টাকা এবং যথাযথ বিপণনের অভাবে ধুঁকছে জেলার স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলি। তাদের হাল ফেরাতে এ বার উদ্যোগী হল সরকার।
স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলির উন্নয়নে বরাদ্দ প্রথম কিস্তির ৮ কোটি ২৮ লক্ষের মধ্যে ৭ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছে জেলা। বাকি টাকাও কিছুদিনের মধ্যেই পাওয়ার আশ্বাস মিলেছে। টাকার ৬০ শতাংশ ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে খরচ করতে পারলে দ্বিতীয় কিস্তির জন্যও আবেদন করা যাবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। তাই দ্রুত স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলির ‘গ্রেডিং’ করা ও তাদের ‘ক্রেডিট লিঙ্কে’র আওতায় যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। দফতরের ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর (মনিটরিং) পার্থ চক্রবর্তী বলেন, “ব্যাঙ্কগুলিকে বেশিরভাগ টাকাই দেওয়া হয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে বেশি সংখ্যাক গোষ্ঠীর গ্রেডিং করা ও তাদের বিভিন্ন প্রকল্পে যুক্ত করা। যাতে সেই গোষ্ঠীর সদস্যেরা স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারেন।”
পাশাপাশি কালেক্টরেট চত্বরে জেলা পঞ্চায়েত দফতর ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর জন্য নতুন চারতলা ভবন তৈরিরও উদ্যোগ করা হয়েছে। অফিসের পরিকাঠামো এমন ভাবে তৈরি হচ্ছে যাতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের তৈরি সরঞ্জাম প্রদর্শন করারও ব্যবস্থা থাকবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অরিন্দম দত্ত বলেন, “উন্নত পরিকাঠামো তৈরির জন্যই নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সরকার তা মঞ্জুর করেছে।” এমনকি নতুন ভবন নির্মাণের প্রথম ধাপের টাকাও বরাদ্দ করে দিয়েছে সরকার। পূর্ত দফতরের বিদ্যাসাগর ডিভিসনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তরুণ চক্রবর্তী বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করার চেষ্টা চলছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩৬ হাজার ৪৭৪টি গোষ্ঠী তৈরি করতে পেরেছিল জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতর। যার মধ্যে ৩১ হাজার ৪৭৪ জনকে প্রথম গ্রেডিং করানো গিয়েছে। ১০৩৬৩ গোষ্ঠীর দ্বিতীয় গ্রেডিং হয়েছে। আর ৪০৩১ জনকে ক্রেডিট লিঙ্কের আওতায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার গোষ্ঠীকে সেই আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। অভিযোগ, এক্ষেত্রে প্রশাসনিক উদ্যোগ তেমন একটা লক্ষ্য করা যায়নি। কারণ, এই গোষ্ঠীগুলির বেশিরভাগই বেশ কয়েকবছর আগে তৈরি হয়েছিল। ধীরে ধীরে গোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু গ্রেডিং করা হয়নি। ফলে তাঁরা সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত থেকে গিয়েছেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কোনও একটি গোষ্ঠীর ৬ মাসের লেনদেন দেখার পরেই প্রথম গ্রেডিং করাহয়। প্রথম গ্রেডিং হলেই ওই গোষ্ঠীকে আবর্তনীয় তহবিলে ১০ হাজার টাকা দেয় সরকার।
প্রশাসন জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই পাওনা টাকায় যত গোষ্ঠীর গ্রেডিং করা বা ক্রেডিট লিঙ্কের আওতায় নিয়ে আসা যায় সেই চেষ্টা করা হবে। অন্য দিকে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নতুন চারতলা ভবনের জন্য ৩ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেছে সরকার। ইতিমধ্যেই প্রথম ধাপে ১ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকাও দিয়ে দিয়েছে সরকার। শীঘ্রই নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। |