অন্যান্য রেলের মতো পূর্ব রেলের লোকাল ট্রেনেও ‘অ্যালার্ম চেন’ চালু করা হয়েছিল যাত্রীদের স্বার্থেই। কিন্তু তার অপব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় শুধু ওই রেলে অ্যালার্ম তুলে দেওয়া হয়। আবার যাত্রীদের চাপে পড়েই পূর্ব রেলের লোকাল ট্রেনে অ্যালার্ম চেনের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হল।
চলন্ত ট্রেনে কোনও ঘটনা ঘটলে যাত্রীরা চালক ও গার্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন অ্যালার্ম চেন টেনেই। অন্য সব রেলের ট্রেনে প্রথম থেকেই এই ব্যবস্থা চালু আছে। তা হলে পূর্ব রেল অ্যালার্ম তুলে দিয়েছিল কেন? ওই রেলের বক্তব্য, অহেতুক চেন টেনে ট্রেন থামানোর হিড়িক পড়ে যাওয়ায় বছরখানেক আগে এই ব্যবস্থা তুলে দেওয়া হয়েছিল। কারণ অ্যালার্মের অপব্যবহারের ফলে ট্রেন থেমে যাচ্ছিল মাঝপথে। সময় নষ্ট হচ্ছিল। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সমীর গোস্বামী বলেন, “গত কয়েক মাসে চেন টেনে ট্রেন থামানোর ১৪১টি ঘটনা ঘটেছে। সব ক’টি ক্ষেত্রেই পরে নির্দিষ্ট কামরায় গিয়ে কোনও যাত্রীর এমন কোনও জরুরি প্রয়োজনের হদিস মেলেনি, যার জন্য চেন টেনে ট্রেন থামানো যায়। অহেতুক ট্রেন থেমে যাওয়ায় সব ক্ষেত্রেই অনেকটা সময় নষ্ট হয়েছে।”
অপব্যবহার বাড়তি থাকায় পূর্ব রেলের কর্তারা লোকাল ট্রেনে অ্যালার্ম চেন ব্যবস্থা বন্ধ করে দেন। তাঁদের যুক্তি, শহরতলির শাখাগুলিতে দু’টি স্টেশনের মধ্যে দূরত্ব তেমন বেশি নয়। নয় কামরার ট্রেনও তত লম্বা নয়। কোনও কামরায় গোলমাল হলে পাশের কামরা থেকে সেই কোলাহল শোনা যাবে। তাই চেন টেনে ট্রেন থামানোর দরকার নেই। রেলকর্তাদের এই সব যুক্তি অবশ্য শেষ পর্যন্ত ধোপে টেকেনি। অ্যালার্ম চেন না-থাকায় অসুবিধার কথা জানিয়ে যাত্রীরা প্রচুর অভিযোগ পাঠিয়েছেন। সেই অভিযোগের স্রোতের মুখে অবশেষে রেল বোর্ডের নির্দেশেই ফের চালু করতে হল অ্যালার্ম চেন।
রেল সূত্রের খবর, এখন লোকাল ট্রেনের যে-সব নতুন কামরা আসছে, সেগুলিতে অ্যালার্ম চেন লাগানোই থাকছে। পুরনো কামরায় বাতিল করে দেওয়া অ্যালার্ম চেন ব্যবস্থাও আবার জুড়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই আবার সব ট্রেনে অ্যালার্ম চেনের সুবিধা পাওয়া যাবে। তবে দক্ষিণ-পূর্ব রেলে এই ব্যবস্থায় কোনও দিনই ছেদ পড়েনি। ওই রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সৌমিত্র মজুমদার বলেন, “আমাদের রেলে প্রথম থেকেই অ্যালার্ম চেন আছে। কখনওই তা বন্ধ করা হয়নি।” |