ঘরের মধ্যেই মিলল দম্পতির দেহ।
বহরমপুর শহর লাগোয়া রাধারঘাট-ছোট বসন্ততলায় বুধবার সকালে নিজেদের বাড়িতে মিলন (২৭) ও ঝুম্পা সরকারের দেহ দু’টি দেখে পুলিশের দাবি, মিলনবাবু স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে প্রাথমিক তদন্তে সে ব্যাপারে কোনও নিশ্চয়তা কিন্তু মেলেনি। ময়নাতদন্তের পরে তাই প্রয়োজনে ভিসেরা পরীক্ষাও করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
এ দিন সকালে ঘরের মধ্যেই ঝুম্পাদেবীর রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। সরকার দম্পতির বছর সাতেকের ছেলে, মা-বাবার ঘরে বিস্কুটের কৌটো আনতে গিয়ে দেখে মায়ের গলার নলি কাটা দেহ পড়ে রয়েছে। আর চালার কড়ি কাঠ থেকে গলায় শাড়ির ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন মিলন। |
পড়শিদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, বেশ কিছু দিন ধরেই ওই দম্পতির সম্পর্কে চিড় ধরেছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মিলন-ঝুম্পার সম্পর্ক বেশ পুরনো। বিয়েও হয়েছে বছর আটেক আগে। তবে বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরতে থাকে এবং তা নিয়ে বচসা প্রায়ই হাতাহাতিতে গড়াত বলে পড়শিরা জানিয়েছেন। সম্পর্ক আরও খারাপ হয়, সন্তান জন্মানোর পরে। ছেলে তাঁর নয়, এমনই মনে করতে মিলন। এ সন্দেহ সে বন্ধু-স্বজনদের কাছে একাধিকবার জানিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
দিন কয়েক আগে ঝুম্পা বানি ছেনে চলে গিয়েছিল। মিলনের বাবা নিখিলবাবুর দাবি, “স্থানীয় থানার গাড়ির এক চালকের সঙ্গে ঝুম্পার সর্ম্পক গড়ে উঠেছিল। তার সঙ্গেই স্বামী ও ছেলেকে ফেলে চলে গিয়েছিল ঝুম্পা।” আজ, বৃহস্পতিবার ওই দম্পতির আপোসে বিবাহ-বিচ্ছেদ হওয়ার কথা ছিল। সে জন্যই ঝুম্পাকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। ঝুম্পার মা কাকলিদেবী বলেন, “জামাই-এর সঙ্গে ঝগড়া করে মেয়ে আমার কাছেই চলে এসেছিল দিন কয়েক আগে। এখানেই ছিল। বুধবার জামাই আমাদের বাড়িতে যায়। রাত সানে এগারোটা নাগাদ মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে জামাই বাড়ি ফেরে।’’
নিখিলবাবু বলেন, “বুধবার রাতে গ্রামে মনসার গান শুনতে গিয়েছিলাম। অনেক রাতে বাড়ি ফিরে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সকালে নাতি, সুমন বাবার ঘরে বিস্কুটের কৌটো আনতে গিয়ে দেখে মা-বাবার ওই অবস্থা।” তবে মিলনের মা মিনতীদেবী বলেন, “ছেলে দুপুরে বেরিয়ে ছিল, তারপর কখন সে বৌমাকে নিয়ে বাড়িতে ফিরেছিল তা আমরা জানতেই পারিনি।”
বহরমপুর থানার আইসি মেহাইমেনুল হক বলেন, “জানতে পেরেছি, ওই মহিলার অন্য একটি সম্পর্ক ছিল। তার জেরেই বিবাদ চলছিল।” |