নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
পার্কিংয়ের বরাত পেয়ে এক বছর ধরে ফি সংগ্রহ করেছেন, অথচ বরাত পেতে পুরসভার প্রাপ্য টাকা না-মেটানোর অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন পুর কর্তৃপক্ষ। সোমবার শিলিগুড়ি পুরসভার তরফে ওই ব্যক্তি রাকেশ পালের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। ২০১১-২০১২ সালে সেবক মোড় থেকে পানিট্যাঙ্কি মোড়ে পার্কিংয়ের ফি সংগ্রহের জন্য বরাত পেয়েছিলেন তিনি। তা ছাড়া এ বছর বরাত না পেলেও অবৈধ ভাবে পুরসভার নাম করে স্লিপ ছাপিয়ে পার্কিং ফি তোলার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এ সব নিয়ে হইচই হওয়ায় পুরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মীকে রাকেশবাবু হুমকিও দেন বলে অভিযোগ। শিলিগুড়ি থানার পুলিশ জানিয়েছে, রাকেশবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাকেশবাবু অবশ্য তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “পুর কর্তৃপক্ষ যে অভিযোগ তুলছেন তা ঠিক নয়। অন্যায় অভিযোগ তুলে আমাকে এবং আমার পরিবারকে হেনস্তা করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আইনের দ্বারস্থ হব।” রাকেশবাবু-সহ ৬ জনের কাছে পার্কিংয়ের বরাত দেওয়ার জন্য প্রায় ২২ লক্ষ টাকা বকেয়া পাওয়া রয়েছে পুর কর্তৃপক্ষের। রাকেশবাবুর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানো হলে বাকিদের বিরুদ্ধে এখনও সে ভাবে কোনও ব্যবস্থা কেন নেননি কর্তৃপক্ষ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “এক জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ হয়েছে। বাকিদের মধ্যে ২ জন পুরসভায় যোগাযোগ করেছেন। তাদের বকেয়ার পরিমাণ ঠিক কতটা রয়েছে তা জানতে চেয়েছেন। অন্যদের ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হবে। আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে দেখে কিছুটা দেরি হচ্ছে।” পুরসভার একটি সূত্র অবশ্য দাবি করেছে, বরাতদারদের একাংশ কংগ্রেসের ঘনিষ্ট বলেই কৌশলে তাদের সময় দেওয়া হচ্ছে। অনেকের সঙ্গে রফা করে বকেয়ার পরিমাণ কমানোর চেষ্টাও হচ্ছে। পুর কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। বিরোধী দলনেতা মুন্সি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘বকেয়া ২২ লক্ষ আদায় করতে পুর কর্তৃপক্ষ উদাসীন। দলেরই ঘনিষ্ঠ কিছু লোককে তারা রেহাই দিতে চেষ্টা করছেন। এখনও মাত্র ১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হল।” এ বছর পার্কিংয়ের বরাত দিতে যে টেন্ডার ডাকা হয়েছিল সেখানে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। পাতিকলোনির গীতা বর্মন মিতা মজুমদার এবং রিতা দাসরা পুর কমিশনারকে অভিযোগ জানিয়েছেন টেন্ডার জমা করার সময় তারা নিজেদের মতো দর উল্লেখ করেছিলেন। দরপত্রে খোলার দিন তাদের টাকার পরিমাণ জনানো হলে তারা দেখেন যে দর দিয়েছিলেন তা কেটে অন্য দর লেখা হয়েছে। ৫ সেপ্টেম্বর তারা পুর কর্তৃপক্ষের কাছে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেন। মেয়র এবং ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা দাবি করেন, সকলের সামনেই সিল করা টেন্ডার বাক্স খোলা হয়। সে কারণে টেন্ডারে দরপত্র কেউ কেটে ঠিক করেছে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। |