|
|
|
|
শিলিগুড়ি পুরসভা |
কংগ্রেসের চেয়ারম্যানকে দলে টানল তৃণমূল |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
শিলিগুড়ি পুরবোর্ড পরিচালনায় ‘ব্যর্থতার দায়’ কংগ্রেসের উপরে চাপালেও সেই দলেরই কাউন্সিলর তথা পুরসভার চেয়ারম্যান নান্টু পালকে দলে টানল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার কলকাতায় তৃণমূল ভবনে প্রদেশ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে নান্টুবাবু কংগ্রেস ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন। পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেবের সঙ্গে মহাকরণে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দেখা করেন।
ঘটনা হল, ৪৭ আসনের শিলিগুড়ি পুরসভায় কংগ্রেস-তৃণমূল, দু’পক্ষেরই ১৫ জন করে কাউন্সিলর রয়েছে। তৃণমূলের এক কাউন্সিলর ব্যক্তিগত কারণে ইস্তফা দিয়েছেন। কংগ্রেস চাইলে নান্টুবাবুর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগের দাবি তুলতে পারে। সে ক্ষেত্রে পুর-চেয়ারম্যানের কাউন্সিলর পদ খারিজ হতে পারে। জেলা কংগ্রেসের অন্দরের খবর, এখনই ওই দাবি জানানো হবে না। কারণ দলের একাংশের আশঙ্কা, সেক্ষেত্রে তৃণমূল বোর্ড ভেঙে দেওয়ার দাবিতে সরব হতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী নান্টুবাবুকে পাশে নিয়ে বলেন, “নান্টু দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর। কাজেরও। আমাদের নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী পাহাড় ও সমতলে যে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ শুরু করেছেন, তাতে ও সামিল হওয়ায় আমরা খুশি।” নান্টুবাবু বলেন, “জোটের প্রার্থী হিসেবে পুর-ভোটে জিতেছি। জোট ভেঙে যাওয়ায় কাজের ক্ষেত্রে অসুবিধে হচ্ছিল। আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দূরত্ব চাই না। তাতে উন্নয়নে সামিল হতে সমস্যা হবে। সে জন্যই ফের তৃণমূলে যোগ দিলাম।”
জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার বলেন, “নান্টু প্রথমে ছিলেন সিপিএমে। ২০০৬-এ যান তৃণমূলে। এক মাসের মধ্যে কংগ্রেসে যোগ দেন। এ বার ফের তৃণমূলে গেলেন। উনি কেন, কী জন্য এটা করেন তা মানুষ ভালই বোঝেন।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী শিলিগুড়ির মেয়রের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগে বারবার সরব হওয়ার পরে নান্টুবাবুকে মেয়র পদে বসাতে কংগ্রেসের একাংশ আসরে নেমেছিলেন। শঙ্করবাবু তাতে ‘সায়’ দেননি বলে দল সূত্রের খবর। বস্তুত, নান্টুবাবু তৃণমূলে ফেরার প্রস্তুতি অনেক দিন ধরেই চলছিল। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) সদস্য পদ দেওয়া থেকে একাধিক সরকারি কমিটিতে নান্টুবাবুকে রাখার মাধ্যমেই তা স্পষ্ট হচ্ছিল। কংগ্রেস-তৃণমূলের সাম্প্রতিক তিক্ততা নান্টুবাবুকে দলে টানার সুযোগ তৈরি করে দেয়। তৃণমূল সূত্রের খবর, নান্টুবাবু তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের কাছে মেয়র হওয়ার ইচ্ছা জানিয়েছিলেন। তেমন পরিস্থিতি হলে মনোবাঞ্ছা পূরণে অসুবিধে হবে না ভেবেই তিনি কংগ্রেস ছাড়তে রাজি হয়ে যান। নান্টুবাবুর কথায়, “দল যে দায়িত্ব দেবে তা পালন করব।”
যে দলের মেয়র গঙ্গোত্রী দত্তের বিরুদ্ধে লাগাতার ব্যর্থতার অভিযোগ তুলছে তৃণমূল, সেই দলেরই কাউন্সিলরকে দলে টানায় কি ‘ভুল বার্তা’ যাবে না? উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর দাবি, কংগ্রেসে কাজের পরিবেশ যে নেই, সেই বার্তাই এতে জোরদার হল। তাঁর কথায়, “আমি এখনও বলছি, পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ, পার্কিং নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের দায় কংগ্রেসের মেয়রকেই নিতে হবে।” |
|
|
|
|
|