কুবের উবাচ |
সুদীপ্ত সরকার (৩২) • স্ত্রী-তমালিকা (২৭)
ছেলে-মেয়ে এখনও নেই • বাবা-মা অবসর নিলেও নির্ভরশীল নন
• বাড়ি থাকায় ছাদ জোগাড়ের চিন্তা নেই • ইচ্ছে গাড়ি কেনা আর ফ্ল্যাটে লগ্নির |
|
সুদীপ্ত
মাস-মাইনে—৩০,০০০ |
তমালিকা
মাস-মাইনে—২৫,০০০ |
টাকা রাখেন (বছরে) |
টাকা রাখেন (বছরে) |
• অফিসের পিএফ
৪২,০০০ |
• অফিসের পিএফ
৪৮,০০০ |
• এলআইসি পেনশন প্রকল্প:
১২,৫০০
বিমা মূল্য ২.৮ লক্ষ
পেনশন পাবেন বছরে ৫০ হাজার |
• এলআইসি পেনশন প্রকল্প:
১২,০০০
বিমার মূল্য ২.৭ লক্ষ
পেনশন পাবেন বছরে ৫৬ হাজার |
• এলআইসি এনডাওমেন্ট:
৩০,০০০
বিমার মূল্য ৫.৯৬ লক্ষ |
• জীবন বিমা:
৭,০০০
বিমার মূল্য ২.৩ লক্ষ |
• সম্মিলিত স্বাস্থ্য বিমা:
৯,০০০
বিমার মূল্য ৫ লক্ষ |
• পিপিএফ:
৩০,০০০ |
• স্থায়ী আমানত:
১০,০০০ |
|
• পরিকাঠামো বন্ড
১৫,০০০ |
|
• পিপিএফ
১৫,০০০ |
|
• মিউচুয়াল ফান্ড
১৮,০০০
প্রতি মাসে দেন ১,৫০০ টাকা |
|
|
|
 |
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
শৈবাল বিশ্বাস |
|
সরকার দম্পতির দু’জনেই চাকরি করেন। বাবা-মা অবসর নিলেও নির্ভরশীল নন। তাই সেই অর্থে তেমন দায়-দায়িত্ব নেই। সুতরাং ভবিষ্যতের জন্য লগ্নি করার এটাই সঠিক সময়। |
সঞ্চয় বাড়াতে কমাতে হবে খরচ: ধরে নেওয়া যাক, প্রতি মাসে তাঁদের নিট আয়= মাসিক খরচ+জমা। সে হিসেবে দেখতে গেলে খরচের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। আয়ের প্রায় ৭০%। তাই অপ্রয়োজনীয় খরচ ছেঁটে ফেলতে প্রথমেই একটি চার্ট তৈরি করে নেওয়া জরুরি। সেখানে মূল খরচগুলি পর পর লিখে ফেলা যেতে পারে। যেমন, সংসার চালানো, যাতায়াত খরচ, ফোন বিল ইত্যাদি। দীর্ঘ মেয়াদি বিমার মতো যে-সব লগ্নি ইতিমধ্যেই করে ফেলা হয়েছে, তা-ও লিখে রাখতে পারেন একই সঙ্গে। পুরোটা লিখে ফেলার পর মাসিক আয়ের সঙ্গে তুলনা করলে বোঝা যাবে, কতটা সঞ্চয় করা সম্ভব। কোন কোন খাতে খরচ কমাতে হবে, তা-ও স্পষ্ট হবে এখান থেকে। |
 |
বিমায় লগ্নি যথেষ্ট নয়: দু’জনেরই বিমায় লগ্নি আয়ের তুলনায় কম। বিমায় বিনিয়োগের আগে তার মূল উদ্দেশ্য মাথায় রাখা জরুরি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জীবন বিমায় লগ্নি করা হয় কোনও আকস্মিক দুর্ঘটনার কথা ভেবে। যাতে তার পরেও পরিবার অকূলে না-পড়ে। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে, সুদীপ্তর মোট বিমা ৮.৭৬ লক্ষ টাকা। আর তাঁর স্ত্রীর ৫ লক্ষ। টাকার দাম যে-ভাবে কমছে, তাতে এই লগ্নি কিন্তু ভবিষ্যতে কোনও দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে পরিবারকে খুব সুরক্ষা দিতে পারবে না।
তাই আমার মতে, ওঁদের দু’জনেরই উচিত একটি করে মেয়াদি জীবন বিমা প্রকল্পে (টার্ম পলিসি) লগ্নি করা উচিত। যেখানে প্রিমিয়ামের অঙ্ক খুব বেশি নয়। কিন্তু টাকা পাওয়া যাবে একমাত্র গ্রাহকের মৃত্যুর পরেই।
মেয়াদ শেষে মোটা টাকা পাওয়ার কথা মাথায় রেখে বিমা করলে, হয় প্রিমিয়ামের অঙ্ক বাড়বে, নইলে কমবে ‘কভারেজ’। তার থেকে বরং কম প্রিমিয়ামের মেয়াদি প্রকল্পে লগ্নি করা ভাল। হয়তো মেয়াদ শেষে এখানে এমনিতে কিছু পাওয়া যাবে না। কিন্তু তেমনই প্রিমিয়াম বাবদ যে-টাকা বাঁচবে, তা রাখা যাবে অন্য কোথাও, যেখানে রিটার্ন চড়া। তা ছাড়া, এখন থেকে সারা জীবন অল্প অল্প করে সঞ্চয় করলেই ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব চিন্তিত হতে হবে না।
|
অবসর প্রকল্প: দু’জনেরই অবসর প্রকল্পে লগ্নি মোটামুটি ঠিকই রয়েছে। বলা যায় বেশ ভাল। পেনশন প্রকল্প ও প্রফিডেন্ট ফান্ড মিলে ভবিষ্যতে ভাল রিটার্ন পাওয়া যাবে। যা ওঁদের অবসরকালীন প্রয়োজন মেটাতে পারে। তবে প্রতিদিন খরচ যে-ভাবে বাড়ছে, তাতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লগ্নি বাড়িয়েই যেতে হবে পেনশন প্রকল্পে।
|
অবসর প্রকল্প: দু’জনেরই অবসর প্রকল্পে লগ্নি মোটামুটি ঠিকই রয়েছে। বলা যায় বেশ ভাল। পেনশন প্রকল্প ও প্রফিডেন্ট ফান্ড মিলে ভবিষ্যতে ভাল রিটার্ন পাওয়া যাবে। যা ওঁদের অবসরকালীন প্রয়োজন মেটাতে পারে। তবে প্রতিদিন খরচ যে-ভাবে বাড়ছে, তাতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লগ্নি বাড়িয়েই যেতে হবে পেনশন প্রকল্পে।
|
স্বাস্থ্য বিমা: চিকিৎসার খরচ এখন আকাশছোঁয়া। তাই সে কথা মাথায় রেখে স্বাস্থ্য বিমার অঙ্ক ক্রমাগত বাড়িয়ে যেতে হবে। তবে তা যতটা সম্ভব বাড়িয়ে নিতে হবে বয়স কম থাকতেই। কারণ, বয়স বাড়লেই পাল্লা দিয়ে বাড়বে প্রিমিয়ামের অঙ্কও।
|
পিপিএফ: সকলকেই পাবলিক প্রফিডেন্ট ফান্ড (পিপিএফ) অ্যাকাউন্ট খুলতে বলি আমি। কারণ, এতে টাকা রাখা ও তোলা দু’ক্ষেত্রেই করছাড় মেলে। নিয়ম করে ঠিক ভাবে টাকা রাখলে, মেয়াদ শেষে পাওয়া যায় একটি বড় অঙ্কের রিটার্নও। আমার মতে, এই খাতে আরও বেশি টাকা রাখা উচিত সরকার দম্পতির।
|
শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড: সুদীপ্তর বয়স ৩২। আমার মতে তাঁর ঋণপত্র ও শেয়ারে লগ্নি হওয়া উচিত যথাক্রমে ৩২% ও ৬৮%। তাঁর স্ত্রীর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
তবে এটি নির্ভর করে ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতার উপর। এঁদের যেমন প্রতি মাসে মাত্র ১,৫০০ টাকা মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি করা রয়েছে। এ ভাবে এসআইপি-র মাধ্যমে লগ্নি খুব ভাল। কিন্তু ভবিষ্যতে এই খাতে আরও টাকা রাখতে হবে। এইচডিএফসি-র ফান্ডটি ভাল হলেও, আগামী দিনে ফান্ড বাছতে হবে কোনও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে।
মূল্যবৃদ্ধির কথা মাথায় রেখেই বলব শুধু রিটার্ন দেখলে হবে না। বরং দেখতে হবে তা থেকে মূল্যবৃদ্ধি আর কর বাদ দিয়ে নিট কত হাতে পাওয়া যাবে। শেয়ারে দীর্ঘমেয়াদি লগ্নি ভাল রিটার্ন দেয়। মেলে কর ছাড়ও। যা থেকে আগামী দিনের প্রয়োজন মিটতে পারে।
|
সুদীপ্তর মতো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ পেতে পারেন আপনিও। চিঠি লিখুন এই বিভাগে। |
|
|