পুরপ্রধান নির্বাচনের বৈঠক দ্রুত ডাকার দাবি তুললেন বাঁকুড়া পুরসভার ১২ জন কাউন্সিলর। বৃহস্পতিবার তাঁরা বাঁকুড়া সদর মহকুমাশাসককে এই দাবিতে স্মারকলিপি দেন। তৃণমূলের শম্পা দরিপাকে পুরপ্রধানের পদ থেকে সরানোর জন্য অনাস্থা ডাকা নিয়ে জটের জেরে প্রায় আড়াই মাস ধরে বাঁকুড়া পুরসভায় ডামাডোল চলছে। শম্পাদেবীর বিপক্ষে ভোট দেওয়া ১০ কাউন্সিলরের মধ্যে চার জন এ দিন শম্পাদেবীর সঙ্গে মহকুমাশাসকের কাছে গিয়েছিলেন। তা নিয়ে শম্পাদেবী ও তাঁর বিপক্ষ অলকা সেন মজুমদার গোষ্ঠীর ক্ষমতার সমীকরণ নিয়ে ফের শহরে জ্বল্পনা শুরু হয়েছে।
২৩টি ওয়ার্ডের বাঁকুড়া পুরসভায় তৃণমূলের ১২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১ জন মারা গিয়েছেন। ওই ১১ জনের মধ্যে অলকাদেবী-সহ ৬ জন কংগ্রেসের চার কাউন্সিলরকে সঙ্গে নিয়ে পুরপ্রধান শম্পা দরিপার বিরুদ্ধে ২৩ জুন অনাস্থা আনেন। ৯ জুলাই আস্থাভোটে শম্পাদেবীকে সমর্থন করেন তাঁর দলের বাকি কাউন্সিলররা ও দুই নির্দল এবং এক কংগ্রেস কাউন্সিলর। ১০-৮ ফলাফলে হেরে যান শম্পাদেবী। এর পরেই আস্থাভোটে পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে বলে দাবি করেন শম্পাদেবীর ঘনিষ্ঠরা। তা গুরুত্ব না দিয়েই অলকাদেবীরা নতুন পুর প্রধান নির্বাচনের প্রস্তুতি নেন। শম্পাদেবীর ঘনিষ্ঠ এক নির্দল কাউন্সিলর আস্থাভোটে ত্রুটি হয়েছে বলে অভিযোগ করে হাইকোর্টে মামলা করেন। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরও চিঠি দিয়ে জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেয়, আস্থাভোট সংক্রান্ত পদ্ধতি খতিয়ে দেখা হবে। তা না হওয়া পর্যন্ত নতুন পুরপ্রধান নির্বাচনের বৈঠক ডাকা যাবে না।
এ দিন শম্পাদেবীর সঙ্গে তাঁর প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করা প্রাক্তন পুরপ্রধান শান্তি সিংহ ও চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল রেখা দাস রজক এবং কংগ্রেসের কার্তিক শিট ও আল্পনা পালকে মহকুমাশাসকের অফিসে স্মারকলিপি দিতে যেতে দেখা যায়। শম্পাদেবী দাবি করেন, “বাঁকুড়াবাসীর কথা ভেবেই ওই চার কাউন্সিলর এখন আমাকে পুরপ্রধান পদে ফের সমর্থন করতে চেয়েছেন।” তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, এ দিন যাঁরা মহকুমাশাসকের অফিসে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে এক কংগ্রেস কাউন্সিলর বাদে বাকিরা বুধবার তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়ে দেন, তাঁরা পুরপ্রধান হিসেবে শম্পাদেবীকে সমর্থন জানাবেন। তারপরেই এ দিনের কর্মসূচি। অলকাদেবী অবশ্য দাবি করেছেন, “এখনই সব শেষ হয়ে যায়নি। আরও কিছু বাকি রয়েছে।” ওই চার কাউন্সিলর অবশ্য ঝেড়ে কাশছেন না। তাঁদের মাপা বক্তব্য, “বাঁকুড়াবাসীর স্বার্থেই পুরসভার অচলাবস্থা কাটাতে মহকুমাশাসকের কাছে গিয়েছিলাম। আর কিছু বলা যাবে না।”
ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) সুদীপ সরকার বলেন, “রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফ থেকে এখনও পুরপ্রধান নির্বাচনের বৈঠক ডাকার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা তোলা হয়নি। কাউন্সিলরদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। পরবর্তী নিদের্শ অনুযায়ী কাজ করা হবে।” |