|
|
|
|
মন্ত্রীর বাড়িতে পরিচারিকার অপমৃত্যু |
খুনের অভিযোগ এসপি অফিসে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের বাড়িতে পরিচারিকার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় খুনের অভিযোগ দায়ের করলেন মৃতার বাবা-মা।
মঙ্গলবার বিকেলে পাঁশকুড়া শহরে রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সৌমেনবাবুর বাড়ি থেকে মিঠু বেরা (১৮) নামে ওই পরিচারিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পরে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার মৃতার বাবা খোকন বেরা ও মা সরস্বতীদেবী তমলুকে জেলা পুলিশ সুপারের অফিসে এসে লিখিত অভিযোগ করেন, মেয়েকে খুন করার পরে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানার বড়হাট পঞ্চায়েত এলাকার বারভাগিয়া গ্রামের বাসিন্দা খোকনবাবু এ দিন এসপি অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “মন্ত্রীর বাড়িতে মেয়ের উপর অত্যাচার করা হত। মঙ্গলবার দুপুরে মেয়ে মারা গেলেও প্রথমে এই বিষয়ে জানানো হয়নি। পরে সাহায্য হিসাবে বেশ কয়েক হাজার টাকা দেয় ওরা।”
এই প্রসঙ্গে সৌমেনবাবুর প্রতিক্রিয়া, “যদি আমি অপরাধী হয়ে থাকি, তবে জেল বা ফাঁসি হবে। যদ্দূর জানি তৃণমূলের একাংশ ও এসইউসি জোর করে এফআইআর লিখিয়েছে। সিপিএমকে এই ঘটনায় আমি দোষ দিই না।”
পেশায় কুমোর খোকনবাবু জানান, পাঁচ মেয়ের মধ্যে মেজ মিঠু। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা তাঁর। এলাকারই বাসিন্দা মন্টু মুড়ার মাধ্যমে বছর চারেক আগে সৌমেনবাবুর বাড়িতে পরিচারিকার কাজে যোগ দেন মিঠু। |
|
মৃতার বাবা-মা।—নিজস্ব চিত্র। |
খোকনবাবুর অভিযোগ, “মঙ্গলবার বিকেলে মন্টু মুড়া আমাদের বাড়িতে গিয়ে বলেন মন্ত্রীর ছেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠান আছে। সেখানে গিয়ে কাজ করে দিতে হবে। এরপর আমাকে মোটর সাইকেলে চাপিয়ে মংলামাড়ো বাজারে নিয়ে যান মন্টু। সেখান থেকে ট্যাক্সিতে চাপিয়ে পাঁশকুড়া থানায় নিয়ে আসেন। থানায় মেয়ের মৃতদেহ দেখানো হয়। এরপর আমাকে একটা কাগজে সই করিয়ে নেয় ওঁরা। রাতে পাঁশকুড়ার একটি হোটেলে রেখে দেন।” বুধবার সকালে তমলুকে মেয়ের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের আগে ফের একটি কাগজে সই করানো হয় বলে খোকনবাবুর দাবি। তাঁর অভিযোগ, “এরপর কয়েকজন আমাকে তমলুকের একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সাহায্য স্বরূপ নগদ ৪৫ হাজার টাকা দেন। মৃতদেহ সৎকারের জন্য আমার দাদার হাতে আরও ১০ হাজার টাকা দেন ওঁরা।” মৃতার মা সরস্বতীদেবী বলেন, “মঙ্গলবার সকালেও মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। তখন ও কোনও অসুবিধার কথা জানায়নি।” খোকনবাবুর দাবি, “আমার মেয়ে এই ভাবে আত্মহত্যা করতে পারে না। আমার আশঙ্কা ওকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা মেয়ের মৃত্যুর প্রকৃত তদন্ত চাই।”
এই ঘটনার তদন্তের দাবিতে এ দিনই এসপি অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে স্মারকলিপি দেয় এসইউসি প্রভাবিত সারা বাংলা পরিচারিকা সমিতি। জেলার পুলিশ সুপার অশোককুমার জৈন বলেন, “আমি এখন কলকাতায় আছি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” |
|
|
|
|
|