কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে ফেডকাপ শুরুর আগেই খলনায়ক আবহাওয়া। গত দু’দিনের বৃষ্টিতে কাঞ্চনজঙ্ঘার মাঠ ভিজে। তাই বৃহস্পতিবার উদ্বোধনী ম্যাচের আগে কোনও দলকেই অনুশীলন করতে দেওয়া হল না। অনুশীলন ছাড়াই তাই মোহনবাগানের টোলগে, ওডাফা বা ইস্টবেঙ্গলের ওপারা, মননদীপরা ম্যাচের দিন থেকেই ওই মাঠে খেলবেন। বিষয়টি কিছুটা চিন্তায় ফেলেছে বিভিন্ন দলের কোচ, কর্মকর্তাদের।
পূর্বসূচি মেনে বুধবার সকালে এয়ার ইন্ডিয়া কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে গেলে মাঠে অনুশীলন করতে নিষেধ করা হয়। বাধ্য হয়ে মাঠের ধারে দৌড়ঝাঁপ করে গা ঘামিয়ে তাদের ফুটবলাররা ফিরে আসেন। ম্যাচ কমিশনার জে রবিশঙ্কর বলেন, “আবহাওয়া এবং মাঠের পরিস্থিতি ভেবে এ দিন কোনও দলকে সুযোগ দেওয়া হয়নি।” তিনি জানান, এমনিতেই ভেজা মাঠ। তার মধ্যে মেঘলা আকাশ। যে কোনও সময় বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। বিভিন্ন দলগুলি অনুশীলন করার পর বৃষ্টি হলে কাদা হয়ে মাঠের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ম্যাচের আগে তাই মাঠ যতটা সম্ভব প্রস্তুত রাখতেই এ দিন এই মাঠে অনুশীলন করতে দেওয়া হয়নি।
নিয়ম অনুসারে আইলিগ বা ফেডকাপের ম্যাচ যে মাঠে হবে খেলা শুরুর দুই এক দিন আগে অংশগ্রহণকারী দলগুলিকে ৪৫ মিনিট করে অনুশীলনের সুযোগ দেওয়া হয়। কেন না মাঠের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেওয়া, আলোর পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার মতো বিভিন্ন বিষয় থাকে। সে কারণে বৃহস্পতিবার যে চারটি দলের ম্যাচ কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে হওয়ার কথা তারা সকলেই এ দিন ওইন মাঠে অনুশীলনের আর্জি জানিয়েছিলেন। সেই মতো অনুশীলনের সময় দেওয়াও হয়েছিল। কিন্তু বাধ সাধে আবহাওয়া। প্র্যাকটিস না করতে দেওয়া নিয়ে সামান্য তর্কাতর্কিও হয়। বুধবার সিকিমের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টায় হালকা এবং মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে।
কাঞ্চনজঙ্ঘায় অনুশীলন করতে না পেরে কিছুটা হলেও উদ্বিগ্ন দলগুলি। এয়ার ইন্ডিয়ার কোচ গডফ্রে পেরিরা বলেন, “অনুশীলনের সুযোগ পেলে ভাল হত। ম্যাচের আগে মাঠের পরিস্থিতি ফুটবলারদের জানা জরুরি ছিল।” চার্চিলের কোচ সুভাষ ভৌমিকও জানান, ম্যাচের আগে কাঞ্চনজঙ্ঘার মাঠে অনুশীলন করাতে চেয়েছিলেন তিনি। প্রথম ম্যাচের পর মাঠে কাদা হলে ফুটবলারদের সমস্যা হতে পারে বলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশও করেন। আবহাওয়ার পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার বারবার খোঁজ খবর করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
মোহন কোচ সন্তোষ কাশ্যপ বুধবার বিকেলে রানিডাঙা এসএসবি’র মাঠে দলকে অনুশীলন করান। মোহন কোচ বলেন, “কোনও দলই যেহেতু কাঞ্চনজঙ্ঘার মাঠে অনুশীলন করতে পারেনি তাই কেউ বাড়তি সুযোগ পাবে এমন ভাবার কারণ নেই। ম্যাচ কমিশনার ম্যাচের আগে মাঠ প্রস্তুত রাখতে ভাল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কোনও একটি দলকে সুযোগ দিলে প্রশ্ন থাকতে পারত।” ইস্টবেঙ্গল কোচ মর্গ্যানও জানান, কাঞ্চনজঙ্ঘার মাঠে অনুশীলনের সুযোগ পেলে ফুটবলারদের জন্য তা ভাল হত।
শিলিগুড়িতে ফেড কাপের ম্যাচ ঘিরে উৎসাহ তুঙ্গে। উদ্যোক্তারা জানান, বৃহস্পতিবার দু’টি ম্যাচের জন্য অন্তত ১০ হাজার টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এ দিন দুপুরে শহরে পৌঁছয় ইস্টবেঙ্গল। বিমানবন্দর থেকে সমর্থকেরা বাইক র্যালি করে তাদের হোটেলে নিয়ে যান। সেখানে জলপাইগুড়ি ইস্টবেঙ্গল ফ্যান্স ক্লাবের তরফে কচিকাঁচারা লাল হলুদ ফুটবলারদের ফুলের তোড়া দিয়ে অভ্যর্থনা জানায়। |