|
|
|
|
কংগ্রেস-বিরোধিতায় বিজেপি-র নতুন অস্ত্র মমতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
বিজেপি-র হাতে কংগ্রেসকে আরও কোণঠাসা করতে নতুন অস্ত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনডিএ শিবিরের বিস্তার বাড়ানোর কাজেও এই অস্ত্রকে কাজে লাগাতে চাইছে তারা। তবে সতর্ক হয়েই এগোতে হচ্ছে তাদের। যাতে কংগ্রেস-বিরোধিতার রাশ তাদের হতছাড়া না হয়।
মমতা ইউপিএ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন, কিন্তু এখনও তা করেননি। ইউপিএ ছাড়লেই যে তিনি এনডিএ-তে যোগ দেবেন এমন আশাও নেই। খুচরো ব্যবসায় বিদেশি পুঁজি, ডিজেলের দাম ও রান্না গ্যাসে ভর্তুকির প্রশ্নে মমতা চরম অবস্থান নেওয়ায় কংগ্রেস-বিরোধী শক্তি আরও মজবুত হবে বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা একজোট হয়ে কংগ্রেস-বিরোধী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছেন। নজর রয়েছে এনডিএ-কে প্রসারিত করার দিকেও। কাল ভারত-বন্ধের মধ্য দিয়েই তার মহড়া শুরু করে দেবেন বিজেপি নেতৃত্ব। কারণ, ইউপিএ-র শরিক ও সহযোগী করুণানিধি ও মুলায়ম সিংহ যাদবও এই বন্ধে সামিল হচ্ছেন।
বিজেপি-র এক শীর্ষ নেতা আজ বলেন, “এত দিন বিজেপি-র যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিতে পাল্টা যুক্তি সাজিয়েছে কংগ্রেস। মমতার গর্জনের পর সে সব যুক্তি খাটবে না। মমতাকে কেন ইউপিএ ছাড়ার কথা ঘোষণা করতে হল, সেটিও প্রচার করা হবে। কংগ্রেসের সঙ্গে মমতার সংঘাত যে চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে ইউপিএ সরকারের পতনের দিন শুরু হয়েছে।”
বিজেপি জানে, মমতাকে শেষ পর্যন্ত জোটে রাখতে না পারলেও মনমোহন সরকার মুলায়ম-মায়াবতীকে দিয়ে গরিষ্ঠতা প্রমাণ করিয়ে নেবে। বিজেপি তাই অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা ভাবছে না। লালকৃষ্ণ আডবাণী শুধু খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি নিয়ে বিশেষ অধিবেশন ডাকার প্রস্তাব দিয়েছেন। এই একটি প্রশ্নে সরকারের পক্ষে সমর্থনের থেকে বিরোধিতা বেশি।
কিন্তু মমতা-অস্ত্রে পুরো ভরসা রাখার ক্ষেত্রে কিছু আশঙ্কাও রয়েছে বিজেপির।
• মমতার গত কালের ঘোষণা তাদের কিছুটা অক্সিজেন জুগিয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস দুর্বল হলেই যে বিজেপি-র শক্তি বাড়ছে, এমনটা নয়।
• আর্থিক সংস্কারের বিষয়গুলিতে উগ্র-বিরোধিতার কারণে মমতা কার্যত এখন ‘হিরো’। এখন মমতা-মুলায়ম-নবীন-নীতীশদের মতো ব্যক্তিরা জোট বেধে নতুন শক্তি গড়ে তুললে তাতে কংগ্রেস-বিরোধিতার রাশ বিজেপি-র হাত থেকে চলে যেতে পারে।
• অশান্তি রয়েছে এনডিএ-তেও। আজও নীতীশ কুমার কংগ্রেসকে বার্তা দিয়ে বলেছেন, বিহারের জন্য যে প্যাকেজ দেবে, তাদেরই সমর্থন করবে জেডিইইউ।
• বর্তমান ডামাডোলে টুজি বা কয়লা কেলেঙ্কারির মতো বিষয়গুলিও যাতে হারিয়ে না যায়, সে দিকেও লক্ষ্য রাখতে হচ্ছে বিজেপি-কে।
সতর্ক বিজেপি তাই নিজেদের তোলা দাবি ও অভিযোগগুলি নিয়ে নিজেদের মতো করে সরব থাকতে চাইছে। প্রকাশ জাভড়েকর আজ বলেছেন, “আমরা চারটি বিষয়ই প্রত্যাহারের দাবি তুলছি বন্টন করা কয়লা খনির ব্লক, খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি, ডিজেলের দাম বাড়ানো ও রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি কমানোর সিদ্ধান্ত। আন্দোলনের মাধ্যমে চারটিই প্রত্যাহার করাতে বাধ্য করব আমরা।” কংগ্রেস-বিরোধী আন্দোলনের রাশ নিজেদের হাতে রাখতে অ-কংগ্রেসি রাজ্যগুলির হয়েও প্রচারে নামছে বিজেপি। কংগ্রেস তাদের শাসিত রাজ্যগুলির উপরে গ্যাসের বাড়তি দামের বোঝা কমানোর দায় চাপিয়েছে। এতে অ-কংগ্রেসি রাজ্যগুলি চাপে পড়বে। অ-কংগ্রেসি দলগুলির সমীহ আদায় করতে এরও বিরোধিতা করেছে বিজেপি। বিজেপি-র এক নেতার কথায়, “লোকসভা ভোট যদি নির্ধারিত সময়েও হয়, তত দিনে ধাপে ধাপে কংগ্রেসকে ধরাশায়ী করাই আমাদের কৌশল।” |
|
|
|
|
|