|
|
|
|
ফল চাষের এলাকা বাড়ানোর উদ্যোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ফল চাষের এলাকা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। এ জন্য চাষিদেরও উৎসাহিত করা হচ্ছে। নতুন প্রকল্পের ক্ষেত্রে সরকার কী ভাবে পাশে দাঁড়াতে পারে, আর্থিক সহায়তা দিতে পারে, তা বোঝানো হচ্ছে। জাতীয় উদ্যান পালন মিশনে বেশ কিছু প্রকল্প রয়েছে। এগুলি রূপায়ণে সরকারি সহায়তা মেলে। জেলা উদ্যান পালন আধিকারিক শুভাশিস গিরি বলেন, “ফল চাষের এলাকা বাড়াতে সব চেষ্টা চলছে। চাষিদের ফলের চারা দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় উদ্যান পালন মিশন প্রকল্পটি নিয়েও অনেকে উৎসাহ দেখাচ্ছেন। সরকারি সহায়তা চেয়ে আবেদন করছেন।”
জেলা প্রশাসন মনে করছে, ফল চাষের এলাকা বাড়লে এক দিকে যেমন চাষিরা উপকৃত হবেন, অন্য দিকে সংশ্লিষ্ট এলাকার অর্থনৈতিক পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে। উদ্যান পালন মিশনে ২০টি প্রকল্প রয়েছে। যেমন, কাজু বাদামের বাগান তৈরি, আমের বাগান তৈরি, পানের বরোজ তৈরি, জৈব পদ্ধতিতে চাষ, লেবু বাগান তৈরি, কলা চাষ, পেয়ারা বাগান তৈরি প্রভৃতি। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ভাবে একজন চাষি বা স্বনির্ভর দল আবেদন করতে পারে। পরে জেলা মিশন কমিটি আবেদন খতিয়ে পদক্ষেপ করবে। প্রকল্প ব্যয়ের একাংশ সরকার বহন করবে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় ৫ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। ১ হাজার ৭৪৫ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়। ১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে পেয়ারা চাষ হয়। এ জেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষি নির্ভর। চাষবাস করেই এঁদের সংসার চলে। কোথাও বছরে একবার চাষ হয়। কোথাও বা একাধিকবার। তবে জলাভাবে প্রায়ই ক্ষতিগ্রস্ত হন কৃষকেরা। কারণ, বিস্তীর্ণ এলাকায় সেচের সুবিধা নেই। জেলায় মোট কৃষি জমির পরিমাণ ৭ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩৭৫ হেক্টর।
এর মধ্যে সেচের সুবিধা রয়েছে ৩ লক্ষ ২৩ হাজার ৯৬৩ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ, অর্ধেকেরও কম। এই পরিস্থিতিতে অধিক লাভের আশায় জেলার একাংশে ফল চাষে উৎসাহ বাড়ছে। মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি বলেন, “ফল চাষের এলাকা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এ ক্ষেত্রে চাষিরা এগিয়ে এলে সরকার তাঁদের পাশে থাকবে।” বিধায়ক নিজেও বেশ কয়েকজন চাষিকে জাতীয় উদ্যান পালন মিশন প্রকল্পের আবেদনপত্র দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “এখন অনেকেই ফল চাষ নিয়ে উৎসাহ দেখাচ্ছেন। সময়ের মধ্যে প্রকল্প পায়িত হলে স্বাভাবিক ভাবেই ফল চাষের এলাকা বাড়বে।” এ ক্ষেত্রেও অবশ্য জৈব পদ্ধতিতে চাষবাসের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে কৃষি দফতর। দফতর সূত্রে খবর, বেশি ফলন পাওয়ার আশায় বেহিসেবি রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে একদিকে যেমন মাটির ক্ষয়ক্ষতি হয়, তেমন উপকারী জীবাণুগুলিও নষ্ট হয়। এরফলে মাটির অম্লতা বেড়ে যায়। জৈব সারে চাষ হলে এই পরিস্থিতি দেখা দেবে না, বরং মাটি আরও সজীব থাকবে। কারণ, মাটিতে জৈববস্তু ছাড়া জীবাণু বাঁচে না, জীবাণু না থাকলে জৈব বস্তুর পচন হয় না। জীবাণুর অনুপস্থিতিতে রাসায়নিক সারও কার্যকর হয় না। জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “চাষের খরচ কমানোর পাশাপাশি পরিবেশে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্যই জৈব সারে চাষের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|