নৌকা থেকে ঝাঁপ দেওয়া তরুণী ও তাঁর ছেলেকে বাঁচানোর জন্য পুলিশ যখন মাঝিকে সংবর্ধনা দিচ্ছে, ফের একই ঘটনা ঘটে গেল বর্ধমান আর নদিয়ার মাঝে ভাগীরথীতে।
আগের দিন, বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটে নদিয়ার কালীগঞ্জের বল্লভপাড়া থেকে বর্ধমানের কাটোয়ায় আসার পথে। শনিবার নৌকা যাচ্ছিল কাটোয়া থেকে বল্লভপাড়া। হঠাৎই মাঝগঙ্গায় ঝাঁপ দেন সুষমা দাস নামে এক বধূ। দুই মাঝি ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে তুলে আনেন। বাড়িতে অশান্তির কারণেই তিনি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন বলে পুলিশ জেনেছে।
দু’দিন আগে কালীগঞ্জের পবিত্রা ঘোষ যখন গঙ্গায় ঝাঁপ দেন, সঙ্গে ছিল দেড় ও তিন বছরের দুই ছেলে। নৌকার মাঝি গৌরাঙ্গ রাজোয়াড় ঝাঁপিয়ে পড়ে মা আর বড় ছেলেকে তুলে আনলেও ছোটটি ভেসে যায়। তার আর খোঁজ মেলেনি। এ দিন কাটোয়ার সুদপুর গ্রামের সুষমা অবশ্য একাই ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ কাটোয়া থেকে বল্লভপাড়া যাওয়ার নৌকোয় উঠেছিলেন তিনি। নৌকাটি নদীর মাঝামাঝি আসতেই তিনি জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। |
কী ঘটেছে তা বুঝতে না বুঝতেই নৌকাটি স্রোতের টানে বেশ কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিল। ভাগ্য ভাল, সেই সময়েই উল্টো দিক থেকে আসছিল দু’টি নৌকা। সুষমাকে হাবুডুবু খেতে দেখে ওই দুই নৌকার মাঝি খুদু ঘোষ ও সুব্রত হালদার জলে ঝাঁপ দেন। সাঁতরে গিয়ে চুলের মুঠি ধরে টেনে তাঁকে নিয়ে আসেন নৌকোর কাছাকাছি। অন্য যাত্রী ও মাঝিরা লগা বাড়িয়ে দিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন।
দুই মাঝির কথায়, “মহিলা জলে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন। জলের উপরে তোলা হাত শুধু দেখা যাচ্ছিল।
কোনও রকমে ওঁকে বাঁচানো গিয়েছে।” পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুদপুর গ্রাম কাটোয়া শহর থেকে কিলোমিটার কয়েক দূরে। বাড়িতে অশান্তির জেরে দুপুর ৩টে নাগাদ গ্রাম থেকে বাস ধরে কাটোয়া পৌঁছন সুষমা। বাসস্ট্যান্ড থেকে হেঁটে যান ভাগীরথীর পাড়ে। কাটোয়া ঘাটে পারানি দিয়ে বল্লভপুরের নৌকোয় ওঠেন। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “এ দিন গৌরাঙ্গ রাজোয়াড়কে যখন সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছিল তখনই ফের এই ঘটনার খবর পাই।” সুষমার কথায়, “শ্বশুরবাড়ির নির্যাতন আর সইতে পারছিলাম না।” তাঁর শাশুড়ি উন্নতি দাস অবশ্য বলেন, “বৌমা কেন ভুল বুঝল, সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না।”
|
ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় |