বয়সেও বাঁধনছাড়া
চ্যালেঞ্জ তন্বীদের
ছেলেরা আজকাল ফ্যাশনে মাতছে মাতুক। কিন্তু সাজগোজে মেয়েদের ‘মোনোপলি’ পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই প্রতিষ্ঠিত।
প্রায় সূর্য-চন্দ্র, আলো-বাতাস, মেঘ-বৃষ্টির মতোই শাশ্বত ব্যাপার, আর কী! ২০১২-তে বঙ্গদেশে সে নিয়ম আচমকা পাল্টে যাবে এমন কোনও ভবিষ্যদবাণী আগেও ছিল না, এখনও নেই।
কাজেই দুর্গাপুরের মা-বোনেরা অনেক আগে থেকেই বাজার আলো করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ-কেউ কার্যত উড়েও বেড়াচ্ছেন বলা চলে। এ দোকান থেকে সে দোকান। কুর্তা-টপ থেকে বাহারি শাড়ি। ইচ্ছে হলে টুক করে তুলে নিচ্ছেন এটা-সেটা। তার পরেই আবার “ওরে চল চল! এখনও কত কিছু বাকি! বাড়ির কাজের লোকটাও আবার আসছে না!” বা, “মন্দিরা ব্লাউজটা বানিয়েছে দেখেছিস তো! ধুস, এখন আর অর্ডার নিচ্ছে না!”
অথবা... আরও কত কলকাকলিতে যে এখন মুখর বেনাচিতি থেকে সিটি সেন্টার!
সিটি সেন্টারের শপিং মলে এখন বড় বড় সংস্থার দোকান জুড়ে নতুন নতুন ডিজাইনের কুর্তি। বেশির ভাগই সুতির। তার উপরে আবার সুতো বা পুঁতির রকমারি কাজ। চারপাশে ছোঁক-ছোঁক করছে টিন-এজারের দল। ক্লাস টুয়েলভের তনিমা সেনের সরল যুক্তি, “আমাদের এখানে যা গরম পড়ে। এ রকম বেশ কয়েকটা কিনে রাখলে বিভিন্ন ভাবে পরা যায়।” বিকোচ্ছে পাটিয়ালা, চুড়িদার, কলিদার। গত বারও বিকিয়েছিল খুব। এ বারও তুঙ্গে। গত ক’বছরের মতো লেগিংসেরও চাহিদা যথেষ্ট। তবে নতুন চেহারায় বাজার মাতাচ্ছে ধুতির ডিজাইনের পাজামা আর বাহারি কামিজ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বার এটাই ‘ইস্পেশ্যাল’!
ফ্যাশন বিশেষজ্ঞেরা বলে থাকেন, পছন্দের পোশাক আবার মুড ভাল রাখে। মেজাজ হয় তন্দুরস্ত। ঝলমলে হয়ে ওঠে ব্যক্তিত্বও। এখন তো সুকুমার রায়ের হ-য-ব-র-ল মেনে চল্লিশের পর থেকেই বয়স নামছে উল্টো পথে। শরীর ভারী হোক না, মনের বয়স কমতে ক্ষতি কী! শরীর-মনের তাল রাখতে অনেকে আবার কসরতও করছেন যথেষ্ট। ফলে উনিশ-কুড়ির ফ্যাশন ‘ট্রাই’ করতেও মধ্য বাধছে না তিরিশ-উত্তর চল্লিশদের। ‘বি’ জোনের কাশীরাম দাস রোডের মাঝ-তিরিশের দোলা বসুর গলায় যেন কলেজ-দিনের দোলা “শরীর ফিট রাখতে নিয়মিত জিমে যাই। নতুন কিছু ট্রাই করতে ক্ষতি কি! আয়নার সামনে দাঁড়ালে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।”
সিটি সেন্টারের বাতানুকূল দোকান থেকে পা বাড়িয়ে স্টেশন লাগোয়া দুর্গাপুর বাজার বা বেনাচিতি বাজারে গেলে কিছুটা পুরনো শহরের গন্ধ। কিন্তু প্রজাপতি পাখা মেলেছে সর্বত্রই। যেখানেই যাওয়া যাক, চাহিদা ডিপ রঙের টপ, লো লেংথের স্কার্ট, রকমারি প্রিন্টেন্ড র্যাপার আর বিভিন্ন ধরনের ফ্যাশনদার ফ্রকের। কেউ যদি রেডিমেড পোশাকে স্বচ্ছন্দ না হন, তা হলেও ক্ষতি নেই। পাশেই পাওয়া যাচ্ছে সুতি, সিল্ক, জর্জেটের পিস। কাপড় কিনে মনের মতো বানিয়ে নিলেই হল।
দোকানিরা অবশ্য জানাচ্ছেন, শুধু পুজো নয়, প্রায় সারা বছরই ‘শপিং’ করেন শিল্পাঞ্চলের মানুষ। তবে আরাম আর স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখে সুতির কাপড়ের দিকেই ঝোঁক বেশি। পুজোয় আপাতত বাজার মাতাচ্ছে বেগুনি, ফুুশিয়া, ডিপ নীল, লাল, হলুদ, ম্যাজেন্টা, সবুজ, এমনকী জংলি রঙও। যাকে বলে, তাবৎ পুরনো ধুলো হেলায় উড়িয়ে ‘ছুটছে রঙের পাগলা ঘোড়া...’।
আর যাবতীয় কেনার সঙ্গে ‘অফার’ তো থাকছেই! চণ্ডীদাস বাজারের পোশাক বিক্রেতা মনোসিজ দত্তের কথায়, “আগে সাধারণত চৈত্র সেলেই অফার থাকত। কিন্তু এখন প্রতিযোগিতা বেড়েছে। তাই খদ্দের টানতে পুজোর সময়েও বিশেষ অফার দিচ্ছি।”
অফার অবশ্য ফুচকার শেষে ফাউ।
কার ঝুলিতে আসলে কী লুকনো, তার রংবাহারি ফানুস ওড়ানো শুরু হয়ে যাবে কিন্তু ষষ্ঠী থেকেই!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.