ত্রাণের জন্য বরাদ্দ চাল, ডাল, চিড়ে, বিস্কিট, গুঁড়ো দুধের মতো বাচ্চাদের খাবার শিলিগুড়ি পুরসভার করিডরে দু’ মাস ধরে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘ ২ মাস ধরে অযত্নে পড়ে থাকায় চালের বস্তা কেটে দিয়েছে ইঁদুর। বস্তার চাল গড়িয়ে পড়ছে করিডরের নোংরা মেঝেতে। কখনও জল ঢেলে করিডর পরিষ্কার করার সময় ভিজছে চাল, চিড়ের বস্তা। অনেকে পানের পিক ফেলছেন সে সব চাল, ডালের বস্তার উপরে। গত শনিবার মহানন্দার জল বেড়ে নদী লাগোয়া বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কায় ফের নতুন করে মহকুমাশাসকের দফতরে ত্রাণ চেয়ে পাঠিয়েছেন পুর কমিশনার প্রভুদত্ত ডেভিড প্রধান। অথচ ২ মাস আগে শহরে জলবন্দি এলাকার বাসিন্দাদের জন্য সরবরাহ করা ত্রাণ পড়ে রয়েছে করিডরে। বিলি না করে ফের কেন ত্রাণ চাওয়া হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ২ মাস আগে মহকুমাশাসকের দফতর থেকে দেওয়া যে ত্রাণ বেঁচে গিয়েছিল তা এ ভাবে করিডরে ফেলে রাখা নিয়েও পুরসভার কর্মী-আধিকারিকদের একাংশ ক্ষুব্ধ। পুর কমিশনার প্রভুদত্ত ডেভিড প্রধান বলেন, “নদীর জল বাড়ছে দেখে আগাম প্রস্তুতি নিতেই প্রশাসনের কাছে ত্রাণ চাওয়া হয়েছে। তবে প্রয়োজন হলে তবেই তা নেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। রবিবার মহানন্দার জল নেমে গিয়েছে দেখে ত্রাণ নেওয়া হয়নি। আগের পড়ে থাকা চাল, ডাল, চিড়ে ওই সমস্ত সামগ্রী প্রতিবন্ধীদের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে।” পুরসভার চেয়ারম্যান নান্টু পাল বলেন, “জিনিস নষ্ট করা ঠিক নয়। পুর কমিশনারকে ব্যবস্থা নিতে বলব।” মহকুমাশাসকের দফতর থেকে জানানো হয়েছে, গত শনিবার পুরসভার তরফে প্রায় ৫ কুইন্টাল চিড়ে, গুড় ত্রাণ হিসাবে চাওয়া হয়েছে। অথচ পুরসভায় চিড়ে, গুঁড়ো দুধ, বিস্কিট, চাল, ডাল পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে এটা কাম্য নয়। তাঁরাও বিষয়টি দেখছেন। পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, করিডরে পড়ে থাকা সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ৫০ কিলোগ্রামের ৫ বস্তা এবং ২৫ কিলোগ্রামের ৮ বস্তা চাল। ৫০ কিলোগ্রামের ৪ টি ডালের বস্তা। অন্তত ১ কুইন্টাল চিড়ে, ৪ কার্টুন বিস্কিট এবং গুঁড়ো দুধ। সম্প্রতি পুরসভার বৈঠকেও কংগ্রেসের কাউন্সিলরদের কয়েকজন এ ব্যাপারে প্রশ্ন তোলেন। পড়ে থাকা চিড়ে কালো হয়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলেও অনেকে অভিযোগ জানিয়েছেন। এ সব চিড়ে, দুধ খেলে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। গত জুলাই মাসের মাঝামাঝি নদীর জল বেড়ে শহরের বিভিন্ন এলাকা জলবন্দি হয়ে পড়লে অনেকে ত্রাণ চেয়েও পর্যাপ্ত সামগ্রী পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে। পুরসভার বিরোধী দলনেতা মুন্সি নুরুল ইসলাম বলেন, “ত্রাণের জন্য আনা খাবারের জিনিস এ ভাবে নষ্ট করা ঠিক নয়। আগেও পুর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ফেলে না রেখে কর্তৃপক্ষ গরিব বাসিন্দাদের মধ্যে বিলি করতেও পারতেন। অথচ কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা গুরুত্বই দেননি।” |