রাজ্য সরকার পঞ্চায়েত ভোট করতে চাইছে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসেই। পঞ্চায়েত দফতর এর আগেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তা জানিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যেই কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু করেছিল। তাতে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন জেলাশাসকেরা। এ বার সে-কথা জানিয়ে মুখ্যসচিব সমর ঘোষ ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ নির্ধারিত সময়ের পরিবর্তে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির পরে করার জন্য কমিশনকে অনুরোধ করেছেন। বৃহস্পতিবার ওই চিঠিতে মুখ্যসচিব লিখেছেন, রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন আগামী বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যেই শেষ হবে।
নির্বাচন কমিশন অবশ্য ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছে, রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু হবে আগামী ১ অক্টোবর অর্থাৎ সোমবার। সেই সময়সূচি অনুযায়ী সারা দেশের সঙ্গে এ রাজ্যেও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হওয়ার কথা আগামী বছরের
১৫ জানুয়ারি।
তালিকা সংশোধনের কাজ পিছিয়ে দেওয়া কেন দরকার, কমিশনকে লেখা চিঠিতে তা ব্যাখ্যা করেছেন মুখ্যসচিব। তিনি লিখেছেন, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজ শুরু করে দিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্যও ভোটার তালিকা সংশোধন করতে হবে। সেই কাজ করেন জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, বিডিও-সহ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন স্তরের কর্মীরা। আবার নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজও
করেন তাঁরাই। সরকারি কর্মীরা একই সঙ্গে দু’ধরনের ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ করলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হবে। তার চেয়েও বড় কথা, পঞ্চায়েতে নির্বাচন নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মীরা ব্যস্ত থাকবেন। ফলে নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে ওই কর্মীদের পেতেও অসুবিধা হতে পারে। তাই কমিশনের ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ পিছিয়ে ফেব্রুয়ারির পরে করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে জেলাশাসকদের বৈঠকে এই বিষয়ে সবিস্তার আলোচনা হয়েছিল। জেলাশাসকদের অনেকেই সে-দিন বলেছিলেন, ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চললে এখানে পঞ্চায়েত ভোটের কাজ করতে সমস্যা হবে। কারণ, নির্বাচন কমিশনের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ করতে হবে। দু’টো কাজ একসঙ্গে করা মুশকিল। জেলাশাসকদের সঙ্গে আলোচনার পরেই এ রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ পিছিয়ে দিতে কমিশনকে অনুরোধ করেছে সরকার। রাজ্য নির্বাচন কমিশনও পঞ্চায়েত দফতরের প্রস্তাবে এখন আর অরাজি নয়। সেই অনুসারে এ মাসের মধ্যেই পঞ্চায়েত স্তরে আসন পুনর্বিন্যাসের কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে। বাকি থাকছে আসন ধরে ধরে সংরক্ষিত আসন চিহ্নিত করার কাজ এবং পঞ্চায়েতের ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা। নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ পিছিয়ে দিলে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিতে আর কোনও সমস্যা হবে না বলেই জানিয়েছেন দফতরের কর্তারা। |