দু’জনের জীবনপথ পুরোপুরি বিপরীতমুখী। মেজাজে বা মননেও ভিন্ন পথের পথিক ছিলেন তাঁরা। তবুও বাংলা কবিতার পাঠকদের আরও অনেক কিছু দেওয়ার ছিল দু’জনেরই। প্রতিভার চূড়ান্ত বিকাশের পর্বেই জীবনপথে ছেদ পড়ে গেল। মঙ্গলবার কলকাতায় সাহিত্য আকাদেমির সভাঘরে সম্প্রতি প্রয়াত দুই কবি বীতশোক ভট্টাচার্য আর জয়দেব বসু স্মরণসভায় সেই শূন্যতার কথাই উঠে এল। শোনা গেল আক্ষেপ আর হাহাকার। প্রয়াত দুই কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন যাঁরা, তাদের কেউ সমসাময়িক, কেউ নবীন আবার কেউ বয়সের বিচারে অনেক বড়। কিন্তু বাংলা কবিতার জগতে প্রত্যেকেই সুপরিচিত। |
জয়দেব বসু |
বীতশোক ভট্টাচার্য |
|
সাহিত্য আকাদেমির তথা স্মরণসভার সভাপতি সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, “বীতশোকের পাণ্ডিত্য আর জয়দেবের উচ্ছ্বাস দুই-ই আমার কাছে ছিল সমান আগ্রহের। তবুও এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করাটা খুবই আক্ষেপের। কারণ দু’জনেই ছিলেন আমার থেকে বয়সে ছোট।” বীতশোকের প্রতি সম্মান জানানোর ভার পড়েছিল কবি নির্মাল্য মুখোপাধ্যায় ও যশোধরা বাগচীর উপরে। নির্মাল্য বাংলা কবিতায় বীতশোকের প্রাসঙ্গিকতার পাশাপাশি মানুষ হিসেবে কবির মুল্যায়ন, গল্পের প্রতি আগ্রহ সবই উল্লেখ করেন। যশোধরা উপস্থিত থাকতে না পারায় তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করা হয়। জয়দেব বসুর জীবনের নানা ছোট ছোট ঘটনা, খুনসুটি, তার কবিতার ভাষা সব কিছু নিয়েই আলোচনা করেন গৌতম চৌধুরী ও সার্থক রায়চৌধুরী। স্বাগত ভাষণ দেন আকাদেমির আঞ্চলিক সচিব অংশুমান কর। বাংলা কবিতার দুই আলাদা পথের পথিক ছিলেন বীতশোক ও জয়দেব। সময়ের অনেক আগেই তাদের চলে যাওয়া পথ দু’টিকে প্রায় শূন্যতার দিকে ঠেলে দিল, এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালক তথা সাহিত্য আকাদেমির বাংলা উপদেষ্টা পর্ষদের আহ্বায়ক মানবেন্দ্র বন্দোপাধ্যায়। উপস্থিত কবিতা অনুরাগীদের নৈশ্বব্দ যেন সেই আশঙ্কাকেই বাড়িয়ে তোলে। মহানগরীর আকাশে তখন ঝিরঝিরে বৃষ্টি। |