|
|
|
|
|
অন্দরে রামধনু রং আর আশ্বিন-আলো
উৎসব দোরগোড়ায়। আলো, রঙে বরণ করে তাকে নিজের ঘরে নিয়ে আসুন।
আর্কিটেক্ট ও ইন্টিরিয়র ডিজাইনার সমীরণ বণিক |
|
|
রং মিলান্তি খেলা |
পুজো একেবারে দোরগোড়ায়। হাতে সময় খুব কম। তাই বাইরে রং করানোর ঝামেলায় না যাওয়াই ভাল। বরং বাইরের রং একটু জল দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। সাধারণত ভাল কোম্পানির রং করা থাকলে জল দিয়ে পরিষ্কার করলে রং উঠে যায় না। আসলে, দেওয়ালে বৃষ্টির জল জমে যে শ্যাওলা তৈরি হয়, তার সঙ্গে রং মিশে একটা কেমিক্যাল কম্পাউন্ড তৈরি করে। জল দিয়ে ধুলে সেটা উঠে যায়, তাই মনে হয় যেন রংটাই উঠে গিয়েছে। দেওয়ালে উজ্জ্বল ভাব আনতে জানলাগুলোতে নতুন রং লাগিয়ে নিন। এর সঙ্গে কার্নিশ এবং দেওয়ালের গায়ে যে তিন-চার ইঞ্চির বর্ডারলাইন থাকে, তাতে নতুন রং করে দিন। দেখতে সুন্দর লাগবে। বাইরের দেওয়ালকে নতুনের মতো দেখাতে রং তুলে পুট্টি লাগিয়ে দিন। বাড়ি সাদা ঝকঝক করবে। ছুটকো বৃষ্টিতে ড্যাম্পও ধরতে পারবে না।
উৎসবের মেজাজ আনতে হলে সব দেওয়ালে রং না করে যে কোনও একটি খালি দেওয়াল বেছে নিন। এ বার এতে ডিজাইনার মোটিফ লাগাতে পারেন। বসার ঘরে স্ট্রাইপ ভাল লাগবে। ফার্নিচার-এর সঙ্গে মিলিয়ে একটা সলিড আর একটা বেস কালার দিয়ে চেকও করে নিতে পারেন। অনেকটা দাবার ছকের মতো দেখতে লাগবে। আপনি নিজের হাতে ডিজাইন করতে চাইলে একটা এক্সরে প্লেট নিন। এ বার একে ফুল বা পাতার আকারে কেটে নিন। এ বার এই প্লেট দিয়েই বানিয়ে ফেলুন ফ্লোরাল বা লিফ মোটিফের ডিজাইনার ওয়াল। |
|
সিঁড়ি, বাথরুম বা রান্নাঘরের মতো জায়গায় সিন্থেটিক পেন্ট বা স্যাটিন ফিনিশড পেন্ট লাগিয়ে নিন। এগুলো সহজে ধোওয়া যায়। তাই যে কোনও উৎসবের মুখেই চট করে পরিষ্কার করে ফেলতে পারবেন। সিঁড়িতে আলো কম থাকলে এখানে ব্যবহার করতে পারেন অফ হোয়াইট বা বেজ কালার। আর আলো বেশি থাকলে লেমন ইয়েলো, আইসক্রিম গ্রিন বা অরেঞ্জ কালার করিয়ে নিতে পারেন।
ডাইনিং রুম-এ রং নিয়ে একটু পরীক্ষানিরীক্ষা করতে পারেন। যেমন, একটা দেওয়াল অরেঞ্জ, একটা পিঙ্ক, আর একটায় লাল রং লাগান। বাকি দেওয়ালটায় সিলিংয়ের নিউট্রাল শেডটাকেই টেনে আনুন। দেখুন তো অন্যদের ডাইনিংয়ের চেয়ে আলাদা লাগে কি না!
বেডরুমে হালকা রং লাগানোরই পরামর্শ দেব। পুরো ঘরের রং না পাল্টে খাটের হেডবোর্ড-এর ওপরের দেওয়ালটায় বিভিন্ন সাইজের তুলি দিয়ে রং ছিটিয়ে দিন। বেডরুমের ছিমছাম রূপের সঙ্গে এটা মানাবে ভাল।
|
লাইটস, ক্যামেরা, অ্যাকশন |
পুজোয় জামাকাপড়ের খরচা একটু কম করে দেখুন না, যদি বাড়ির সব আলো পাল্টে এল ই ডি করে ফেলা যায়। এতে ইলেকট্রিকের বিল অনেক কমে যাবে, এমনকী উৎসবের দিনেও। বসার ঘরে টিভি ক্যাবিনেট-এর পাশের তাকে অনেক সময়ই আমরা ছোটখাটো শোপিস সাজিয়ে রাখি। তাকের ওপর থেকে ছোট একটা স্পটলাইট লাগিয়ে দেওয়া হয় যাতে জিনিসগুলো স্পষ্ট দেখা যায় বাইরে থেকে। আমি বলব, তাকের ইনসাইড ফ্লোর-এ এই আলো লাগান। এতে ভেতরের জিনিসগুলোর ওপর একটা মায়াবি আলোআঁধারি তৈরি হবে। শোপিস নিয়মিত পরিষ্কার না করলে তার ওপর যে ধুলোর আস্তরণ জমে, সেটাও সহজে বোঝা যাবে না। তবে ওপরে আলো লাগানোর জায়গা থাকলে তা খুলে নেবেন না যেন। প্রয়োজনে বাকি ঘরের আলো নিভিয়ে শুধু ক্যাবিনেটগুলোর আলো দুটোকেই জ্বালিয়ে রাখুন। আলোছায়া পরিবেশে উৎসবের আড্ডা ভাল জমবে। |
|
জানলায় সাধারণত আমরা ভারী আর হালকা দু’ধরনের পর্দা লাগাই। বসার ঘরে এই হালকা পর্দার পিছনে এল ই ডি চেন লাগিয়ে দিতে পারেন। রাতের বেলায় ঘরের বড় আলো নিভিয়ে দিলে পর্দার পিছনের আলোর চেন সুন্দর দেখতে লাগে। ডাইনিং হলের কোণে অনেকগুলো বালব এক সঙ্গে গুচ্ছ করে ঝুলিয়ে দিতে পারেন। কোণে লাগানোর জন্য হ্যাঙ্গিং লাইটও কিনতে পাওয়া যায়। ঘরের বিভিন্ন কোণে একটা করে কর্নার লাইট লম্বা করে ঝুলিয়ে দিলে অন্য কোনও আলো না জ্বালালেও চলবে। উৎসবের জন্য টয়লেট-এ অ্যারোমা উইথ লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করতে পারেন। সারা ক্ষণই টয়লেটে মিষ্টি একটা গন্ধ থেকে যাবে। তবে সারা বাড়িতে মায়াবি একটা লুক দিলেও সিঁড়িতে, রান্নাঘরে বা বাথরুমে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখবেন। |
|
|
|
|
|