ধান জমিতে জলের জোগান দিতে যাওয়া এক চাষিকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছড়ে মারল একটি হাতি। বড়জোড়ায় যখন রেসিডেন্ট হাতির হানায় শনিবার রাতে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তখন ঝড়খণ্ড থেকে কোটশিলায় ফের ঢুকে কয়েকটি হাতি তাণ্ডব শুরু করেছে।
বড়জোড়া থানার দেউচা গ্রামের ওই ব্যক্তির ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। মৃতের নাম সুশীল কুণ্ডু (৪৫)। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুশীলবাবু জমি দেখতে গিয়েছিলেন। হঠাৎ একটি হাতি তাঁকে তাড়া করে শুঁড়ে পাকিয়ে মাটিতে আছাড় মারে। তারপর পা দিয়ে তাঁর দেহ থেঁতলে দেয়। হাতিটিকে তাড়ানোর দাবিতে রবিবার সকালে বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রাস্তা কিছুক্ষণ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। ডিএফও (বাঁকুড়া উত্তর) এস কুলন ডেইভাল বলেন, “একটি রেসিডেন্ট দাঁতাল ওই ব্যক্তিকে মেরেছে। তার উপর বন কর্মীদের নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। মৃতের পরিবারকে শীঘ্র ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।”
বাঁকুড়ার রেসিডেন্ট হাতিরা এতদিন দামোদর পেরিয়ে বর্ধমানের শিল্পাঞ্চলে ঢুকে পড়ত। এ বার সম্ভবত তাদের মনে ধরেছে পুরুলিয়ার সাঁতুড়ি। রবিবার সকালে একটি হাতিকে স্থানীয় বড়ন্তি গ্রামের জঙ্গলে দেখা গিয়েছে বলে বনকর্মীরা খবর পেয়েছেন। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত এলাকায় হামলা চালানোর খবর মেলেনি। রঘুনাথপুর মহকুমা এলাকায় এতদিন হাতির আনাগোনা না থাকলেও বনকর্মীরা লক্ষ্য করছেন, গত চার বছর যাবৎ বাঁকুড়ার রেসিডেন্ট হাতি চলে এখানে চলে আসছে। রঘুনাথপুরের রেঞ্জ অফিসার সোমনাথ চৌধুরী বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে বাঁকুড়ার কোন রেসিডেন্ট হাতি শালতোড়া হয়ে সাঁতুড়িতে ঢুকে পড়েছে। বিষ্ণুপুর থেকে হুলাপার্টি এনে হাতিটিকে তাড়ানো হবে।’
অন্য দিকে, বিষ্ণুপুরের মতোই যেন সমস্যায় পড়েছেন ঝড়খণ্ড লাগোয়া কোটশিলার বাসিন্দারা। ঝড়খণ্ড থেকে হাতির একটি দলকে বনকর্মীরা ওপারে খেদিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু শনিবার বোকারোর বিসকি জঙ্গল থেকে ১৮টি হাতির একটি দল ফের কোটশিলায় ফিরে আসে। স্থানীয় হরতান গ্রামে ঢুকে পড়ে হাতির দলটি তাণ্ডব চালায়। কোটশিলার রেঞ্জ অফিসার ললিতমোহন মাহাতো বলেন, “এ বার দলটি আরও শক্তি বাড়িয়ে ঢুকেছে। হরতানের প্রায় ৫টি বাড়ি ভেঙে দেয় বলে শুনেছি। দলটিকে ফের ওপারে পাঠাতে বনকর্মী ও বনসুরক্ষা কমিটির লোকজনকে বলা হয়েছে।” |