বদলাচ্ছে দেশের গাড়ি বাজার। তার সঙ্গে তাল রেখে ক্রেতার সাধ ও সাধ্য মেলাতে নিত্য নতুন গাড়ি তৈরি করছে সংস্থাগুলি। সেই দৌড়ে পা মেলাচ্ছে মার্সিডিজ বেঞ্জ ইন্ডিয়া-ও। তাই নয়া ‘বি-ক্লাস’ গাড়িটি ভারতের বাজারে আনার পরে দামি ও বিলাসবহুল গাড়ির প্রতীক হিসেবে পরিচিত সংস্থাটি জানিয়েছে, আগামী দিনে ৩০ লক্ষ টাকার কমে আরও বেশি করে নতুন গাড়ি এ দেশে আনতে চায় তারা।
কয়েক দশক আগেও ভারতে গাড়ি বলতে বোঝাত অ্যাম্বাসাডর। মারুতি আমুল বদলে দিল ছবিটা। এখন মূলত ছোট বা কম্প্যাক্ট, সেডান বা বড় তিন-খোপের (থ্রি-বক্স) গাড়ি ও বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত বড় গাড়ি (ইউটিলিটি ভেহিক্ল)-এই তিন ভাগে বিভক্ত এই শিল্প। বদলাচ্ছে সে ধারণাও। কম দামে বেশি সুবিধা ও স্বাচ্ছন্দ্য দিয়ে নতুন গাড়ি আনছে বিভিন্ন সংস্থা। |
দামি গাড়ির বাজারেও মুলত বেশি দামি (লাক্সারি) ও একটু কম দামি (প্রিমিয়াম) গাড়ি তৈরি হয়। ভারতে এত দিন ৩০ লক্ষ টাকা বা তার চেয়ে বেশি দামি গাড়িই বিক্রি করত মার্সিডিজ বেঞ্জ ইন্ডিয়া। ভবিষ্যতে ৩০ লক্ষ টাকার কম দামি গাড়ির উপর জোর দিতে চাইছে তারা। সংস্থার ডিরেক্টর (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) দেবাশিস মিত্র জানান, আপাতত তাঁদের ব্যবসার সামান্য অংশ বি-ক্লাসের মতো প্রিমিয়াম গাড়ির হাত ধরে আসবে। তবে বছর পাঁচেক পরে ৫০% ব্যবসারই সূত্র হবে এ ধরনের গাড়ি, আশা তাঁদের। আগামী দিনে সংস্থাটির এ-ক্লাস, জিএস-ক্লাস ও সিএল-ক্লাসের মতো গাড়িগুলি ওই তালিকাতেই পড়বে। তবে গাড়ির গুণমানের সঙ্গে কোনও রকম আপস করা হবে না, দাবি সংস্থার।
কী ভাবে বাড়ছে প্রিমিয়াম গাড়ির চাহিদা? দেবাশিসবাবুর দাবি, এ বছরে এখনও পর্যন্ত লাক্সারি বা ৩০ লক্ষ টাকার বেশি দামি গাড়ির বিক্রি প্রায় বাড়েনি বললেই চলে। সেখানে তার চেয়ে কম দামি প্রিমিয়াম গাড়ির বিক্রি বাড়ছে ৭০-৮০% হারে।
গাড়ি শিল্পের মতে, যাঁরা ২০ লক্ষ টাকার আশাপাশে গাড়ি কেনেন, তাঁদের অনেকেরই ৩০ লক্ষ টাকার গাড়ি কেনার সাধ থাকলেও সাধ্য থাকে না। কিন্তু ৩০ লক্ষের চেয়ে কমে যদি তথাকথিত দামি গাড়ি (যেগুলি গাড়ি শিল্পে নামী ব্র্যান্ডের প্রতীক হিসেবে পরিচিত) মেলে, তা হলে কেউ কেউ তা অবশ্যই গ্যারাজে ঠাঁই দিতে চাইবেন। দেশে এ ধরনের ক্রেতা বাড়ছে। অন্যান্য সংস্থার মতো মার্সিডিজ-ও সেই বাজারকে পাখির চোখ করছে।
কলকাতায় বি-ক্লাস গাড়িটির দাম পড়বে ২২.৫-২৬ লক্ষ টাকা। আপাতত গাড়িগুলি সম্পূর্ণ ভাবে আমদানি করছে সংস্থা। ভারতের ভাগে আপাতত ২৫০টি গাড়ি বরাদ্দ হলেও সংস্থার দাবি, সবই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। নতুন বুকিং করলেও অবশ্য গাড়ির চাবি হাতে পেতে আগামী জানুয়ারি হয়ে যাবে। |