রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যসচিব হচ্ছেন সঞ্জয় মিত্র। বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকার এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। বর্তমানে রাজ্যের স্বাস্থ্য-সচিব সঞ্জয়বাবু নতুন কার্যভার গ্রহণ করবেন আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর, রবিবার। তিনি সমর ঘোষের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন। আর সঞ্জয়বাবুর জায়গায় আসছেন রাজ্যের উচ্চ শিক্ষাসচিব সতীশ তিওয়ারি।
পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক ইতিহাসে ৫৩ বছরের সঞ্জয় মিত্রই হবেন কনিষ্ঠতম মুখ্যসচিব। মহাকরণের খবর, রাজ্য প্রশাসনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে ১৯৮২ সালের এই আইএএস অফিসারকে বসানোর ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অগ্রাধিকার দিয়েছেন দু’টি বিষয়কে। প্রথমত, গত দেড় বছর যাবৎ স্বাস্থ্য-সচিব পদে সঞ্জয়বাবুর ‘ভাল কাজ’, এবং দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়-সহ কেন্দ্রীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা। মুখ্যসচিব হিসেবে দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ রাখার ক্ষেত্রেও সঞ্জয়বাবু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারবেন বলে আশাবাদী মুখ্যমন্ত্রীর অফিস। মূলত এই সব কারণেই মুখ্যসচিবের দৌড়ে কেন্দ্র-রাজ্যে কর্মরত পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের ১৩ জন সিনিয়র আইএএস অফিসারকে পিছনে ফেলেছেন সঞ্জয়বাবু। ওই ১৩ জনের ৯ জন আবার রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব হিসেবে কর্মরত। এটা অবশ্য নজিরবিহীন ঘটনা নয়, জ্যোতি বসুর জমানাতেও এমন ঘটেছে। নিয়ম হল, রাজ্যের মুখ্যসচিব হবেন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (এসিএস) পদমর্যাদার আইএএস অফিসার। সঞ্জয়বাবু বর্তমানে রাজ্য সরকারের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পদমর্যাদার। মুখ্যসচিব হবেন বলে তাঁকে একই সঙ্গে এসিএস হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে।
মহাকরণের খবর, বর্তমান মুখ্যসচিব সমর ঘোষ ১৯৭৭ সালের আইএএস। মুখ্যসচিব পদে তিনি গত ৩১ মার্চ অবসর নিলেও মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে আরও ছ’মাস কাজ সামলাতে বলেছিলেন। বস্তুত মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন, সমরবাবু এর পরেও কিছু দিন দায়িত্বে থাকুন। কিন্তু সমরবাবু রাজি হননি। রবিবার তিনি ‘উত্তরসূরি’ সঞ্জয়বাবুকে কাজ বুঝিয়ে দিয়ে সোমবার যোগ দেবেন রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে, মেম্বার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পদে। ভাবী মুখ্যসচিব এ দিন মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমান মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন। রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন এ দিন বিদায়ী মুখ্যসচিবকে নৈশভোজে আপ্যায়িত করেছিলেন। সঞ্জয়বাবুও ছিলেন সেখানে।
সঞ্জয়বাবুর জায়গায় নতুন স্বাস্থ্য-সচিব হচ্ছেন উচ্চ শিক্ষাসচিব সতীশ তিওয়ারি। তাঁর জায়গায় আসছেন যিনি, সেই বিবেক কুমার আপাতত কেন্দ্রীয় সার, রসায়ন মন্ত্রকে। শীঘ্রই তাঁকে রাজ্যের নতুন পদে যোগ দিতে বলা হয়েছে। |