বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা তারা দাবি করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস পরিষদীয় দল। তাদের এই সিদ্ধান্তের কথা দলীয় হাইকম্যান্ডকে জানানো হয়েছে বলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “হাইকম্যান্ড সবুজ সঙ্কেত দিলেই স্পিকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে বিরোধী দলের মর্যাদা দাবি করবে কংগ্রেস পরিষদীয় দল।’’
জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসার পরেই প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদার দাবি তোলা নিয়ে সরব হয়েছিলেন কংগ্রেস বিধায়করা। কারণ বিধানসভায় বিরোধীদের একক দল হিসাবে কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা বেশি (৪২ জন) বলেই আলাদা আসন ও প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা নিয়ে দাবি তোলা হয়। বিষয়টি নিয়ে এ দিন পরিষদীয় দলের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে প্রদীপবাবুর উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু যানজটে আটকে পড়ায় প্রদীপবাবু বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। কিন্তু বৈঠকের পরে পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব ফোন করে প্রদীপবাবুকে জানান, প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদার দাবি নিয়ে বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর লিখিতভাবে তাঁদের সিদ্ধান্ত পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত শাকিল আহমেদকে জানিয়ে দেন পরিষদীয় দলনেতা।
কংগ্রেস এই দাবি তুললেও বামেদের পাল্টা যুক্তি, তারা বিরোধী আসনে যাবতীয় পদ পেয়েছে বামফ্রন্ট জোট হিসাবে। নির্বাচনে লড়াইও করেছে বামফ্রন্ট হিসাবেই। বামফ্রন্টের বিধায়ক ৬১ জন। কাজেই বিরোধী দলনেতার পদে কোনও পরিবর্তনের প্রশ্ন আসে না। কংগ্রেসের আবেদন হাতে পাওয়ার পরেই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
এফডিআই নিয়ে প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বিধানসভায় কোণঠাসা হয়েছে কংগ্রেস। বিধান ভবন থেকে তারা পাল্টা সমালোচনা করেছে মুখ্যমন্ত্রীর ‘শিষ্টাচার-হীনতা’র। একটি বেসরকারি চ্যানেলে মুখ্যমন্ত্রী বুধবার যে ভাবে প্রধানমন্ত্রীর কথা বলার ভঙ্গি নকল করে দেখিয়েছেন তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে বলে এ দিন দাবি করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, “তৃণমূল নেত্রী সংযত না-হলে আমরাও প্রতিবাদের রাস্তা বেছে নেব। আসলে উষ্মা থেকেই মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন। কারণ মুখ্যমন্ত্রী ভেবেছিলেন, তৃণমূল ইউপিএ ছেড়ে দিলে কেন্দ্রে কংগ্রেসের জোট সরকার পড়ে যাবে। তা তো হয়নি। বরং, বহাল তবিয়তে সরকারটা চলছে! তাই তৃণমূল নেত্রীর উষ্মা বাড়ছে।” রায়গঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সির মন্তব্য, “আমি নাটক করতাম। আমিও মুখ্যমন্ত্রীকে নকল করতে পারি। কিন্তু এটা আমাদের শিষ্টাচার বিরোধী। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলব, উনি আয়নায় নিজেকে নকল করে দেখতে পারেন। অঙ্গভঙ্গি করে উনি যে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেন, তা আয়নার সামনে করে দেখতে পারেন!” প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের অভিযোগ, তৃণমূল, বিজেপি এবং বামেরা মিলে ‘অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা’ করছে। তাঁর বক্তব্য, “১৯৭৯ সালেও ভিপি সিংহ, জ্যোতি বসু এবং অটলবিহারী বাজপেয়ী যেমন একজোট হয়েছিলেন, এ বারও সেই চক্রান্ত শুরু হয়েছে!” |