জখম ৫ জন
শুভেন্দু আসার আগেই দুই গোষ্ঠীর লড়াই চন্দ্রকোনায়
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব পিছু ছাড়ছে না তৃণমূলের। রবিবার দলেরই এক প্রাক্তন নেতার আবক্ষ মূর্তি উদ্বোধনে চন্দ্রকোনায় এসেছিলেন সাংসদ তথা তৃণমূলের রাজ্য যুব সভাপতি শুভেন্দু আধিকারী। কিন্তু ঠিক তার আগের দিন রাতেই দলীয় সভা সেরে বাড়ি ফেরার পথে দলের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধল। চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের সহ-সভাপতি ও আরও দু’জন আহতও হয়েছেন ঘটনায়। তাঁরা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। ঘটনার জেরে জোর চাপানউতোর চলছে দলের দু’পক্ষের মধ্যে। এমনকি দলের একাধিক নেতা কর্মীর নামে মামলাও হয়েছে। রবিবার এ প্রসঙ্গে শুভেন্দুবাবু বলেন, “শুনেছি ঘটনায় সিপিএমের লোকেরা জড়িত।” তবে ওই ব্লকের সভাপতি অমিতাভ কুশারী বলেন, “শনিবারের ঘটনা নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করব না। তবে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশকেও নিরপেক্ষ তদন্ত করতে অনুরোধ করা হয়েছে।” শুভেন্দুবাবুর অভিযোগের পাল্টায় সিপিএমের চন্দ্রকোনা জোনাল কমিটির সম্পাদক গুরপদ দত্ত বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দের জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে। এতে সিপিএম কোনওভাবেই জড়িত নয়।”
তৃণমূল সূত্রে খবর, শনিবার চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের বান্দিপুর পঞ্চায়েতের দামোদরপুরে দলীয় সভা সেরে বাড়ি ফিরছিলেন ব্লকের সহ-সভাপতি হীরালাল ঘোষ ও দলের অনান্য কর্মীরা। হীরালালবাবুদের সভার আগেই ওই জায়গাতে দলেরই আরেক পক্ষের একটি সভা হয়েছিল বলেও দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু সভা সেরে ফেরার পথে ধান্যগাছি এবং দামোদরপুরের ফাঁকা মাঠের কাছে মোরাম রাস্তার উপর পাথর দিয়ে হীরালালবাবুদের পথ আটকায় তৃণমূলেরই এক পক্ষ। প্রথমেই ছিলেন হীরালাল ঘোষ এবং দলের স্থানীয় রাজগঞ্জ বুথের সদস্য বাপ্পাদিত্য ঘোষ। আচমকা ওই পাথর ধাক্কা খেয়ে মোটরবাইক থেকে মাঠে পড়ে যান তাঁরা। অভিযোগ, সেই সময় দলেরই বান্দিপুর অঞ্চল কমিটির সদস্য সলিল কারকের মদতে শুরু হয় মারধর। লাঠি দিয়ে হীরালাল ঘোষের পিঠে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এছাড়া পাথর দিয়ে মাথায়, এবং পায়ে টাঙি দিয়ে আঘাত করা হয়। বাপ্পাদিত্য ঘোষের পায়েও পাথর দিয়ে জোর আঘাত করা হয়। এর মধ্যেই হীরালালবাবুর অন্য সঙ্গীরা ফোন করে পুলিশে খবর দেন। প্রায় আধ ঘন্টা পর পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে। প্রথমে চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রাতেই তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। রবিবার হীরালাল ঘোষ ফোনে বলেন, “সলিল কারকের নেতৃত্বে এই ঘটনা হয়েছে। সিপিএম ছেড়ে যোগ দেওয়া নব্য তৃণমৃল কর্মীরাই ঘটনায় জড়িত। দলের ব্লকের প্রথম সারির এক নেতারও প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। পুলিশকে সব বলেছি। সুস্থ হওয়ার পর দলের উপরতলার নেতাদেরও লিখিতভাবে জানাব।”
রবিবার চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের ডালিমাবাড়িতে দলের প্রাক্তন নেতা প্রবীর কুশারীর বাড়ির সামনে তাঁর আবক্ষ মূর্তির উদ্বোধন হয়। দলের জেলা কমিটির সদস্য থাকাকালীন ২০০২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রবীর বাবু মারা যান। পুলিশ ও দলীয় সূত্রে খবর, প্রবীরবাবুর চন্দ্রকোনার বাড়িতে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। এ দিন ওঁরই আবক্ষ মূর্তির উদ্বোধন এসে শুভেন্দুবাবু দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “দলের দুর্দিনে প্রবীরবাবু চন্দ্রকোনার মত এলাকাকে শক্ত হাতে ধরে রেখেছিলেন। তাঁর প্রতি সম্মান জানাতে সামনের পঞ্চায়েত নিবার্চনে চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের সবকটি পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি দখল করতে হবে। আর এখন থেকেই তার প্রস্তুতি নিতে হবে।”
এদিন ডালিমাবাড়িতে শুভেন্দুবাবুর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসছিলেন চন্দ্রকোনা ১ ব্লকের কঙ্কাবতি গ্রাম থেকে ২০-৩০ জন দলীয় সমর্থক। একটি মিনি ট্রাক ভাড়া করে আসছিলেন তাঁরা। ক্ষীরপাই সংলগ্ন সামদেব গ্রামের কাছে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে গড়িটি উল্টে যায়। আহত হয়েছেন প্রায় ১৫ জন। তাঁদের প্রথমে ক্ষীরপাই ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার খবর শুনে আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান সাংসদ। কথাও বলেন। ঘাটাল ব্লক সভাপতি অজিত দে,অলোক দে-কে আহতদের ঘাটালে নিয়ে গিয়ে চিকিসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন তিনি। এমনকি আহতদের কাউকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার কথাও বলেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.