বেহাল রাস্তায় চাষিদের কপালে চিন্তার ভাজ ফেলেছে। ধানতলার পানিখালি থেকে দলুয়াবাড়ী পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তার বেশিরভাগ জায়গা খানাখন্দে ভরে গেছে। তাই চাষিরা ফসল নিয়ে সময়মতো ধানতলা বাজারে পৌঁছতে পারছেন না। তারা উৎপন্ন ফুল ও সব্জী কমদামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। একশ্রেনীর ফড়ে এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন।
বর্ষার সময় রাস্তা দিয়ে চলা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। রাস্তার মধ্যে বড় বড় গর্তে জল জমে যায়। এরফলে দত্তপুলিয়া-সহ আশপাশের কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
দলুয়াবাড়ীর মনোরঞ্জন সরকার বলেন, “আমার ফুলের চাষ রয়েছে। রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে সময়ে বাজারে পৌঁছতে পারি না। ফলে ফড়েদের কাছে অনেক কম দামে ফুল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। ফড়েরা এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে। শতকরা কমপক্ষে ২০ টাকা কমদামে ফুল বিক্রি করতে হচ্ছে।” দলুয়াবাড়ীরই আরেক চাষি দুলাল ব্যাপারী বলেন, “ফুল ছাড়াও আমার সব্জির চাষও রয়েছে। এবার ঢ্যাড়শ ও বাধাকপির চাষ করেছি। রাস্তা চলাফেরার অযোগ্য। তাই পাঁচবেড়িয়া হাটে সব্জি নিয়ে যেতে পারি না। ফড়েদের কাছে শতকরা অন্তত ২০ টাকা কম দামে ফুল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।”
দলুয়াবাড়ী বিবেকানন্দ সার্বিক পল্লী উন্নয়ন সমিতির সদস্য পরান সরকার বলেন, “চাষিদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ ও স্কুল পড়ুয়াদেরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল ও আড়ংঘাটা ব্লক হাসপাতালে মানুষ একপ্রকার জীবন হাতে করে যান। কারণ রাস্তার অবস্থা ভীষনই খারাপ। সমস্যার কথা বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও ফল হচ্ছে না।”
রানাঘাট ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের জগদীশ মণ্ডল বলেন, “কৃষিপ্রধান এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষই চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের যাতায়াতের রাস্তাটির অবস্থা খুবই খারাপ। এরফলে চাষিদের হাটে যেতে সমস্যা হচ্ছে। আগে একবার অবশ্য রাস্তাটির সংস্কার করা হয়েছিল। মানুষের দাবি মেনে রাস্তাটি পাকা করার উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে।”
রানাঘাট ২ নম্বর ব্লকের বিডিও সচ্চীদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাস্তার হাল সত্যিই খুব খারাপ। রাস্তাটি পাকা করার অর্ডার বেরিয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।” |