জেলা স্তরে তথ্যপ্রযুক্তিতে লগ্নি টানতে এ বার ডিরেক্টরেট তৈরি করছে রাজ্য সরকার।
ওই ডিরেক্টরেট-এর কাজ হবে জেলায় বিনিয়োগ উপযোগী পরিকাঠামো তৈরি করা। সঙ্গে লগ্নিকারীকে প্রশাসনিক দিক থেকে সাহায্য করার দায়ও থাকবে।
বর্তমানে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি দফতর আকারে ছোট হওয়ার পাশাপাশি শহর কেন্দ্রিকও বটে। ফলে জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে লগ্নি টানা ও প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে অন্যান্য দফতরই এখন তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের প্রধান ভরসা। তবে নিয়ম অনুযায়ী দফতর নীতি তৈরি করলেও তা কার্যকর করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে নীতি কার্যকর করার দায় বর্তায় তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের অধীন সংস্থা ওয়েবেল-এর উপর। ওয়েবেল-এর মাধ্যমেই তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক-সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়। কিন্তু এই সংস্থাও মূলত কলকাতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাই জেলা স্তরে এই প্রশাসনিক পরিকাঠামোর অভাব পূরণের জন্য ডিরেক্টরেট তৈরি করা হচ্ছে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে লগ্নি টানার পাশাপাশি রয়েছে জেলায় জেলায় ই-গভর্ন্যান্স প্রকল্প চালু করার পরিকল্পনা। এবং এই প্রকল্প কার্যকর করা ও যথাযথ নজরদারির জন্যও জরুরি জেলা স্তরে তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের প্রশাসনিক পরিকাঠামো। ডিরেক্টরেট-এর জেলা অফিসগুলি সেই কাজই করবে।
মুখ্যমন্ত্রী হয়ে শিল্পমহলের সঙ্গে প্রথম মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে জেলায় জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে ছড়িয়ে দিতে হবে। বিশেষ করে জঙ্গলমহল ও পিছিয়ে পড়া এলাকায় এই শিল্পে লগ্নি টানার উপর জোর দেন তিনি।
রাজ্য সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি নীতিতেও জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে লগ্নি টানার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। জেলায় জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি ‘হাব’ তৈরির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলিকে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। ২০০৯ সালে তৈরি ‘ইনসেনটিভ’ বা উৎসাহ প্রকল্পেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। এত দিন রাজ্যকে তিনটি অঞ্চলে ভাগ করা হত: এ, বি এবং সি। ‘এ’ অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত এলাকা। ‘বি’-তে হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা-সহ সাত জেলা। ‘সি’ অঞ্চলে মুর্শিদাবাদ, মালদহ, পুরুলিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া, কোচবিহার-সহ এগারোটি জেলা। নয়া নীতিতে আর একটি অঞ্চল চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই ‘ডি’ অঞ্চলে থাকছে জঙ্গলমহল।
জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প সম্প্রসারণের জন্য ইতিমধ্যেই ১০টি তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ি ও দুর্গাপুরে সম্প্রসারণ ছাড়াও নতুন পার্ক তৈরি হবে বড়জোড়া, বোলপুর, কল্যাণী, খড়্গপুর, পুরুলিয়া-সহ জেলার বিভিন্ন শহরে। তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের দাবি, পরবর্তী পর্যায়ে সব জেলা এই কর্মসূচির আওতায় আসবে। |