সরকারি আবাসনে বন্ধ ঘরের ভিতরে এক যুবক শিক্ষানবিশ ডাক্তারের রক্তাক্ত, গুলিবিদ্ধ দেহ। তার সামনে পড়ে চারটি চিরকুট। প্রতিটিতে মাথা, মুখের মতো শরীরের এক-একটি অংশের নাম লেখা। রবিবার বিকেলে তিলজলা এলাকার একটি সরকারি আবাসনের ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ওই যুবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ জানান, ওই যুবকের নাম অভীক দত্ত (২৫)। তিনি তিলজলা থানা এলাকায় রেল আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ‘ইন্টার্ন চিকিৎসক’ ছিলেন অভীক। তাঁর কানের পাশে গুলির ক্ষত মিলেছে। চারটি চিরকুট ছাড়াও পাওয়া গিয়েছে একটি সুইসাইড নোট। তাতে লেখা ছিল, ‘মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’ প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, আত্মহত্যা করেছেন ওই যুবক। পুলিশি সূত্রের খবর, ওই চারটি চিরকুটে আলাদা আলাদা ভাবে মাথা, কানের পাশ, বুক এবং মুখ লেখা ছিল। গোয়েন্দাদের অনুমান, আত্মহত্যার আগে ওই চিরকুট দিয়ে লটারি করেছিলেন অভীক। তাতে ‘কানের পাশে’ লেখা চিরকুটটিই উঠেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। তাই গুলির ক্ষত কানের পাশে।
পুলিশ জানায়, অভীকের বাবা রেলে কাজ করতেন। সম্প্রতি অবসর নিয়েছেন। রবিবার দুপুরে তিনি বাইরে গিয়েছিলেন। বিকেলে বাড়ি ফিরে দেখেন, সদর দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। ভিতরে জোরে টিভি চলছে। প্রতিবেশীদের সাহায্য নিয়ে তিনি ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখেন, অভীক রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। তাঁর কানের পাশে গভীর ক্ষত। দেহের পাশে পড়ে রয়েছে দেশি একটি নাইন এমএম পিস্তল। অভীকের বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ জেনেছে, এক মহিলা চিকিৎসকের ‘ঘনিষ্ঠ’ বন্ধু হওয়ার চেষ্টা করছিলেন অভীক। এই নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। দেশি পিস্তলটি তিনি কোথা থেকে পেলেন, তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। মানসিক অবসাদের জেরে এক মহিলা ডাক্তারও সোমবার বিকেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে পুলিশ জানায়। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মহিলা হস্টেলের ছাদ থেকে পড়ে তিনি গুরুতর আহত হন। পুলিশের বক্তব্য, আত্মহত্যা করতেই ওই মহিলা চিকিৎসক ছাদ থেকে লাফ দিয়েছিলেন। সঙ্কটজনক অবস্থায় ওই হাসপাতালেই ভর্তি আছেন তিনি। |