ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে পূর্ব মেদিনীপুরে। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী বুধবার পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯৬ জন। মৃতের সংখ্যা ৩ জন। মঙ্গলবার থেকে বুধবার দুপুরের মধ্যে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩ জন মহিলা ও ১২ জন পুরুষ-সহ ২৫ জন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে কাঁথি হাসপাতালে জ্বর নিয়ে ভর্তি হন তাজপুর গ্রামের প্রভাতী পণ্ডা নামে ৪৩ বছরের এক গৃহবধূ। রাতেই হাসপাতালে মারা যান তিনি। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ বিশ্বাস বলেন, “মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭১ জন। এঁদের মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে কাঁথির রামনগর ২ ব্লকের বাদলপুর এলাকায় নতুন করে ২৫ জন আক্রান্ত হয়ে মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় বুধবার এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬ জন।” তিনি আরও বলেন, “জ্বর নিয়ে মঙ্গলবার রাতে এক মহিলা ভর্তি হন। ভর্তির কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান তিনি। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে জেলায় ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা ৩ জন।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথির বাদলপুর পঞ্চায়েতের বাদলপুর, তাজপুর, রামচন্দ্রপুর, গোপালপুর প্রভৃতি গ্রামে গত কয়েকদিন ধরেই জ্বরের প্রকোপ চলছে।
মঙ্গলবার রাতে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে যান কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী শিশির অধিকারী, জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন, মহকুমাশাসক সুমিত গুপ্ত। বুধবার সকালে জেলা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ বিশ্বাস ও কাঁথির সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তরুন কান্তি খাটুয়া হাসপাতালে যান। তরুনবাবু জানান, বাদলপুর থেকে যে ২৫ জন ভর্তি হয়েছেন তাঁদের মধ্যে ১২ জনের রক্তে প্রাথমিকভাবে ডেঙ্গি মিলেছে। তবে আতঙ্কের কিছু নেই। আরও বিশদ পরীক্ষার জন্য রক্তের নমুনা মেদিনীপুর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন করতে ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেনও বলেন, “জেলার বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে।” তাঁর অভিযোগ, “জেলা স্বাস্থ্য দফতর দ্রুত রক্ত পরীক্ষায় তৎপর না হওয়ায় সমস্যা বাড়ছে। আর জেলার হাসপাতালে চিকিৎসার বদলে তাঁদের কলকাতায় পাঠানোর সুপারিশ করায় কিছুটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।” এছাড়াও মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল দফতরের অনুমোদন দীর্ঘদিন আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে এবং ড্রাগ কন্ট্রোলের অনুমতি ছাড়াই রক্ত সংগ্রহ ও বিলি চলছে বলে অভিযোগ করেন মামুদ হোসেন। এর জন্য মহকুমা হাসপাতালের পূবর্তন ও বতর্মান দুই সুপারকে দায়ী করে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কাছে এক জরুরী বার্তা পাঠিয়েছেন বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তরুন কান্তি খাটুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি তিনি জানেন না। মহকুমা হাসপাতালের সুপার বলতে পারবেন। তবে মহকুমা হাসপাতালের সুপার জ্যোতিষচন্দ্র দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। |