গত সপ্তাহেই দেশের হয়ে যুদ্ধ করতে আফগানিস্তানে এসেছেন রাজকুমার হ্যারি। আফগানিস্তানে হ্যারির পা রাখার খবর প্রথমে তারা ‘বিশ্বাস’ না করলেও খবরের সত্যতা জানার পর এখন রীতিমতো উজ্জীবিত তালিবান। এমন ‘হাইপ্রোফাইল’ শিকার হাতের মুঠোয় পেয়ে ছেড়ে দিতে নারাজ তারা। তাই আজ তালিবানের এক মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ স্থানীয় টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ব্রিটিশ রাজ সিংহাসনের তৃতীয় দাবিদার রাজকুমার হ্যারিকে অপহরণ কিংবা খুন করাই এখন তাদের একমাত্র লক্ষ্য।
ওই সাক্ষাৎকারে জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে যারা আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছে তারা প্রত্যেকেই তালিবানের শত্রু। আর রাজকুমার হ্যারি অত্যাধুনিক অ্যাপাচে হেলিকপ্টার চালক। তাই তিনি অন্য সেনাদের চেয়ে আরও বেশি সংখ্যক তালিবান হত্যা করবেন। তাই অপহরণ করা সম্ভব না হলে হ্যারিকে হত্যা করারই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। |
সম্প্রতি ‘বিতর্কিত’ ছুটি কাটিয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন রাজকুমার হ্যারি। সেই ছুটির শেষের দিকেই লাস ভেগাসে একটি পার্টিতে নগ্ন অবস্থায় হ্যারির আমোদের ছবি প্রকাশ্যে আসে। তার জেরে অস্বস্তিতে পড়তে হয় ইংল্যান্ডের রাজপরিবারকে। তবে সে সব ভুলে এখন কাজেই মন দিতে চান হ্যারি। আপাতত আগামী চার মাসের জন্য আফগানিস্তানে সম্মুখ-সমরে পাঠানো হয়েছে তাঁঁকে। আর একটি সূত্রের খবর, আগামী বছরে তিনি বেজিং সফরে যেতে পারেন। চিনের সঙ্গে ইংল্যান্ডের সম্পর্ক সুদৃঢ় করার জন্যই এই পদক্ষেপ। তবে এই ধরনের ‘দায়িত্বশীল’ কাজগুলিতে সফল হলে রাজকুমার হ্যারির ভাবমূর্তি অনেকটাই উদ্ধার করা যাবে বলে মনে করছেন ব্রিটিশ রাজনীতিবিদদের একাংশ।
আফগানিস্তানে হেলমন্দ প্রদেশের ব্যাস্টিয়ান ক্যাম্পে এসে হ্যারি অবশ্য বসে নেই। নিচ্ছেন যুদ্ধে নামার জন্য প্রয়োজনীয় নানা প্রশিক্ষণ। প্রাথমিক চিকিৎসা থেকে শুরু করে হেলিকপ্টারের যে ধরনের আইইডি ব্যবহার করা হবে সেগুলির সম্পর্কে নানা খুঁটিনাটি জানা, সবই এই প্রশিক্ষণের অঙ্গ। অন্তত আগামী সাত দিন হ্যারি ব্যস্ত থাকবেন এ সব শিখতে। তাই সেই ক’দিন তালিবানের মুখোমুখি হতে হবে না তাঁকে। কিন্তু তার পর?
২০০৮ সালে প্রথম বার যখন তাঁকে আফগানিস্তানের যুদ্ধে পাঠানো হয়েছিল তখনও একই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। সে বার অবশ্য তালিবানের তরফে এই ধরনের হুমকি পাওয়ার পরই দেশে ফেরত পাঠানো হয় তাঁকে।
এ বারও কি তা হলে দেশেই ফেরত যাবেন রাজকুমার? ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক অবশ্য এখনই কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি। ‘বিপদ কতটা’ তা বুঝে নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে, এ চেয়ে বেশি কিছু এখনই জানাতে নারাজ তাঁরা। |