‘হামলা’ কংগ্রেস অফিসেও |
সিপি-টিএমসিপি’র সংঘর্ষ কমার্স কলেজে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ন’টা। কিছুক্ষণ আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্র থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছেন। হঠাৎই কংগ্রেস-তৃণমূলের ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে মেদিনীপুরে। জেলা কংগ্রেসের অফিসেও ‘হামলা’ চালানোর অভিযোগ ওঠে টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে। বুধবারও দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছে। ঘটনায় আহত ৩ জন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।
আগামী ৫ অক্টোবর মেদিনীপুর কমার্স কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন। মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়ন-পর্ব। কমার্স কলেজের ছাত্র সংসদ সিপি’র দখলে ছিল। গত বছর ৩০ টি আসনের মধ্যে ২৫টিই দখল করে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন। ৩টি পেয়েছিল টিএমসিপি। ২টি এসএফআই।আসন্ন নির্বাচন ঘিরেই হাওয়া গরম হচ্ছে। সিপি’র জেলা সভাপতি মহম্মহ সইফুলের অভিযোগ, “সুমন দাস নামে আমাদের এক কর্মীকে রাতে বাড়ি ফেরার পথে ওদের (টিএমসিপি) কয়েকজন মারধর করে। এখান থেকেই ঘটনার সূত্রপাত।” টিএমসিপি’র জেলা চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ গিরি পাল্টা অভিযোগ, “শুরুতে ওদের (সিপি) কর্মীরাই নবীন ঘোষ নামে আমাদের এক কর্মীকে মারধর করেছে।” |
|
মঙ্গলবার ভাঙচুরের পর কংগ্রেস কার্যালয়। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
মঙ্গলবার রাতে মেদিনীপুর শহরের একাধিক জায়গায় মারধর-পাল্টা মারধর চলে। জখম নবীন ঘোষ, প্রসূন মাইতি ও প্রভাত পাঠককে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। প্রসূন ও প্রভাত সিপি’র কর্মী এবং নবীন টিএমসিপি করেন। এর মধ্যেই টিএমসিপি’র একদল ছেলে জেলা কংগ্রেস অফিসে গিয়ে ‘হামলা’ করেন বলে অভিযোগ। কংগ্রেসের অফিসের বাইরে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয়। অফিস লক্ষ করে ছোড়া হয় ইট। খবর পেয়ে যায় পুলিশ। টিএমসিপি’র জেলা চেয়ারম্যান যদিও বলেন, “আমাদের কেউ কংগ্রেস অফিসে যায়নি। ওদের (সিপি) কর্মীরাই চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে আমাদের নামে মিথ্যে অভিযোগ করেছে।” গত বছরও মেদিনীপুর কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে জেলা কংগ্রেস অফিসে ‘হামলা’ চালানো হয়েছিল। জেলা কংগ্রেস সভাপতি স্বপন দুবে বলেন, “ছাত্রদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। কিন্তু কেউ দলীয় কার্যালয়ে কেন আসবেন? এমন ঘটনা কাঙ্খিত নয়।” ঘটনায় টিএমসিপি’র কেউ যুক্ত থাকলে উপযুক্ত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ। |
|
বুধবার কমার্স কলেজের গেটে উত্তেজনা। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
বুধবার ছিল কমার্স কলেজের মনোনয়নপত্র তোলার শেষ দিন। সকাল থেকেই উত্তেজনা ছিল। একদফা সংঘর্ষও হয়েছে। মিছিল হয়েছে। পুলিশ লাঠিচার্জও করে। টিএমসিপি’র শহর সভাপতি বুদ্ধ মণ্ডল বলেন, “পুলিশের লাঠির ঘায়ে আমাদের দু’জন কর্মী জখম হয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিকই ছিল। আচমকাই লাঠিচার্জ করা হয়।” অন্য দিকে, ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “একটা ঘটনা ঘটেছে। দু’পক্ষই অভিযোগ করেছে। মামলা রুজু হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপই করা হবে।” |
|