মহিলাদের নিরাপত্তা বাড়াতে সিসিটিভি বসাতে চায় পুলিশ
দুই ছাত্রীর প্রাণ যাওয়ার পরে ঘুম ভাঙল পুলিশ-প্রশাসনের।
স্কুলছাত্রীদের নিরাপত্তা বাড়ানো এবং ইভটিজিং রুখতে নানা পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই সব পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এলাকাভিত্তিক বৈঠকও শুরু হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
সম্প্রতি বার্নপুরে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে যায় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী পুষ্পা ঠাকুর। পর দিন স্কুলের পিছনের দিকে একটি নর্দমা থেকে উদ্ধার হয় তার দেহ। এর দিন কয়েক পরেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর। ইভটিজিং সহ্য করতে না পেরেই সে আত্মঘাতী হয় বলে বাড়ির লোকজনের অভিযোগ। এই দু’টি ঘটনার পরেই বার্নপুর-সহ শিল্পাঞ্চলের সর্বত্র স্কুলছাত্রীদের নিরাপত্তা চেয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকেরা নানা থানায় আর্জি জানান। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে পুলিশ কিছুটা টহলদারি বাড়ালেও বেশ কয়েক বার ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।
আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (পশ্চিম) সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় জানান, প্রতিটি স্কুল, বিশেষ করে প্রাথমিক স্কুলগুলিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের পরিচয়পত্র অবশ্যই গলায় ঝুলিয়ে দিতে হবে। স্কুলে এক জন করে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করতে হবে। যদি কোনও দিন নির্দিষ্ট সময়ের আগে স্কুলে ছুটি দেওয়া হয়, তা অভিভাবকদের আগাম জানাতে হবে। স্কুলের চারদিকে উঁচু পাঁচিল দিতে হবে। স্কুলগুলির তরফে পুলিশের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, শহরের অপেক্ষাকৃত নির্জন এলাকা ও কুখ্যাত অঞ্চলগুলি চিহ্নিত করে পুলিশি টহলদারি বাড়াক। শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে পুলিশের জরুরি ফোন নম্বর জানিয়ে ব্যানার, পোস্টার দেওয়া হোক। এডিসিপি (পশ্চিম) বলেন, “শহরের সব ক’টি বালিকা বিদ্যালয়ে পুলিশ পোস্টিং করার মতো পর্যাপ্ত কর্মী নেই। এই অবস্থায় যৌথ ভাবে কাজ করলে প্রতিরোধ অনেক সহজ হবে।” বার্নপুরের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিবেদিতা আচার্য বলেন, “পুলিশের দেওয়া প্রস্তাবগুলি পরিচালন সমিতির সঙ্গে আলোচনার পরে কার্যকরের ব্যবস্থা হবে।”
ছাত্রীদের নিরাপত্তার পাশাপাশি মহিলাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ রুখতে শহরের অপেক্ষাকৃত নির্জন এলাকায় নজরদারিরও ব্যবস্থা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। সম্প্রতি দুর্গাপুরে এক তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তার পরেই আসানসোলে বাড়তি নজরদারি শুরু করে পুলিশ। এডিসিপি (সদর) সুরেশ কুমার জানান, বেশ কয়েকটি অঞ্চল চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে টহলদার গাড়ির পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশও ঘুরে বেড়াবে। সুরেশ কুমার জানান, শহরের বালিকা বিদ্যালয়গুলির আশপাশে সিসিটিভি বসানোর জন্য আসানসোল দক্ষিণ থানাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যে সব অঞ্চলগুলিতে ইভটিজিং-এর ঘটনা বেশি ঘটে, সেখানেও সিসিটিভি-র ব্যবস্থা হয়েছে।
শহরে অপরাধ রুখতে এর আগেও পুলিশের তরফে বেশ কিছু উদ্যোগ হয়েছে। কিন্তু অল্প কিছু দিনের মধ্যে সে সবে মরচে পড়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। তাই এ বার ছাত্রী ও মহিলাদের নিরাপত্তায় পুলিশের এই তৎপরতা আদৌ স্থায়ী হয় কি না, সে নিয়ে সংশয়ে শিল্পাঞ্চলবাসী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.