|
|
|
|
|
সহবাগ, টি-টোয়েন্টিতেও
শুরুতে দেখে খেলো
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় |
|
সোমবার ভারত আরও একটা ওয়ার্ম আপ ম্যাচ খেলতে নামছে। ওহ, একটু ভুল হয়ে গেল। ম্যাচটা নামেই ওয়ার্ম আপ। কিন্তু সবার কাছে, এমনকী টিভি সম্প্রচারকদের কাছেও, এই ম্যাচটার গুরুত্ব অন্য রকম। আসলে খেলাটা যে ভারত-পাকিস্তানের।
ক্রিকেটাররাও জানে এই ম্যাচটার গুরুত্ব কতটা। তাই বিশ্বকাপ শুরুর আগে এমন একটা ম্যাচ জিততে কিন্তু দু’দলই মুখিয়ে থাকবে।
গত ১২ বছরের স্কোরের উপর চোখ বোলালে বোঝা যাবে ভারত কিন্তু পাকিস্তানের কর্তৃত্ব করে গিয়েছে। যেটা মিয়াঁদাদ, ইমরান, ওয়াসিম, মুদসসর নজরের আমলে দেখা যেত না। আমি অবশ্য এ ব্যাপারটায় আদৌ অবাক নই। পাকিস্তানে কখনও প্রতিভার অভাব হয়নি, কিন্তু মানসিকতায় ভারত ওদের সব সময় মেরে বেরিয়ে গিয়েছে।
দেখা যাচ্ছে, চাপের মুখে ভারত যে ভাবে মাথা ঠান্ডা রেখে ম্যাচ বার করতে পারে, পাকিস্তানিরা সেটা পারে না। বিশেষ করে ইদানিং তো দেখা যাচ্ছে ভারতের বিরুদ্ধে শুধু চাপ সামলাতেই ব্যর্থ নয় পাক ক্রিকেটাররা, নিজেদের প্রতি আস্থাও যেন হারিয়ে বসেছে ওরা। যেটা ওদের পূর্বসূরিদের মধ্যে কখনও দেখা যায়নি।
পাকিস্তানের যেটা সমস্যা, সেটা হল এক জন ভাল নেতার অভাব। ওদের প্রতিভার অভাব নেই। দরকার এক জন ভাল নেতার যে এই দক্ষতাকে ঠিকঠাক রাস্তা দেখাতে পারবে। ইমরান-আক্রমরা যেটা অধিনায়ক এবং প্লেয়ার হিসাবে অতীতে করে গিয়েছে। তবে এত সব সত্ত্বেও বলতে হবে, পকিস্তানকে কিন্তু হারানো সহজ হবে না। না সোমবারের ম্যাচে, না এই টুর্নামেন্টে।
তবে এই বিশ্বকাপে খেলতে নামার আগে ভারতের আত্মবিশ্বাসের কোনও অভাব হবে না। গত মাসে শ্রীলঙ্কা সফরে দুর্দান্ত খেলে গিয়েছে ধোনির ভারত। তা ছাড়া নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জয়ও এই তরুণ দলটার মানসিকতায় একটা ইস্পাত কাঠিন্য এনে দিয়েছে।
শেষ দুটো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের পারফরম্যান্স অবশ্য সে রকম ভাল হয়নি। সেই হিসাবটা ধোনিরা এখানে চুকোতে চাইবে। আর মনে রাখবেন, ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজে যে পরিবেশ, পরিস্থিতির মধ্যে ভারতকে পড়তে হয়েছিল, তার থেকে কলম্বোর পরিবেশ অনেক আলাদা। এখানেই ধোনিদের সুবিধা হয়ে যাবে। গত পাঁচ বছরে কলম্বোয় সব সময় ভাল খেলে এসেছে ভারত। তাই ওদের সবাই যদি সুস্থ থাকে, তা হলে এ বারও ভাল খেলবে।
টি-টোয়েন্টিতে জিততে গেলে যে পাওয়ার হিটারদের প্রয়োজন, এটা তো সবাই জানে। আর ভারতে সেই পাওয়ার হিটারদের কোনও অভাব নেই। সহবাগ, গম্ভীর, কোহলি, রায়না, যুবরাজ, ধোনি কাকে ছেড়ে কার কথা বলব। এই ব্যাটিং লাইন আপের জন্যই ভারত এত বিপজ্জনক। এরা একাই ম্যাচ জিতিয়ে দিতে পারে। আর এরা যদি মানসিক ভাবে ঠিক জায়গায় থাকে, তা হলে যে কোনও বোলিং আক্রমণকে ছিঁড়ে ফেলবে। শেষ দুটো বিশ্বকাপে ব্যাটিং ভারতকে ঝামেলায় ফেলেছিল। কিন্তু ওই যে বললাম, কলম্বোর পরিবেশ ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের পক্ষেই যাবে।
সহবাগের কাছে এই বিশ্বকাপটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। শুধু ভারতকে ভাল শুরু দেওয়াই নয়, দলে নিজের আধিপত্যকে আরও এক বার প্রতিষ্ঠা করতে সহবাগকে কিন্তু খারাপ ফর্মটা ঝেড়ে ফেলতে হবে। শুরুতে একটু সময় নিয়ে, দেখে খেললে সহবাগের বড় ইনিংস খেলতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
তবে বোলিংটা নিয়ে ভারতের চিন্তা থেকেই যাবে। জাহির খানকে একটা দারুণ পারফরম্যান্স করতে হবে। ইদানীং ওকে একটু ম্যাড়মেড়ে দেখাচ্ছে। ভারতকে বিশ্বকাপে ভাল কিছু করতে হলে কিন্তু ইরফানের সঙ্গে জাহিরকেও উল্টো দিক থেকে ভাল বল করতে হবে।
ভারতের বোলিং আক্রমণে একটু গতি দরকার। আমি নিশ্চিত, দিন্দা একটা সুযোগ পাবে। সব মিলিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তানের সঙ্গে ফেভারিট হিসাবে শুরু করবে ভারত। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়ে যে ভবিষ্যদ্বাণী করাই যায় না। কে ভেবেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে গত বার ট্রফি নিয়ে যাবে ইংল্যান্ড? |
|
|
|
|
|