তারাদের দেওয়াল
সাত ঘরের নামতা, চাঁদ, পাখি, ফুলে ভরে উঠল দেওয়াল। সহজপাঠের আত্মস্থ ছড়া আড়াল করেছে খেজুরগাছ! কখনও বা পিঙ্কি, জাহিরুল, সাবিনা, অঙ্কুর লাল ইটের রেখায় সাবলীল ক্লাসফ্রেন্ডের প্রাচীরময়! কখনও বৃষ্টি, কখনও রাতের শিশির ধুয়ে দেয় এই শৈশব কারুকার্য। কিন্তু সবের পরও জেগে থাকে প্রাথমিক তক্ষশীলা। চুন, সুরকির আবরণে কোনও ঝোঁক নেই। তবু তারা আছে অনামিকায়, আছে তর্জনীর মাঝে। বাড়ি ফিরেও স্বপ্নে, ভাতের থালায় হেঁটে বেড়ায় সেই সব দেওয়াল বর্ণমালা। সীমিত খাতার পাতায় ওসব অসম্ভব ভেবেই শিশুরা বেছে নিল স্কুলের দেওয়াল। অসীম ব্ল্যাকবোর্ড আর প্রাকৃতিক চক ইট। নেই কানমলা, নেই বারণ! ছিল প্রাথমিক শিক্ষকের তোলপাড় সম্মতি। কড়িয়াল নিম্ন বুনিয়াদি প্রাথমিক বিদ্যালয়। গঙ্গারামপুর। দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো প্রত্যন্ত জেলায় প্রত্যহ আরও প্রান্তিক হয়ে যাওয়া গ্রামেও স্বপ্ন বুনে চলেছেন একজন শিক্ষক, নীরবে, নিভৃতে, আড়ালে।
ছাত্রদের স্বপ্নে আরও রং ঢেলে দিলেন বরুণ তালুকদার। সর্বশিক্ষা মিশন থেকে স্কুলের দেওয়াল বর্ণময় করতে নিয়ে এলেন সাত হাজার। পাশে পেলেন চারশো শিক্ষককে। রবিঠাকুরের ২৫শে বৈশাখের সকালে শুরু হল দেওয়াল রাঙানো। কচি হাতে নীল, লাল, সবুজ একাকার। রবিঠাকুর এ ভাবেই বেঁচে আছেন রঙে, ছড়ায়, দেওয়ালে। এ দিনই স্কুলের বাউন্ডারি প্রাচীরের এক কোণে খুলে গেল বিশাল ব্ল্যাকবোর্ড। কোনও বারণ নেই, নিষেধ নেই। পড়ার ফাঁকে শিশুদের উৎসাহে দেওয়াল আজ আর হযবরল নয়, রঙিন দেওয়াল ইটের ক্ষতে বিক্ষত হয় না আর। কেননা ছাত্ররা পেল কৃষ্ণখাতার পাতা। কনসেপ্ট বরুণবাবুর। অবশ্যই ইউনিক অনন্য। চোখে চশমা, কাঁধে ঝোলা ব্যাগ আর ভবিষ্যৎ নির্মাতাই যার আইডেন্টিটি তার আবেদনেই সাড়া দিয়েই স্কুলের ‘ দেওয়াল বাঁচাতে’ এই অভিনব প্রয়াস সর্বশিক্ষা মিশন কলকাতার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠিয়েছে। তাদের ‘রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডি সেল’ তত্ত্বাবধান করছে বিষয়টি। ভবিষ্যতে দেওয়াল শিল্পকে সর্বশিক্ষা মিশন ‘প্রকল্পের’ আওতায় আনতে চাইছে। সৌজন্যে বরুণবাবু। এক দিন হয়তো কেরল, তামিলনাড়ু, ত্রিপুরার প্রাথমিক স্কুলের দেওয়ালেও উঠবে চাঁদ, তারা, সূর্য কিংবা ফুটবে ফুল। ভাষা ভিন্ন হলেও দেওয়ালে তফাত নেই। নিঃশব্দে আকাশে তারার সংখ্যা আরও বেড়ে যাচ্ছে, কেউ জানতে পারছে না। একক সূর্য, চাঁদের সাম্রাজ্য দখল নেবে প্রতিদ্বন্দ্বী! সৌজন্যে বরুণ!

লেখা ও ছবি সন্দীপন নন্দী, বালুরঘাট।

‘নীরব আঁধার’
আলিপুরদুয়ারে ভাটিবাড়িতে কবি অভিজিৎ দাসের বাড়ি। কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ “নীরব আঁধার” কাব্য গ্রন্থে। ২০১০ সালে পত্রলেখা প্রকাশনা থেকে কলকাতা বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছিল কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ “নীরব আঁধার”। পাশাপাশি উত্তরের নানা জনজাতির লোকজীবন এবং তার সংস্কৃতি নিয়েও তার নীরব ভাবনা তাকে উৎসাহিত করেছে। ‘দিগ্বাস’ নাম দিয়ে পত্রিকা সম্পাদনা করে আসছেন নয় বৎসর ধরে। উত্তরবঙ্গ, অসম, দক্ষিণবঙ্গ নানা উৎসব অনুষ্ঠানে কবির নিয়মিত উপস্থিতি সংস্কৃতি প্রেমী মানুষেরা ভ্রাতৃস্নেহে বরণ করে নেন। বর্তমানে তিনি একজন প্রাথমিক শিক্ষক। এই শিক্ষকতার কাজে যুক্ত থেকেও পত্রিকা সম্পাদনা ও লেখালেখির কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০১১ “অকাদেমি অব বেঙ্গলি পোয়েট্রি” সপ্তদশ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে “কবিগুরু স্মারক সম্মান” তার প্রথম পুরস্কার।

জয়ন্ত সরকার, আলিপুরদুয়ার।

দুটি রেনট্রি উৎপাটিত
৫ জুলাই নিউটাউনে মহাকাল ধামের পুব-পশ্চিমে দুটি বিশাল বপুর রেনট্রি সমূলে উৎপাটিত হয়। শতাব্দী প্রাচীন গাছগুলি ব্রিটিশদের হাতে রোপিত হয়েছিল। বড় ড্রেন পাড়, কোর্ট চত্বর, পার্ক রোড, নিউটাউনের কড়ইতলা ও মহাকালধাম থেকে লোহারপুল পর্যন্ত কিছু গাছ এখনও বর্তমান। প্রতি বছরই বর্ষাকালে দু’একটি করে গাছ পড়ে চলেছে। প্রাণহানি না ঘটলেও সম্পদহানি কম হচ্ছে না। এ বারে যে দু’টি গাছ শিকড় বিচ্ছিন্ন হয়েছে, তাতে কয়েকটি পরিবারের বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে। ইলেকট্রিক খুঁটি বিদ্যুৎবাহী তার-সহ মুখ থুবড়ে পড়েছে। পূর্ত দফতর যদি অবশিষ্ট গাছ কেটে নেবার ব্যবস্থা না করে, আগামীতে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

লেখা ও ছবি নির্মল ভট্টাচার্য, আলিপুরদুয়ার।

ঐতিহাসিক মধুপুর ধাম
কোচবিহার থেকে সড়ক পথে পুণ্ডিবাড়ি যেতে পড়বে মধুপুর মোড়। এই মোড় থেকে দুই কিমি পথ পেরুলেই ঐতিহাসিক মধুপুর ধাম। কোচবিহারের রাজা নরনারায়ণ প্রথমে এখানে মন্দির স্থাপন করেন। মন্দিরটি প্রথমে খড়ের ছিল। পরবর্তীতে মন্দির সংস্কারের কাজ করেন মহারাজ বীরনারায়ণ। মধুপুর ধামের এখন যে মন্দিরটিতে দর্শনার্থীরা আসেন, সেটি অসমের ভক্তগণের টাকায় তৈরি হয়। ১৯৬৪ সালে এই মন্দিরের উদ্বোধন করেন মহারাজ জগদ্বীপেন্দ্রনারায়ণ। মন্দিরটি গড়ে ওঠার পিছনে অন্যতম কারণ হল, এখানে অসমীয়া মনীষী শ্রীশ্রীশংকরদেব এখানে দেহ রেখেছেন। তাই মধুপুর ধাম অসমের জনগণের কাছে পুণ্যক্ষেত্র। বৈশাখ মানে বিহু উৎসব ছাড়াও ভাদ্র মাসে শংকরদেব ও মাধব দেবের প্রয়াণ দিবস পালন করা হয়। উল্লেখযোগ্য উৎসব হল ‘মাঘোৎসব’। মাঘ মাসের শুক্লাপঞ্চমীতে এই উৎসব হয়। ১১ দিনের এই উৎসব উপলক্ষে বসে মেলাও। উত্তরবঙ্গ-সহ অসম থেকে আসেন অগণিত মানুষ।

লেখা ও ছবি শুভাশিস দাস, কোচবিহার।

কোথায় গিটার
মনে হয় গিটারে বাজছে রবীন্দ্রসঙ্গীতর বা নজরুলগীতির সুর। নাক দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে বের হচ্ছে সুরধ্বনি। চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। দীর্ঘ দিন ধরে গিটারের সুরে যিনি দর্শক-শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছেন নিজেকে, তিনি জলপাইগুড়ির নয়াবস্তিপাড়ার বাসিন্দা দ্বীপঞ্জয় জোয়ারদার। রবীন্দ্রসঙ্গীত থেকে নজরুলগীতি কিংবা দেশাত্মবোধক গান অথবা ভক্তিগীতি বা হিন্দি সিনেমার গান সবই পরিবেশন করেন নাসিকা গিটারে। বধূ কোন আলো, চোখের আলোয় দেখেছিলেম, ও আমার দেশের মাটি থেকে গায়ত্রীমন্ত্রই হোক বা বন্দে মাতরম বা অ্যায় মেরে ওয়াতনকে লোগো-র সুর অনায়াসেই নাক দিয়ে বাজাতে পারেন তিনি। ছোটবেলায় যা ছিল শখ, তা আজ নেশায় পরিণত হয়েছে। এ ধরনের কাজের জন্য দরকার প্রচুর দমের। তাই নিয়মিত প্রাণায়াম করতে হয়। প্রতিদিন এর চর্চা চালানো দরকার বলে জানালেন পেশায় ব্যবসায়ী এই মানুষটি। তিনি যন্ত্র ছাড়া নাকের সাহায্যে গিটারের সুর বাজাতে পারেন, চাক্ষুষ ছাড়া চক্ষুকর্ণের বিবাদভঞ্জন সম্ভব নয়।

লেখা ও ছবি অনিতা দত্ত, জলপাইগুড়ি।


উত্তরের কড়চা
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ,
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড,
শিলিগুড়ি-৭৩৪৪০১



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.