|
|
|
|
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রাশ টানতে উদ্যোগী তৃণমূল নেতৃত্ব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে জেরবার শাসক তৃণমূল। পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়ে দীর্ঘ দিন ধরেই এই পরিস্থিতি চলছে। অথচ সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। এখনই ফাঁকফোঁকর ভরাট না করতে পারলে যে বেগ পেতে হবে, তা বুঝছেন নেতৃত্ব। তাই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণ খুঁজতে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু করল জেলা তৃণমূল। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ক্ষেত্রে দু’টি ব্যাখ্যা উঠে এসেছে। ১) অর্থ,
২) সিপিএমের মদত।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “দ্বন্দ্বের পিছনে যা যা কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রত্যেক নেতা-কর্মীর উপর কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে। কেউ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লে বা সিপিএমের মদতে দলের ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা করলে দল রেয়াত করবে না। কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জেলা থেকে পঞ্চায়েত প্রতিটি স্তরেই রয়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তবে সর্বত্র দ্বন্দ্ব সংঘর্ষের আকার নিচ্ছে না। মারামারি সব থেকে বেশি হচ্ছে কেশপুর, চন্দ্রকোনা ও নারায়ণগড়ে। কেশপুরের গোষ্ঠীসংঘর্ষ তো রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক বছরে চার বার ব্লক সভাপতি পাল্টেও রাশ চানা যায়নি। শনিবারই কেশপুরের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি আশিস প্রামানিক-সহ তিন জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। তার পরে রবিবারই ফের সংঘর্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়। দলের নেড়াদেউল পার্টি অফিস কার দখলে থাকবে তা নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিতর্ক থেকে সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কেশপুরের নতুন ব্লক সভাপতি তপন চক্রবর্তী বলেন, “আমি গোষ্ঠী বুঝি না। একটাই দল, তৃণমূল। যার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই পুলিশকে সাফ জানিয়ে দিয়েছি, নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করুন। এলাকার শান্তি বজার রাখার জন্য সাধারণ মানুষকেও আবেদন জানিয়েছি।”
প্রাথমিকভাবে জেলা নেতৃত্বের তদন্তে উঠে এসেছে, গোষ্ঠী সংঘর্ষের পিছনে রয়েছে অর্থের লোভ। ব্লক অফিস থেকে বিভিন্ন কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। কোন ঠিকাদার কী কাজ পাবেন তা নির্ধারণ করতে শুরু করেছিলেন তৃণমূল নেতারাই। অভিযোগ, বিনিময়ে লাভের একটা অংশ ওই নেতার পকেটে যায়। তা ছাড়া, কিছু ক্ষেত্রে সিপিএমেরও মদত রয়েছে বলে তৃণমূল নেতৃত্ব জানতে পেরেছেন। কোন কোন নেতা-কর্মী দরপত্র আহ্বানের সঙ্গে যুক্ত, কারাই বা সিপিএমের মদতে দলের ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা করছে, তাঁদের তালিকা বানানো শুরু করেছে দল। অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। দীনেনবাবুর কথায়, “কেশপুর ও চন্দ্রকোনা থেকে এই ধরনের অভিযোগ বেশি আসছে। ওই দু’টি জায়গায় বেশি নজর রাখছি।” প্রত্যেকের কাজকর্মের খতিয়ান নিয়ে রিপোর্টও তৈরি করা হবে। তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে যে, প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপ চলবে না। তাও দলের কয়েজন এই কাজে যুক্ত হয়েছেন। দুর্নীতিগ্রস্ত, উপদল তৈরিতে জড়িত বা সিপিএম ঘনিষ্ট কয়েকজন নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করে দিলেই বাকিদের মনে ভীতি তৈরি হবে। তখন সুফল মিলবে।” |
|
|
|
|
|