চিকিৎসকের অভাবে ধুঁকছে কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতাল
চিকিৎসকের অভাবে ধুঁকছে কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতাল। চিকিৎসকের অভাবে বন্ধই হয়ে রয়েছে চর্ম বিভাগ। সরকারি নির্দেশিকা মতো এই বিভাগে এক জন চিকিৎসক থাকার কথা, কিন্তু বছরখানেক হল কেউ নেই। অস্থি বিভাগে ও অবস্থা প্রায় একই রকম। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী অন্তত দু’জন চিকিৎসক থাকার কথা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবশ্য বক্তব্য, জেলা হাসপাতালে যে পরিমাণ রোগীর চাপ তাতে অন্তত তিন জন চিকিৎসকের দরকার। কিন্তু ৭ অগস্ট থেকে মাত্র এক জন চিকিৎসক বিভাগটি কোনওমতে চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্য চিকিৎসক ছুটিতে। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, তাই ওই এক জন চিকিৎসকই একই সঙ্গে সোম, মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার হাসপাতালে থাকেন। ওই চারদিন তিনি বহির্বিভাগ থেকে শুরু করে সব রকম দায়িত্ব পালন করেন। তবে সপ্তাহের বাকি তিন দিন ওই বিভাগের কোনও চিকিৎসকই হাসপাতালে থাকেন না। ওই তিন দিন অন্য চিকিৎসকদের জরুরি বিভাগ থেকে সুরু করে সব দায়িত্ব পালন করতে হয়। অভিযোগ, এই সময়ের মধ্যে অস্থি বিভাগে কোনও কোনও রোগীকে কলকাতায় ‘রেফার’ করে দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
হাসপাতাল ও জনস্বার্থ রক্ষা কমিটির জেলা সম্পাদক দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “এত বড় হাসপাতালে অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ এক জন। তাই বেশিরভাগ রোগীকেই কলকাতায় রেফার করে দেওয়া হচ্ছে। আমরা বুঝতে পারছি, এক জন চিকিৎসকের পক্ষে এত রোগী সামলানো শক্ত। তাই বাধ্য হয়েই রেফার করে দিতে হচ্ছে। কিন্তু তাতে গরিব রোগীর পরিবারের উপরে কী চাপ পড়ছে, তা কি কেউ বুঝতে পারছেন? কলকাতা গিয়ে চিকিৎসা করানোটা তাঁদের পক্ষে খুবই কষ্টসাধ্য।” তাঁর কথায়, “আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেছি বিভিন্ন বিভাগে চিকিৎসক বাড়াতে। কিন্তু সে কথায় কেউ কান দিচ্ছেন না। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে।”
জেলা হাসপাতালের দু’টি ক্যাম্পাস। শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল ও জেলা সদর হাসপাতালের মধ্যে প্রায় তিন কিলোমিটারের দূরত্ব। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী এই হাসপাতালে চার জন অ্যানাসথেটিস্ট থাকার কথা। চার জনই রয়েছেন। কিন্তু দু’টি ক্যাম্পাসে ভাগ করে কাজ চালাতে হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, দু’জন অ্যানাসথেটিস্টের পক্ষে বছরের ৩৬৫ দিন দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়।
শুধু তাই নয়। কোন বিভাগে ন্যূনতম কত জন চিকিৎসক থাকবেন, সেই সরকারি নির্দেশিকাটি তৈরি ১৯৯১ সালে। তারপরে পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রোগীর চাপ কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। তাই হাসপাতাল তবে চার জন শল্য চিকিৎসক থাকার কথা, চার জনেই রয়েছেন, তবু সমস্যা কাটছে না। যেমন ইএনটি, চোখ ও মনোরোগ বিভাগে দু’জন করে চিকিৎসক থাকার কথা, দু’জন করেই রয়েওছেন। কিন্তু তাতে রোগীর চাপ সামলানো যাচ্ছে না। বিশেষ করে জরুরি বিভাগ চালিয়ে নিয়ে যেতে হিমসিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একুশ বছর আগের ওই সরকারি নির্দেশিকা মতো হাসপাতালে ১৫ জন জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসার থাকার কথা। অথচ রয়েছেন মাত্র ৬ জন। তার উপরে দু’টি ক্যাম্পাসে দু’টি জরুরি বিভাগ। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে দিনে তিনটি শিফট। জেলা সদর হাসপাতালে দিনে চারটি শিফট। প্রতিটি শিফটে দু’জন করে চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু চিকিৎসকের অভাবে তা থাকে না। জুরি বিভাগে কর্মরত এক চিকিৎসকের কথায়, “প্রায়ই এমন হয় যে, জরুরি বিভাগে একাধিক মুমূর্ষু রোগী রয়েছে। আবার ইন্ডোর থেকে চিকিৎসাধীন কোনও রোগীর কাছ থেকেও ডাক আসছে। কোন দিকে যাব বলতে পারেন?” এই হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার দেবব্রত দত্ত বলেন, “বিভিন্ন বিভাগেই চিকিৎসক কম। আমরা সেটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আসা করচি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.