ডেঙ্গি-নির্ণয়ে পরিকাঠামো নেই রায়গঞ্জে
দু’দশক আগে মহকুমা হাসপাতাল থেকে জেলা হাসপাতালে উন্নীত হলেও রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গি নির্ণয়ের পরিকাঠামো গড়ে ওঠে নি। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে কিট পাঠানো হয় না বলেই ডেঙ্গি রোগ নির্ণয়ের কোনও সরকারি ব্যবস্থা নেই। ফলত, প্রতিদিনই ডেঙ্গি আক্রান্ত সন্দেহে বহু রোগীকে বাইরের বিভিন্ন বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল কেন্দ্র থেকে রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা করার পরামর্শ দিতে বাধ্য হচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বেসরকারি কেন্দ্রে ডেঙ্গি নিণর্র্য়ের পরীক্ষা যথেষ্ট ব্যয়বহুল। সে কারণে বহু দুঃস্থ রোগী বেসরকারি কেন্দ্রে পরীক্ষা করাতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা জেলা কংগ্রেস নেতা মোক্তার আলি সর্দার। তিনি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গি নির্ণয়ের পরীক্ষা চালু করার দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি, হাসপাতালের প্যাথলজিক্যাল বিভাগের তরফেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ডেঙ্গি নির্ণয়ের কিট সরবরাহ করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। হাসপাতালের সুপার অরবিন্দ তান্ত্রি বলেন, “রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ডেঙ্গি নির্ণয়ের কিট সরবরাহ না করাতে হাসপাতালে ডেঙ্গি নির্ণয়ের পরীক্ষা চালু করা সম্ভব হয়নি। সমস্যার কথা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যেই কিট সরবরাহ করা হবে বলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর আমাদের জানিয়েছে। কিট হাতে পেলেই হাসপাতালে ডেঙ্গি রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব হবে।” বাইরের বিভিন্ন বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল কেন্দ্র থেকে ডেঙ্গি নির্ণয়ের পরীক্ষা করাতে রোগীদের ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা করে দিতে হয় বলে জানা গিয়েছে। টাকার অভাবে বহু দুঃস্থ রোগী ডেঙ্গি নির্ণয়ের পরীক্ষা করাতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত একমাসে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১২৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সুস্থ হওয়ার পর তাঁদের অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে গড়ে ৪ জন করে রোগী জ্বর নিয়ে ভর্তি হন। গত একমাসে ডেঙ্গির লক্ষ্মণ নিয়ে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রায় ৪৫ জন রোগীকে বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল কেন্দ্র থেকে ডেঙ্গি নির্ণয়ের পরীক্ষা করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন হাসপাতাল কতৃপক্ষ। যদিও কারও রক্তেই ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েনি বলে জানা গিয়েছে। হাসপাতাল সুপার বলেন, “জ্বরে আক্রান্ত হলেই যে রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলবে তা বলা যায় না। সাধারণত, তিন দিন পরেও যদি জ্বর না কমে সেই সঙ্গে রোগীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা, রক্তক্ষরণ এবং চর্মরোগ দেখা দেয় তবেই ওই রোগীর ডেঙ্গি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিলেই রোগীকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল কেন্দ্র থেকে ডেঙ্গি নির্ণয়ের পরীক্ষা করার কথা বলা হয়।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোক্তার আলি সর্দার বলেন, “১৯৯২ সালে পশ্চিম দিনাজপুর জেলা ভেঙে উত্তর দিনাজপুর জেলা গঠন হয়। সেইসময় রায়গঞ্জ মহকুমা হাসপাতাল জেলা হাসপাতালে উন্নীত হয়। কিন্তু পূর্বতন ও বর্তমান উভয় রাজ্য সরকারের গাফিলতির জেরেই ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গি নির্ণয়ের পরীক্ষা চালু হয়নি। আমি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের চিঠি পাঠিয়ে হাসপাতালে কিট সরবরাহের দাবি জানিয়েছি। ওই কিট হাতে না পেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে ডেঙ্গি রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা চালু করবেন কী ভাবে?” এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের ল্যাবরেটরি মেডিক্যাল টেকনলোজিস্ট হিরন্ময় দত্তচৌধুরী বলেন, “হাসপাতালের প্যাথলজিক্যাল বিভাগে ৫০ রকমেরও বেশি পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু কিট না থাকায় আমরা এখনও ডেঙ্গি রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা চালু করতে পারি নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কিট সরবরাহ করার আর্জি জানানো হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.