বনধের পক্ষে এবং বিরোধিতায় একের পর এক মিছিলে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ল উত্তরবঙ্গের দু’টি শহর। বুধবার শিলিগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু শহরে মিছিল করেন বামফ্রন্ট এবং তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকরা। কয়েকটি জায়গায় এসইউসিআইয়ের পক্ষ থেকেও মিছিল বের হয়। আজ, বৃহস্পতিবার ১২ ঘন্টার বনধ ডেকেছে সিপিএম ও বিজেপি। এ দিন মিছিলের জেরে বিকাল ৪টার পর থেকে শিলিগুড়িতে ব্যাপক যানজট হয়। বিপাকে পড়তে হয় যাত্রীদের। একই অবস্থা হয় রায়গঞ্জে। শিলিগুড়িতে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে অবশ্য যানজট কাটাতে তৎপরতা ছিল। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার এ রবীন্দ্রনাথ বলেন, “বিকালের দিকে তিনটি মিছিল ছিল। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” পুলিশ সূত্রের খবর, বনধের বিরোধিতা করে এ দিন বিকাল ৪টা নাগাদ বাঘাযতীন পার্ক থেকে মিছিল বের করে তৃণমূল। মিছিলটি হিলকার্ট রোড, সেবক রোড, বিধান রোড হয়ে দলের জেলা অফিসের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলের পরে তিনটি রাস্তাতেই যানজট তৈরি হয়। বনধের সমর্থনে সাড়ে ৪টা নাগাদ মিছিল বের করে এসইউসিআই। হিলকার্ট রোডে মিছিল করে তারা। এর পরই বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে মিছিল বের করা হয়। শহরের প্রধান তিনটি সড়ক ঘুরে অনিল বিশ্বাস ভবনে গিয়ে বামেদের মিছিল শেষ হয়। এ দিন সকালে এনজেপিতেও তৃণমূলের পক্ষ থেকে মিছিল বের হয়। সিটি অটো চালকরাও ওই মিছিলে যোগ দেওয়ায় বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলার মহাসচিব কৃষ্ণ পাল অবশ্য দাবি করেন, তাঁরা গাড়ি চলাচলের রাস্তা ছেড়ে দিয়েই মিছিল করেছেন। তিনি বলেন, “ডিজেল, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি এবং খুচরো বাজারে বিদেশী বিনিয়োগের বিরোধিতায় আমার আন্দোলন করছি। বনধ করে সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলে আন্দোলন ঠিক নয়। আমরা রাস্তায় নেমে বনধের বিরোধিতা করব। মিছিলের মাধ্যমে সে বার্তাই আমরা দিয়েছি।” সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “যানজটের জন্য দুঃখিত। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি এবং খুচরো বাজারে বিদেশী বিনিয়োগের মতো সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এর প্রতিবাদের একমাত্র হাতিয়ার আন্দোলন।” এ দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা ধর্মঘটের বিরোধিতা করে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে শহরে তিন দফায় মিছিল বের করা হয়। শিলিগুড়ি মোড় থেকে বিদ্রোহী মোড় পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তায় মিছিল করে তারা। পাল্টা, ধর্মঘটের সমর্থনে এদিন বিকেলে শহরে বিভিন্ন এলাকায় মিছিল ও পথসভা করেন সিপিএম সহ জেলা বামফ্রন্টের কয়েকশো কর্মী সমর্থক। বন্ধের সমর্থনে এদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় মিছিল, বাইক র্যালি ও একাধিক পথসভা করেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। বিজেপির উত্তর দিনাজপুরের সভাপতি শুভ্র রায়চৌধুরী বলেন, “ধর্মঘট সফল করতে আমরা রাস্তায় নেমেছি। বৃহস্পতিবারও রাস্তায় থাকব।” উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “বনধকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও অশান্তি না হয় তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে।” এদিন বালুরঘাটে মিছিল করে বামফ্রন্ট। সন্ধ্যায় ওই মিছিলের জেরে যানজট হয়। মালদহে বন্ধের বিরোধিতায় মিছিল করে তৃণমূল। বনধের পক্ষে বিজেপিও মিছিল করে। |