গড় দামে দেশির সঙ্গে বিদেশি কয়লাও বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে সরবরাহ করার যে পরিকল্পনা কোল ইন্ডিয়া নিয়েছে, তা রাজ্য সরকার মানবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। এই পদ্ধতিতে টন পিছু কয়লার দাম অনেকটাই বেড়ে যাবে বলে রাজ্য মনে করছে।
বৃহস্পতিবার বণিকসভা সিআইআই আয়োজিত এক আলোচনা সভায় রাজ্যের বিদ্যুৎ সচিব মলয় দে জানিয়েছেন, কয়লার দাম বাড়লে স্বাভাবিক ভাবেই বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ বাড়বে। আর তা বাড়লে বিদ্যুতের মাসুল বাড়তে বাধ্য। রাজ্য চায় না গ্রাহকদের ঘাড়ে সেই বোঝা চাপুক। যে
কারণে ওই পদ্ধতিতে কয়লা সরবরাহ ব্যবস্থার বিরোধিতা করা হয়েছে বলে মলয়বাবু জানান।
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, সম্প্রতি কোল ইন্ডিয়া ওই গড় দামের ভিত্তিতে কয়লা সরবরাহ করার ব্যাপারে রাজ্য সরকারের মতামত জানতে চেয়ে চিঠি দেয়। তার উত্তরেই রাজ্য সরকার ওই প্রস্তাব মানবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মতো ওড়িশা, ছত্তীসগঢ় সরকারও একই ভাবে কোল ইন্ডিয়ার পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে বলে বিদ্যুৎ কর্তারা জানাচ্ছেন।
কী চাইছে কোল ইন্ডিয়া?
শুধুমাত্র দেশি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিকে না-পাঠিয়ে তার সঙ্গে আমদানি করা কয়লাও সরবরাহ করতে চায় তারা। এ ক্ষেত্রে দাম নির্ধারণ হবে দেশি-বিদেশি কয়লার গড় হিসেব করে। কোল ইন্ডিয়া যাকে ‘পুলিং প্রাইস’ বলছে। যেহেতু আমদানি করা কয়লার দাম বেশি এবং দেশি কয়লার দাম কম, এর ফলে গড়ের হিসেবে দেশি কয়লার দাম বাড়বে। বিদেশি কয়লার দাম কমে যাবে। সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির অভিযোগ, দেশি কয়লার দাম বাড়িয়ে তুলনায় কম দামে সরবরাহ করা হবে বিদেশি কয়লা। আর তাতেই বিপদ হবে তাদের। কেন? বিদ্যুৎ কর্তারা জানাচ্ছেন, অধিকাংশ সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রেই সব থেকে বেশি দেশি কয়লা ব্যবহার করা হয়। আর কোল ইন্ডিয়া যে পুলিং প্রাইস-এর কথা বলছে তাতে দেশি কয়লার দাম টন পিছু ১০০ টাকা করে বেড়ে যাবে। ফলে ওই বাড়তি খরচের বোঝা গিয়ে চাপবে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের ঘাড়ে। কোল ইন্ডিয়ার দাবি মেনে গড় হিসেবে কয়লা কিনলে প্রথম বছরেই বিদ্যুতের দাম ইউনিট পিছু ৮-১০ পয়সা বেড়ে যাবে বলে রাজ্য অভিযোগ করেছে।
তবে এই এই পদ্ধতিতে বেসরকারি বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি অনেকটাই লাভবান হবে বলে কর্তাদের একাংশের ধারণা। কারণ বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থাগুলি অনেক বেশি পরিমাণে আমদানি করা কয়লা ব্যবহার করে থাকে। |