বন দফতরকে ধোঁকা দিয়ে কাঠ পাচার
বাড়ি ভেঙেই বিক্রি
দেখলে আপাত দৃষ্টিতে মনে হবে নিতান্তই ছাপোষা একটি কাঠের বাড়ি। টং ঘর যেমন হয় আর কি! সেরকম কাঠামো। চারটি বড় বড় খুঁটির ওপর দাড়িয়ে থাকা দোতলা কাঠের ঘর। তবে বাড়িগুলি একপ্রকার দায়সাড়া ভাবে, তাড়াহুড়ো করে নির্মাণ করা হয়েছে। আসলে কিন্তু কোনও বাড়ি নয়। এগুলিতে কেউ বাসও করে না। অবৈধ কাঠ লুকোনোর সেরা জায়গা হয়ে উঠেছে ওই নকল কাঠের ঘর। পাহাড় থেকে হাত চেরাই হয়ে যে সেগুন কাঠ চা বাগানের পথ ধরে সাইকেলে করে ছোট ছোট বস্তি এলাকায় নিয়ে মজুত করা হয়, সেখানেই এরকম রাতারাতি ‘কাঠের বাড়ি’ গড়ে উঠছে। এই ঘরগুলির ভেতরগুলি যেন অবৈধ কাঠ চেরাই-এর কারখানা। এখান থেকেই চলে অবৈধ কাঠের ব্যবসা। যে আকৃতির কাঠ প্রয়োজন, সেই আকৃতির মাপে কাঠ কেটে এখান থেকেই শহরাঞ্চলের ব্যবসায়ীদের কাছে মাল পাঠানো হয় বলে অভিযোগ। সাধারণত, বনকর্মীরা অভিযানের সময় ঘরে ঢুকে খাট চৌকির নীচ, কিংবা মাটির নীচে চাপা অথবা ঝোপঝাড়ে ভেতর লুকিয়ে রাখা অবস্থায় চোরাই কাঠ উদ্ধার করতেন। কিন্তু প্রকাশ্যে অবৈধ কাঠ মজুত করার জন্যেই বাড়ি করা হচ্ছে এমন ঘটনা বেনজিরই ছিল। তাই এমন বসবাসের বাড়ির দিকে তারা নজরও দিতেন না। নতুন এই কায়দায় তাই বন দফতরও কার্যত গোলকধাঁধায় পড়েছেন। কারণ, বাড়িগুলির অবস্থানও মাঝে মাঝেই পাল্টে যায়। অর্থাৎ বেশি টাকার কাঠের বরাত পেলে গোটা গুদাম অর্থাৎ পুরো বাড়িটাই ভেঙে তার কাঠ বিক্রি করে দেওয়া হয়। জীবিকার সন্ধানে ভিন রাজ্যে অথবা অন্য কোথাও চলে যেতে হচ্ছে। এরকম বলে স্থানীয গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে সহজে বাড়ি ভাঙ্গার অনুমতিও মেলে। বন দফতর কিছু ঠাওর করার আগেই বাড়ি তৈরী হয় তারপর ফের বাড়ি ভেঙ্গে কাঠ পাচারও হয়ে যায়। ১০০০ বর্গ ফুটের এরকম একটি কাঠের বাড়িকে সেগুন কাঠ দিয়ে বানালে ২ ঘনমিটার অর্থাৎ ৭০ ঘনফুট কাঠের প্রয়োজন। দোতলা হলে সিলিং, মেঝের কাঠ মিলিয়ে প্রায় ১৫০ ঘনফুট সেগুন কাঠ বন দফতরের চোখে ধুলো দিয়ে রাখা যায়। যার বাজার মূল্য ৪ লক্ষের টাকারও বেশি। সিলিং, মেঝেতে দুটো করে তক্তা লাগিয়ে সংখ্যাকে খুব সহজে দ্বিগুণ করে পাচারকারীরা। সেগুন এর পরই শালের কদর। মূলত শালের কাঠ দিয়ে দরজা, জানলার ‘ফ্রেম’ চৌকাঠ বানানো হয়। এরকম কাঠের ঘরের ভেতরে প্রচুর শাল কাঠও মজুত করা হয়। চটপট শাল কাঠের গা থেকে অবৈধ ছাপ মুছে ফেলতে এই বাড়িগুলির ভেতর থেকেই রং করা হয়। চালসা রেঞ্জের দায়িত্বে থাকা ফরেস্ট কো-অর্ডিনেটর সুরত্ন শেরপা বলেন, “অবৈধ কাঠ বৈধ কাঠের মতো মসৃণ ভাবে কাটা হয় না। তাই সহজেই তা বোঝা যায় সেই চিহ্ন মুছে ফেলতে প্রাইমার করানো হয় তাতে বৈধ অবৈধ চিনতে ধন্দেও পড়তে হয়।” মূলত অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ীদের থেকে সাথে জড়িয়ে থাকা কাঠমিস্ত্রিরাই প্রাইমার করার কাজ করেন। এরকমই এক মিস্ত্রি বললেন, “কাঠে প্রাইমার মেরে অতিরিক্ত অর্থ আয় করতে পারছি। তবে এ লাইনে ধরা পড়ার খুব ভয়। সেজন্য মজুরিও প্রায় দ্বিগুণ মেলে। সাধারণত, ১৮০ টাকা দৈনিক হাজিরায় কাজ করলেও অবৈধ কাঠ রঙ, মসৃণ করার কাজ ও তা দিয়ে বাড়ি বানাতে ৩০০ টাকা করে দৈনিক মজুরি পাই।” অগস্ট মাসে বৈকন্ঠপুর ডিভিশন মালবাজার মহকুমা সাওগাঁও বস্তি এলাকায় এ রকম বাড়ির হদিস পায়। বাড়িটিকেই ভেঙে কাঠ আটক করেন তারা। ডুয়ার্স জুড়ে নতুন এই ট্রেন্ড নিয়ে দুশ্চিন্তায় বনকর্তারা। জলপাইগুড়ি বনবিভাগের ডিএফও বিদ্যুৎ সরকার বললেন, “অবৈধ কাঠব্যবসায়ীদের কাজ করার পদ্ধতি পাল্টাচ্ছে। জঙ্গলের লাগোয়া গ্রামগুলিতে এ রকম কাঠের বাড়ির হদিস পাচ্ছি। কিন্তু তা ভাঙার অনুমতি নেওয়ার আগেই বাড়ি ভেঙে পাচারও হয়ে যাচ্ছে।” বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “বনবস্তিগুলোতে কাঠের বা়ড়ি ভাঙতে হলে সংশ্লিষ্ট ডিএফও-র অনুমতি নেওয়ার আইন আছে। সে আইন যাতে কঠোর ভাবে মানা হয় তার নির্দেশ দেব।”

বিচ্ছু হনুমানকে খাঁচাবন্দি করার দাবিতে অবরোধ
একটি হনুমান ধরার দাবিতে তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ হল বনগাঁর গাঁড়াপোতা বাজারে। রবিবার সকাল ১০টা থেকে বনগাঁ-বাগদা সড়কে বেঞ্চ পেতে, মাইকে প্রতিবাদ জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের ওই অবরোধে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। বন দফতরের কর্মীরা এসে হনুমান ধরার প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ ওঠে। গ্রামবাসীরা জানান, প্রায় দু’মাস ধরে একটি হনুমান গাঁড়াপোতা, গোবরাপুর, কেউটিপাড়া ও হালদারপাড়ায় তাণ্ডব চালাচ্ছে। হনুমানের আঁচড়-কামড়ে জখম হয়েছেন ৩০ জনেরও বেশি। বন দফতরের পক্ষ থেকে আগে তিনটি খাঁচা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে হনুমানটি ধরা পড়েনি। রবিবার সকালেও বীথিকা হালদার নামে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কামড়ে দেয় হনুমানটি। তাকে বনগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বীথিকা বলে, “আমার এক হাতে কলা, অন্য হাতে লেবু ছিল। হনুমানটি আসতেই কলাটি দেওয়ার চেষ্টা করি। তখনই কামড়ে দেয়।’’ অবরোধকারীদের মধ্যে চঞ্চল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা চাই অবিলম্বে হনুমানটিকে ধরার ব্যবস্থা করুক বন দফতর।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.