণাই যথেষ্ট নয়। সঙ্কট এড়াতে প্রয়োজন তার দ্রুত রূপায়ণ। ঋণনীতি ঘোষণার আগের দিন (সোমবার) অর্থনীতির হাল পর্যালোচনা করতে গিয়ে এই বার্তা দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই)। দেশের অর্থ ব্যবস্থার কাণ্ডারী আরবিআইয়ের মতে, চলতি অর্থবর্ষের শেষে বৃদ্ধি নেমে দাঁড়াবে ৫.৭ শতাংশে। আগে তা ৬.৫% হবে বলে মনে করেছিল তারা। শীর্ষ ব্যাঙ্কের আশঙ্কা, আপাতত পিছু ছাড়বে না মূল্যবৃদ্ধির রাক্ষসও। তবে তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে, বৃদ্ধির গতি ফেরাতে সুদ কমানোর আবছা ইঙ্গিত দিয়েছে তারা।
অর্থনীতির হাল ফেরাতে অর্থ মন্ত্রকও যে মরিয়া, তা এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম-ও। তিনি জানান, ৫ বছরে রাজকোষ ঘাটতি প্রায় ৫০% কমাতে চায় কেন্দ্র। ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষে নিয়ে যেতে চায় জাতীয় আয়ের ৩ শতাংশে। কমাতে চায় লেনদেন খাতে ঘাটতিও। কারণ, মূল্যায়ন সংস্থার ক্রেডিট রেটিং ছাঁটাই এড়াতে তা জরুরি। প্রয়োজন লগ্নিকারীদের আস্থা ফেরানোর জন্যও।
পি চিদম্বরম। ছবি: রয়টার্স
চিদম্বরমের বিশ্বাস, “ঘাটতি কমার পাশাপাশি লগ্নিকারীদের আস্থা বাড়লে, বিনিয়োগ বাড়বে। ফলে বাড়বে বৃদ্ধির হার। কমবে মূল্যবৃদ্ধি। সব মিলিয়ে, সমৃদ্ধির পথে হাঁটবে ভারত।” বৃদ্ধির চাকায় গতি ফেরানোর জন্য সুদ কমাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে আর্জি জানিয়েছেন তিনি। অর্থমন্ত্রী যেমন শীর্ষ ব্যাঙ্ককে এই অনুরোধ করেছেন, তেমনই সুদ কমানোর শর্ত হিসেবে ঘাটতিতে রাশ টানার কথা বলেছে আরবিআই।
শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা এখনই মেটার আশা নেই। বরং চলতি অর্থবর্ষে তা আগের পূর্বাভাসকে (৭.৩%) ছাপিয়ে পৌঁছবে ৭.৭ শতাংশে। কিন্তু তা সত্ত্বেও মূল্যবৃদ্ধি-সহ অর্থনীতির নানা ঝুঁকি সামান্য কমার পাশাপাশি ঘাটতি কমলে, সুদ হ্রাসের কথা বিবেচনা করবে তারা।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এ দিন ঘাটতিতে রাশ টানার উপরই বার বার জোর দিয়েছেন চিদম্বরম। তিনি জানিয়েছেন, এর জন্য ভর্তুকি ছাঁটাইয়ের উপর জোর দেওয়া হবে। চেষ্টা করা হবে প্রাপ্য ভর্তুকি আধার-পরিচয়ের মাধ্যমে সরাসরি গরিব মানুষের হাতে পৌঁছে দেওয়ার। আয় বাড়ানোর চেষ্টা হবে প্রত্যক্ষ কর বিধি এবং পণ্য-পরিষেবা কর দ্রুত কার্যকর করার মাধ্যমে। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ থেকে আসবে অন্তত ৩০-৪০ হাজার কোটি টাকা। প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি, বিদেশি আর্থিক সংস্থার বিনিয়োগ এলে কমবে লেনদেন ঘাটতিও।
অর্থমন্ত্রী ঘাটতি ছাঁটাইয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও, কী ভাবে তা সম্ভব হবে, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকে। তাঁদের মতে, আগামী বছর থেকেই বাজতে শুরু করবে লোকসভা নির্বাচনের দামামা। ফলে ভর্তুকি ছাঁটাইয়ের অপ্রিয় সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হবে কেন্দ্রের। খাদ্য সুরক্ষার মতো ব্যয়বহুল সামাজিক প্রকল্প থেকেও পিছোনো যাবে না। তার পরেও কী ভাবে ঘাটতি কমবে, তা নিয়ে তাঁরা সংশয়ে। এ বছরও ঘাটতি কমানোর কথা বার বার বলেছে কেন্দ্র। কিন্তু অর্থবর্ষ শেষে যে তা পূর্বাভাসকেও (৫.১%) ছাপিয়ে ৫.৩ শতাংশে পৌঁছবে, তা এ দিনই মেনে নিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.