বেতনের দাবিতে কর্মবিরতি ও অনশন শুরু করলেন হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের সাফাই ও নিরাপত্তাকর্মীরা।
সোমবার হাসপাতালের ১২ জন কর্মী এই অবস্থান-বিক্ষোভে সামিল হন। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের যা প্রাপ্য বেতন তার থেকে কম দিচ্ছে ঠিকাদার সংস্থা। আর এই কম বেতন নিতে অস্বীকার করায় দু’মাস ধরে বিনা বেতনেই কাজ করতে হচ্ছে। ক্ষোভে এ দিন অনশনে বসেন কর্মীরা।
কর্মীদের অনেকেই টানা ১২ বছর ধরে এই হাসপাতালে কাজ করছেন। সেই সময়ে বেতন কাঠামো নির্দিষ্ট না থাকায় আড়াই হাজার টাকা পেতেন তাঁরা। বহু আন্দোলনের পরে চলতি বছরের জুন মাস থেকে নতুন বেতন বিধি বেঁধে দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সেই বেতন পরিকাঠামো অনুযায়ী তাঁদের মোট বেতন ৫ হাজার ৫৩৭ টাকা। তবে প্রভিডেন্ট ফান্ড ও ইএসআই বাবদ টাকা কাটার পরে তা দাঁড়ায় ৪ হাজার ৫৬৪ টাকা। নিরাপত্তা ও সাফাই কর্মীরা জানান, ইতিমধ্যে ঠিকাদার সংস্থা বদলেছে। কিন্তু নতুন ঠিকাদার সংস্থাও বিধি অনুযায়ী বেতন দিচ্ছে না বলে তাঁদের অভিযোগ। অনশন আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা স্বপন ঘোড়াই, তীর্থনাথ পাছারের অভিযোগ, “ঠিকাদার আমাদের ৪ হাজার টাকা দিচ্ছে। যা নিতে অস্বীকার করলে বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও টালবাহানা করছে বলে জানান তাঁরা। |
এ দিকে ডেঙ্গির দাপট ছড়িয়ে পড়ায়, এমনকী পূর্ব মেদিনীপুরেও কয়েকজন ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়ায় প্রতিটি হাসপাতাল চত্বর সাফসুতরো রাখতে সচেষ্ট হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তার মধ্যেই সাফাই ও নিরাপত্তাকর্মীদের এই বিক্ষোভ ও কর্মবিরতিতে পরিচ্ছন্নতা শিকেয় উঠেছে হাসপাতাল চত্বরে। জেলার প্রায় সর্বত্রই এই নতুন ঠিকাদার সংস্থার ‘দাপটে’র অভিযোগ তুলছেন সাফাই ও নিরাপত্তাকর্মীরা। যদিও ঠিকাদার সংস্থার মালিক চন্দন সেনগুপ্তের দাবি, “এঁরা পুরোনো ঠিকাদারের কর্মী। আমার সঙ্গে জোর করে কাজ করছেন। আমি নতুন কর্মী নিয়োগ করলে নিয়ম অনুযায়ীই বেতন দেব।” হাসপাতাল সুপার হারাধন বর্মন বলেন, “জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে বিষয়টা জানিয়েছি। সাফাই ও নিরাপত্তাকর্মীরা ভাল কাজ করলে তাঁদের বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।” জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কালীদাস দত্ত ইতিমধ্যেই কর্মীদের নায্য বেতন দেওয়ার জন্য ওই ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আলোচনার জন্য ওই ঠিকাদারকে ডেকে পাঠিয়েছি।” |