নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
দুই বৃদ্বাকে মারধর করার পরে তাঁদের পিছমোড়া করে বেঁধে রেখে লুঠপাট চালাল দুষ্কৃতীরা। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে সালানপুর থানার রূপনারায়ণপুরের রূপনগরে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় রূপনারায়ণপুর ফাঁড়ির পুলিশ। দুষ্কৃতীদের দ্রুত খুঁজে বের করে গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “রূপনারায়ণপুরে একটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গিয়েছিল। তদন্ত শুরু হয়েছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, রূপনগরের বাসিন্দা বাণী সরকারের বাড়িতে এই লুঠপাটের ঘটনা ঘটে। বানিদেবীর সঙ্গে ওই বাড়িতে তাঁর এক নিকট আত্মীয়া, এক মেয়ে ও দুই নাতনি থাকেন। তাঁর ছেলে পেশায় চিকিৎসক কর্মসূত্রে দুর্গাপুরে থাকেন।
বাণীদেবী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, রাত সওয়া ৮টা নাগাদ তাঁর ওই নিকট আত্মীয়া প্রায় আশি ছুঁই ছুঁই কমলা দাস ঘরের আবর্জনা ফেলার জন্য বাড়ির পিছন দিকের দরজা খোলেন। তখনই দরজার পাশে ওৎ পেতে বসে থাকা চার জন দুষ্কৃতী কমলাদেবীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে ঘরে ঢোকে। ওই ভাবে চার জন অপরিচিতকে ঘরে ঢুকতে দেখে কমলাদেবী চিৎকার করে ওঠেন। দুষ্কৃতীরা প্রথমে তাঁকে মারধর করেন। পরে তাঁর মুখ, হাত বেঁধে খাবার টেবিলের পায়ার সঙ্গে বেঁধে রাখে। এর পরে বাণীদেবীর ঘরে গিয়ে তাঁকেও পিছমোরা করে বেঁধে ফেলে দুষ্কৃতীরা। তিনি বাধা দিতে গেলে দুষ্কৃতীরা তাঁকেও মারধর করে বলে অভিযোগ। এই সময়ে বাণীদেবীর মেয়ে ও দুই নাতনি বাড়িতে ছিলেন না। দুষ্কৃতীরা আলমারি খুলে নগদ টাকা, সোনার গয়না নিয়ে আধ ঘণ্টার মধ্যেই চম্পট দেয়। |
রাত ৯টা নাগাদ বাণীদেবীর মেয়ে প্রতিমাদেবী ও তাঁর দুই নাতনি বাড়ি ফেরেন। নিত্যদিনের অভ্যাস মতো পিছনের দরজা দিয়ে ঢোকার সময়ে দেখেন, বাইরে থেকে দরজাটি বন্ধ। প্রতিমাদেবীর কথায়, “তখনই আমার খটকা লাগে। ছিটকিনি খুলে ভিতরে ঢুকে দেখলাম মা, মাসিমা হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছে। দু’টো আলমারি খোলা।” এর পরেই থানায় খবর যায়।
যে বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে, তার চারপাশে প্রায় চার ফুট উঁচু পাঁচিল রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা পাঁচিল টপকে বাড়ির ভিতরে ঢোকে। লুঠপাট করার পরে আবার পাঁচিল টপকে ঝোপঝাড় পেরিয়ে হরিষাডি গ্রামের দিকে যাওয়ার পিচ রাস্তা ধরেই চম্পট দেয়।
ভর সন্ধ্যায় জনবহুল এলাকায় এমন লুঠপাটের ঘটনায় নিরাপত্তহীনতায় ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক নেতারাও। সালানপুরের পঞ্চায়েত সমিতির উপ-সভাপতি তথা প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য শ্যামল মজুমদার রূপনারায়ণপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। তৃণমূল নেতা পাপ্পু উপাধ্যায় সালানপুরের মতো সীমানা থানাগুলিকে আরও সক্রিয় হওয়ার দাবি জানান। পুলিশি নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন সিপিএমের বারাবনি জোনাল কমিটির সম্পাদক অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে জোরদার তল্লাশি চালানোর আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। |