বটি দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রীকে নৃশংসভাবে খুন করে তার মৃতদেহে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে প্রমান লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে স্বামী, দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ও দেওরকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের নির্দেশ দিলেন জঙ্গিপুর প্রথম ফাস্ট ট্রাক আদালতের বিচারক শৈলেন্দ্র কুমার সিংহ। এই সঙ্গে অভিযুক্ত ৩ জনকে দশ হাজার টাকা করে জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে আরও দু’বছর করে কারাদন্ড ভোগ করতে হবে। এই খুনকে বিরলতম নৃশংসতার ঘটনা বলে উল্লেখ করে সরকারী আইনজীবী অভিযুক্ত স্বামী স্বপন মণ্ডল ও দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী তুলসী মণ্ডলকে ফাঁসি দেওয়ার আর্জি জানালেও আদালত অবশ্য তা খারিজ করে দেয়। সরকারী আইনজীবী অশোক সাহা জানান, রঘুনাথগঞ্জ থানার বাইন্ধ্যা গ্রামে ১৯৯৫ সালে ২৫ মে মৃতার শ্বশুর বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসিরা অভিযুক্তদের বাড়িতে চড়াও হয়। তখন দোষীরা পালিয়ে বাঁচলেও পরে পুলিশ স্বামী, দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ও দেওরকে ধরে। মৃতার শ্বশুর-শাশুড়িকেও ধরা হয়। কিন্তু প্রমানাভাবে আদালত শ্বশুর ও শাশুড়িকে খুনের অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়। অশোকবাবু জানান, স্বপন মণ্ডল মৃতা নাগরি ওরফে নাজানি মণ্ডলকে প্রথম বিয়ে করেন। তাদের দুটি ছেলে মেয়েও হয়। পরে স্বপন প্রতিবেশী এক যুবকের স্ত্রী তুলসী মণ্ডলকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করে তার সঙ্গে বসবাস করতে শুরু করে। এতে প্রথম পক্ষের স্ত্রী আপত্তি করলে পরিকল্পনা করে দ্বিতীয় পক্ষের বৌ তুলসী মণ্ডল ও স্বামী স্বপন মণ্ডল ঘটনার দিন সকালে প্রথমা স্ত্রীকে নিজের মাটির বাড়ির দোতলার কোঠায় ডেকে নিয়ে গিয়ে তরকারী কাটার বটি দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করে। তাদের সঙ্গে ছিল স্বপনের ভাই খোকনও। খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে মৃতার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে মৃতদেহটি পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে তারা। ইতিমধ্যে গ্রামবাসিরা খুনের ঘটনা জানতে পেরে তার বাড়িতে চড়াও হয়। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। খবর পেয়ে মৃতার মা সুন্দরী মণ্ডল রঘুনাথগঞ্জ থানায় মেয়েকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। |