খোঁজ নিয়ে দেখছে প্রশাসন
বাস ধর্মঘটে বিপাকে যাত্রীরা
নিজেদের অবস্থানেই অনড় থাকলেন নদিয়ার বাস মালিকরা। সাধারণ মানুষকে চরম হয়রানি করে নিজেদের দাবি আদায় করার জন্য শনিবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য জেলার প্রতিটি রুটে বাস চলাচল অনির্দষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেয় নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতি। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং বাস ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুক্রবার সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলার বিভিন্ন রুটের বাস মালিকদের নিয়ে কৃষ্ণনগরে জরুরী বৈঠকে বসেন সংগঠনের কর্তারা। সর্বসম্মতিক্রমে তারা অনির্দিষ্ট কালের জন্য বাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। জেলার ১০৭টি রুটে প্রায় বারশো বাস চলে। শনিবার ভোর থেকে প্রতিটি রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম হয়রানির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে শুধু জেলার মানুষরা নন, যারা দূরদুরান্ত থেকে এসে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার চেষ্টা করছেন সবচাইতে নাজেহাল হতে হচ্ছে তাদেরকে। কারণ পরিবহনের জন্য বিকল্প কোনও পথ নেই তাদের কাছে। জেলা শাসক অভিনব চন্দ্রা বলেন, “বাস মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। বাস চলাচল স্বাভাবিক হওয়ারই কথা। আমাকে সেই মতই জানানো হয়েছে। তবে বাস্তবে কি ঘটছে তা আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
আর এরই সুযোগ নিয়ে ময়দানে নেমে পড়েছে ছোট ছোট পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী গাড়ি। রমরমিয়ে চলছে যন্ত্রচালিত ভ্যান। প্রায় তিন থেকে চারগুন বেশি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে করতে হচ্ছে মানুষকে। কৃষ্ণনগর থেকে করিমপুরের বাস ভাড়া ৩৮ টাকা। কিন্তু শনিবার থেকে করিমপুর পর্যন্ত ১০০ থেকে ১২০ টাকা ভাড়া নিয়ে যাত্রী বহন করছে ওই সব ছোট ছোট গাড়িগুলি। ছাদবিহীন গাড়িগুলিতে বৃষ্টি মাথায় এক প্রকার বাদুর ঝোলা হয়ে ভিজতে ভিজতে দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। কৃষ্ণনগর থেকে করিমপুরের দূরত্ব প্রায় ৮০ কিলোমিটার। আর রেলপথ না থাকায় বাসই একমাত্র যাত্রী পরিবহনের উপায়। এই রুটের বাসের উপর দুটি ব্লকের মানুষ নির্ভরশীল। তবে এই বিরাট এলাকার মানুষের সমস্যার কথা মাথায় রেখে জেলা প্রশাসনের অনুরোধে রবিবার সকাল থেকে ৫টির মত লাক্সারি বাস যাতায়াত করছে বলে বাস মালিক সমিতি সূত্রে জানান হয়েছে। কিন্তু তাতে পরিস্থিতির বিশেষ কোনও পরিবর্তন হয়নি। সংগঠনের কার্যকরী সমিতির সদস্য অসীম দত্ত বলেন, “তিন বছরে ৬ বার ডিজেলের দাম বেড়েছে। কিন্তু বাস ভাড়া বাড়েনি। এ বার প্রায় ৬ টাকা ডিজেলের দাম বেড়েছে। এবারও যদি ভাড়া না বাড়ে তাহলে আমাদের পক্ষে বাস চালানো কোনভাবেই সম্ভব নয়।” তিনি বলেন, “প্রশাসনের অনুরোধে রবিবার সকাল থেকে করিমপুর রুটে ৫টি বাস চালানো হচ্ছে। তাছাড়া এদিনও কোন রুটে বাস চলেনি। তবে বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য কোন কোন বাস মালিকেরা বাড়ি যাওয়ার পথে কিছু কিছু যাত্রী তুলেছে।” নদিয়া জেলা নিত্য বাস যাত্রী সমিতির সভাপতি রাহুল মুখোপাধ্যায় বলেন, “দু’দিন ধরে জেলার সমস্ত রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় মানুষকে চরম নাজেহাল হতে হচ্ছে। শনি ও রবিবার ছুটির দিন। কিন্তু সোমবারও যদি একইভাবে বাস বন্ধ থাকে তাহলে স্কুল-কলেজ, অফিস কাছারি খোলা রাখাই কঠিন হয়ে পড়বে।” তিনি বলেন, “তবে এটাও ঠিক যে বাস মালিকরাও অসহায়। কারণ যে ভাবে ডিজেল পেট্রোলের দাম বেড়েছে সেই হারে বাস ভাড়া বাড়েনি। পরিবহণ মাধ্যমের মালিকদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। পাশাপাশি এটাও দেখতে হবে যাতে এমন ভাড়া না বাড়ে যাতে যাত্রীদের উপর বোঝা হয়ে চেপে বসে।”
শুক্রবার সন্ধ্যায় আচমকা অনির্দিষ্ট কালের জন্য জেলা জুড়ে বাস বন্ধের সিদ্ধান্তে কিছুটা বিব্রত হয়ে পড়ে জেলা প্রশাসন। শনিবার বাস মালিকদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ বৈঠকও হয়। আরটিও বোর্ডের সদস্য গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, “বাসভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি রাজ্যের সিদ্ধান্ত। তবে আমরা অনুরোধ করায় করিমপুর সহ বেশ কিছু রুটে কিছু কিছু বাস চালাতে শুরু করেছে বাস মালিকরা।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.